ঘরের এ জিনিসগুলো দিয়ে সহজেই কম্পোস্ট সার বানানো যায়
কলকাতা টাইমস :
সাধারণত ফসল বা ফল বা শাকসবজির উচ্ছিষ্টাংশ, ঘরবাড়ির ময়লা-আবর্জনা, আগাছা, খড়কুটা, কচুরিপানা ও এজাতীয় অন্যান্য উপকরণ দিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি করা হয়। এ সার মাটির পুষ্টিমান বৃদ্ধি করে ভালোভাবে ফসল ফলাতে সাহায্য করে। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে আপনার ঘরের কিছু জিনিস দিয়েও কম্পোস্ট সার তৈরি করা যায়।
* প্রাকৃতিক তন্তুর কাপড় : যদি আপনার খুব পুরোনো বা নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক তন্তুর কাপড় (যেমন- খাঁটি উল, কটন, সিল্ক, লিনেন) থাকে, তাহলে তা ছোট ছোট খন্ডে বিভক্ত করে কম্পোস্ট স্তূপে নিক্ষেপ করতে পারেন। কাপড়কে ছোট ছোট অংশে কেটে নিলে পচন দ্রুত হবে। যদি আপনি কাপড়কে কম্পোস্ট করতে চান, তাহলে নিশ্চিত হোন যে কম্পোস্ট স্তূপে কৃত্রিম তন্তুর কাপড়, প্লাস্টিক বোতাম, ধাতব জিপার, মোটর অয়েল-রঙ-কাঠের রঙ-অন্যান্য নন-কম্পোস্টেবল পদার্থ লেগে যাওয়া কাপড় ফেলছেন না।
* ল্যাটেক্স প্রোডাক্ট : আপনার সন্তানের জন্মদিন অনুষ্ঠানের ফাটা বেলুনকে আপনি কম্পোস্ট সার বানাতে পারেন। ল্যাটেক্স হলো প্রাকৃতিক ও বায়োডিগ্রেডেবল (যা প্রাকৃতিকভাবে পচে, কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি করে না) ম্যাটারিয়াল, কিন্তু আমাদের বেশিরভাগেরই একথাটি মনে থাকে না। ল্যাটেক্সের অন্যান্য দ্রব্যকেও ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার পরিবর্তে কম্পোস্ট স্তূপে নিক্ষেপ করতে পারেন।
* হোয়াইট গ্লু ও মাস্কিং টেপ : চিত্রশিল্প ও কারুশিল্পের অনুরাগীরা তাদের হোয়াইট গ্লু ও মাস্কিং টেপকে কম্পোস্ট সারে রূপান্তর করতে পারেন। আপনি হোয়াইট গ্লু ও মাস্কিং টেপকে ময়লার ঝুড়িতে না ফেলে কম্পোস্ট স্তূপে ফেলে এগুলোর পুনর্ব্যবহার করতে পারেন।
* বাকলের ছিপি : বাকল দিয়ে তৈরিকৃত বোতলের ছিপিকে কম্পোস্ট স্তূপে ফেলে পুনর্ব্যবহার করতে পারেন। বাকলের ছিপি হলো প্রাকৃতিক দ্রব্য যা সহজে পচে, কিন্তু প্লাস্টিকের ছিপি কম্পোস্ট স্তূপে ফেলার যোগ্য নয়। বাকল দিয়ে তৈরিকৃত অন্যান্য দ্রব্যকেও কম্পোস্ট সারে রূপান্তর করতে পারেন।
* লোম, চুল ও নখ : আপনার পোষা প্রাণী থেকে কি প্রচুর লোম ঝরছে? তাহলে আপনার জন্য সান্ত্বনা একটাই: এ লোমগুলো দিয়ে আপনি কম্পোস্ট সার তৈরি করতে পারেন। আপনার পরিবারের সদস্যদের ঝরে যাওয়া চুল ও কেটে ফেলা নখও কম্পোস্ট স্তূপে ফেলতে পারেন। এটি বিদঘুটে মনে হলেও আপনার কম্পোস্ট স্তূপ খুশি হবে।
* ছোট পেপার রোল : কার্ডবোর্ড বা পেপার রোলকে সবসময় পুনর্ব্যবহার করা যায়। আপনার টিস্যু ব্যবহার করে পেপার রোলটি ডাস্টবিনে না ফেলে কম্পোস্ট স্তূপে ফেলার কথা বিবেচনা করতে পারেন। অন্যান্য কার্ডবোর্ডের ক্ষেত্রেও কথাটি প্রযোজ্য।
* পোষা প্রাণীর পুরোনো খাবার : যদি আপনার ঘরে পোষা প্রাণীর পুরোনো খাবার থেকে থাকে, তাহলে তা কম্পোস্ট স্তূপে নিক্ষেপ করতে পারেন। নিশ্চিত হোন যে আপনার পোষা প্রাণীর নাকে যেন এসব খাবারের ঘ্রাণ না আসে, কারণ ঘ্রাণ পেলেই তারা খাওয়ার জন্য কম্পোস্ট স্তূপের দিকে ছুটবে।
* পুরোনো ব্যাগ : কিছু কিছু ব্যাগ আছে যা কম্পোস্টযোগ্য উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়। পরিত্যক্ত পুরোনো ব্যাগ থেকে এসব উপকরণ আলাদা করে কম্পোস্ট স্তূপে নিক্ষেপ করতে পারেন। আবার কিছু কিছু ব্যাগের সম্পূর্ণ অংশকেই কম্পোস্ট সারে রূপান্তর করা যায়, কারণ এসব ব্যাগ তৈরিতে প্রাকৃতিক ও বায়োডিগ্রেডেবল উপকরণ ব্যবহার করা হয়। কম্পোস্ট স্তূপে নিক্ষেপের আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে ব্যাগটি কি দিয়ে তৈরি।
* কটন সোয়াব ও বল : টয়লেট পেপার রোলের মতো কটন সোয়াব ও বলকেও কম্পোস্ট সার বানানো যায়। কম্পোস্টযোগ্য অন্যান্য আবর্জনার সঙ্গে প্লাস্টিকমুক্ত কটন সোয়াবকেও আপনি নিশ্চিন্তে কম্পোস্ট স্তূপে রাখতে পারেন। কিন্তু নিশ্চিত হোন যে এসব আবর্জনার মধ্যে ডেন্টাল ফ্লস নেই।
* ব্যবহৃত লুফাহ ও স্পঞ্জ : যদি আপনি প্রাকৃতিক লুফাহ ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে এটিকে আর ব্যবহার করতে না চাইলে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার পরিবর্তে ছোট ছোট অংশে কেটে কম্পোস্ট স্তূপে নিক্ষেপ করতে পারেন। যদি আপনি কৃত্রিম স্পঞ্জ ব্যবহার করেন, তাহলে এখন থেকে প্রাকৃতিক স্পঞ্জ ব্যবহারের কথা বিবেচনা করতে পারেন, কারণ প্রাকৃতিক স্পঞ্জও কম্পোস্টযোগ্য। এছাড়া কৃত্রিম স্পঞ্জ জীবাণু বহন করে এবং যেখানে সেখানে ফেললে পরিবেশ দূষণে ভূমিকা রাখে।