রোজের এই জিনিসেই লুকিয়ে মৃত্যু বিষ!
অ্যান্টিবায়োটি রেজিস্টেন্স হল সেই পরিস্থিতি, যখন ব্যাকটেরিয়ার চরিত্র এমনভাবে বিবর্তিত হয় যে তার উপর ওই অ্যান্টিবায়োটিকের কোনও প্রভাবই পরে না।
একাধিক পরীক্ষার পর জানা গেছে কোনও অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি বিশেষ একটি ব্যাকটেরিয়ার যখন রেজিটেন্স তৈরি হয়ে যায়, তখন ওই জাতীয় প্রায় সব অ্যান্টিবায়োটিকেরই কর্মক্ষমতা কমে যায়। ধরা যাক, কোনও ব্যাকটেরিয়া ক্যুইনোলোনের প্রতি প্রতিরোধক হয়ে উটেছে,তাহলে ট্রাইক্লোসানের প্রতিও প্রতিরোধক হয়ে দাঁড়াবে সেই ব্যাকটেরিয়াটি।
“স্টমাক বাগ” নামে পরিচিত ই কোলাই ব্যাকটেরিয়ার ওপর গবেষকরা পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। দেখা গেছে ব্যাকটেরিয়াটি নিজের চরিত্রে বদল এনে শুধু ক্যুইনোলোন না, ট্রাইক্লোসানের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
দৈনন্দিন জীবনে ব্য়বহৃত সামগ্রিগুলির কারণে নানাবিধ ব্যাকটেরিয়া অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এর ফলে এরা এত সহজে অষুধের প্রতি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।
“ব্যাকটেরিয়াকে দেখান হয়, তাদের ওপর যে কোন সময় আক্রমণ হতে পারে। এর মাঝে তাদের এমন করে গড়ে তোলা হয়, যাতে তারা অন্য সব আক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচাতে শিখে যায়।” জানিয়েছেন ইউনিভারসিটি অফ বার্মিংহামের বিশিষ্ট লেকচারার মার্ক ওয়েবার।
জার্নাল অফ অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল কেমোথেরাপিতে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে ওয়েবার জানান, “এটা উলটো দিক থেকেও ঘটতে পারে। ট্রাইক্লোসানের প্রভাবেই হয়তো ব্যাকটেরিয়ারা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।”
গবেষকরা মনে করেন, যেহেতু ক্যুইনোলোন এ্যান্টিবায়োটিক একটি গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী অষুধ মানুষের জন্য, তাই জীবাণুদের বিরুদ্ধে ট্রাইক্লোসানের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া বেশ চিন্তার বিষয়। সেই কারণেই তো যে কোন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দ্রব্যে, হাত, ত্বক ও গা ধোওয়ার সাবানে ট্রাইক্লোসানের ব্যবহার একেবারে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইউরোপ ও আমেরিকায়। প্রসঙ্গত, আমেরিকার ফুড ও ড্রাগ এ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রাইক্লোসান অষুধের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছে।
এক্ষেত্রে অরেকটা করণেও বিশেষজ্ঞরা চিন্তায় পরে গেছেন। রেজিস্টেন্স তৈর করা এই সব দ্রব্যাদিতে উপস্থিত সক্রিয় জীবাণুনাশক পদার্থগুলি আমাদের চারপাশে জমতে শুরু করেছে। এর ফলে সেগুলো পরিবেশে মারাত্মক পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। যার ফলস্বরুপ, এ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধক ব্যাকটেরিয়ার জন্ম সুনিশ্চিত হচ্ছে।