চরমে ছোটদের গেম আসক্তি, কঠোর বিধিনিষেধ চীন সরকারের
কলকাতা টাইমস :
চীনে অপ্রাপ্তবয়স্কদের অনলাইন গেম খেলার আসক্তি এমন পর্যায় পৌঁছেছে যে সরকারকে চরম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হল। চীন সরকার অনলাইন গেম আসক্তি কমাতে কারফিউ জারির ঘোষণা করেছে । এর ফলে যাদের বয়স ১৮ বছরের কম, তারা রাত দশটা থেকে সকাল আটটার মধ্যে কোন অনলাইন গেম খেলতে পারবে না। এছাড়া সাপ্তাহিক কর্মদিবসে দেড় ঘণ্টার বেশি আর সাপ্তাহিক ছুটি বা অন্য ছুটির দিনে তিন ঘণ্টার বেশি গেম খেলা যাবে না।
এ আসক্তি শিশুদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে বলে মনে করে চীন। চীন বিশ্বে অনলাইন ভিডিও গেমিংয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। অনলাইন গেমিং এর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকারের নতুন নীতিমালায় অপ্রাপ্তবয়স্করা গেমিং এর পেছনে কত অর্থ ব্যয় করতে পারবে তারও সীমা ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
৮ থেকে ১৬ বছর বয়সীরা প্রতি মাসে ২০০ ইউয়ান (২৯ মার্কিন ডলার) পর্যন্ত খরচ করতে পারবে, আর যাদের বয়স ১৬ থেকে ১৮ তারা পারবে এর দ্বিগুণ।
২০১৮ সালে চীন সরকার গেমিংয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের জন্য একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করে। শিশুদের মধ্যে দৃষ্টিক্ষীণতার সমস্যা বেড়ে যাওয়ার পর সরকার এই পদক্ষেপ নেয়। অতিরিক্ত গেম খেললে এমন হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
চীনের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করা হয় শিশুদের গেমিংয়ের ওপর নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপের জন্য।গত বছর চীন একই সঙ্গে নতুন ভিডিও গেম অনুমোদনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নয় মাসের এই নিষেধাজ্ঞা চীনে ভিডিও গেমিং শিল্পের জন্য ছিল এক বিরাট আঘাত।
বড় বড় ভিডিও গেম কোম্পানিগুলো চীনের এসব পদক্ষেপে ইতিবাচক সাড়া দেয়। তবে কিছু সমস্যা রয়েই গেছে। যেমন বয়স যাচাই কীভাবে করা হবে এবং এসব নিয়ম কানুন মানা হচ্ছে কিনা, সেটা কীভাবে নিশ্চিত করা যাবে।
এমন সমালোচনার মুখে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গেমিং কোম্পানি টেনসেন্ট ১২ বছরের কম বয়সীদের বেলায় এক ঘণ্টার বেশি গেম খেলা যাবে না বলে সময় বেঁধে দেয়। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের বেলায় বেঁধে দেয়া হয় দুই ঘণ্টার সময়সীমা। বয়স যাচাই করার নিয়মও চালু করা হয়।
গত বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথমবারের মতো গেমিংয়ের আসক্তিকে একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে। এটিকে গেমিং ডিজঅর্ডার বলে বর্ণনা করা হয়।