সশস্ত্র সীমাবল বা এসএসবি-র জওয়ানরা বলছেন, মালদহে রয়েছে তক্ষক পাচারে যুক্ত উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় চক্রটি। যাদের দু’টি শাখা। একটি জাল টাকা কারবারের দেখাশোনা করে। অন্যটি জড়িত বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচারে৷ বেশ কয়েকবার অভিযান চালালেও এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি চক্রের মাথাদের।
ডুয়ার্সের জঙ্গলে মূলত দু’ধরনের তক্ষক মেলে৷ একটি লেপার্ড গেকো। অন্যটি, টোকে গেকো। তবে লেপার্ড গেকো বিরল। পাচারকারীদের থাবায় ইতিমধ্যেই মণিপুরের জঙ্গল থেকে লোপাট গোল্ডেন গেকো৷ হাঁস পা না কি মুরগি পা? দেখেশুনেই ঠিক হয় দরদাম।
সাড়ে ন’ইঞ্চি লম্বা, ৫২ গ্রাম ওজনের হাঁস পা তক্ষক৷ এদের পায়ের পাতা একেবারে হাঁসের মতো৷ মুরগি পা গেকো লম্বায় ১৫ ইঞ্চি৷ ওজন ২৫৫ গ্রাম৷ হাঁস পায়ের চাহিদা বেশি৷ প্রচার, এই তক্ষকের শরীরে না কি রয়েছে একপ্রকার বিষাক্ত দানা৷ যা পারমাণবিক রাসায়নিক তৈরিতেও কাজে লাগে! এসবের অবশ্য কোনও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই৷ কিন্তু প্রচারের জেরেই তা উজাড় হয়ে যাচ্ছে জঙ্গল থেকে।
পাচারকারীরা বলছে, দৈর্ঘ্য এবং ওজনের উপরই নির্ভর করে তক্ষকের রেট৷ ফিতে দিয়ে মাপে কারচুপির আশঙ্কা থাকে৷ তাই এখন পাচারকারীরা সঙ্গে রাখে ডিজিট্যাল স্কেল৷ তক্ষকের ওজন বাড়াতে না কি খাওয়ানো হয় সেদ্ধ ডিম! কখনও আবার হরমোন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।
দিনের পর দিন তক্ষক পাচার বেড়ে চলায় উদ্বিগ্ন বন দফতর৷ পাচার রুখতে পুলিশ ও এসএসবি জওয়ানদের সাহায্য নিচ্ছে তারা৷ কিন্তু তার পরও আটকানো যাচ্ছে না পাচার৷ খোলাখুলি স্বীকার করে নিচ্ছেন বনকর্তারা৷ শীতে একটু অবশ হয়ে পড়ে প্রাণীটি। সে সময়ই এদের ধরা সহজ৷ ফলে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তক্ষক পাচার সবচেয়ে বেড়ে যায়৷ এবার অবশ্য তক্ষক-সহ উত্তরের জঙ্গল থেকে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচার রুখতে এসএসবি, পুলিশ ও বন দফতরকে নিয়ে তৈরি হয়েছে কোর কমিটি৷ রীতিমতো ব্লু-প্রিণ্ট করে অভিযানে নামছে তারা। তক্ষক পাচারের জাল ছড়িয়ে অসম, মণিপুরের সঙ্গে চীন, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার এমনকী তাইল্যান্ডেও৷