September 24, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

সন্তান অবাধ্য? দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

কল পিতা-মাতা চায় সন্তান যেন মানুষের মতো মানুষ হয়। সন্তানের কারনে পিতা-মাতা সুখী, আবার সন্তানের কারনে পিতা-মাতা দুঃখী। এমন কিছু সন্তান আছে যাদের কর্মকাণ্ড, ব্যবহার, আচার-আচরণে বাবা-মা শুধু কষ্টই পান না, রীতিমতো সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হন। অভিযোগ আসে স্কুল থেকে, পাড়া-প্রতিবেশী থেকে। সন্তানের কারনে মা-বাবার মুখ মলিন হয়ে যায়। ছোট হয়ে যায়। অনেক বাবা-মা ক্ষোভে বলেও ফেলেন- ‘ও মরে গেলেই বাঁচি’।

কিন্তু কেন সন্তান এমন আচরণ করে? সত্যি বলতে এটি একটি রোগ, যার নাম ‘কন্ডাক্ট ডিজ অর্ডার’। কন্ডাক্ট ডিজ-অর্ডার শিশু-কিশোরদের মন ও মস্তিস্কের অসুখ যা সাধারণত আচরনের ত্রুটি হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। আবার অনেকে বলে অবাধ্য সন্তান। পরিসংখ্যান মতে ৪ শতাংশ শিশু-কিশোরদের মধ্যে এ সমস্যা থাকতে পারে। আর মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে এই রোগের প্রভাব চার গুণ বেশি।

এই আচরণ ও ব্যবহারের সমস্যা সম্পর্কে আত্মীয়-স্বজনদের ধারণা থাকে যে, বয়স হলে এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। আর চিকিৎসদের পরিভাষায় এটি একটি রোগ; যার সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। নতুবা এই শিশু-কিশোররা পরবর্তীতে পরিবারে ও সমাজে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়তে পারে।

কেন এই আচরনে ত্রুটি তার সঠিক কারণ জানা জায়নি। তবে ধারণা করা হয় বাবা-মার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি, ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সংসার ভেঙে যাওয়া, আলাদা জীবন-যাপন করাসহ নানা কারণে এটা হতে পারে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যদি ছোটবেলায় শিশুরা পিতামাতা থেকে দূরে যেমন- হোস্টেলে বড় হয়, তাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা দিতে পারে।

আর বিশেষ কারণ হিসেবে বংশগত ধারাবাহিকতা ও দীর্ঘদিন বাবা-মার মদ্যপানের অভ্যাসকে দায়ী করা হয়। আর বায়োলজিক্যাল কারণের মধ্যে ব্রেনের বিভিন্ন বায়োকেমিক্যালের পরিবর্তন, মৃগী রোগ ও মাথায় আঘাত উল্লেখযোগ্য।

লক্ষণসমূহ :
১।বাবা-মাকে বিভিন্ন জিনিসের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। আগে বাবার কাছ থেকে ১০টাকা পেলেই খুশি হতো, ধীরে ধীরে ২০ টাকা, ৫০ টাকা, ১০০ টাকা- এভাবে বাড়তে থাকে পরিমান। না দিলে শুরু হয় জিনিসপত্র ভাংচুর।

২।মায়ের কথা একদম শোনে না, পড়তে বসে না, বই ছিড়ে ফেলে, এমনকি শিক্ষকের কথাও শুনতে চায় না।
৩।সন্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসে।

৪। কাউকে ভয় পায় না।

৫। কেউ কেউ বড়দের সাথে এমন সব কথা বলে ও ব্যবহার করে যা সাধারণত অবাক করার মত।

৬।স্কুল ফাঁকি দেওয়া রীতিমত অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায়। স্কুলের কথা বলে ভিডিও গেম খেলা, সিনেমা দেখা ও বাইরে ঘুরে-বেড়ানো এদের অভ্যাস।

৭।ঘরের অন্য বাচ্চাদের সাথে দুর্ব্যবহার, মারামারি, ঝগড়া, এমনকি বাবা-মার সাথেও মারামারি করে ফেলে।

৮।ধীরে ধীরে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হতে থাকে; যেমন-চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মিথ্যা বলা, নেশা করা ইত্যাদি।

৯।মোট কথা এদের মধ্যে সুশৃঙ্খল জীবন-যাপন থাকে না। বাবা যদি বলে ডানে যাও, সে যাবে বামে।

চিকিৎসা: দেখা গেছে এই সব শিশুদের খুব বেশি বিগড়ে যাওয়ার আগেই সাইকিয়াট্রিস্ট দ্বারা চিকিৎসা করালে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে সক্ষম হয়। বেশি সময় পার হয়ে গেলে শুধরাতে সময় বেশি লাগে। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই, সকল সমস্যার সমাধান আছে। শুধু সময়মতো সমাধানের উদ্যোগ নিলে সেটা সহজ হয়ে যায়।

Related Posts

Leave a Reply