ভেষজ হতে পারে করোনার মারণ অস্ত্র
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের হাত থেকে কী ভাবে মুক্তি পাওয়া যায়, তার উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছে গোটা বিশ্ব। গবেষণাগারে বিনিদ্ররজনী কাটেছে বিশ্বের তাবড় গবেষক-বিজ্ঞনীদের। নানান ভ্যাকসিন এনে নানা ভাবে অতিমারী রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমেরিকা, ব্রিটেন, স্পেন, ইটালির মতো দেশগুলি চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের কাছে আক্ষরিক অর্থেই কাবু।
এত কিছু বলার কারণ, করোনার মারণ ক্ষমতা। এমন একটা সংকটময় পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এক বাঙালি বিজ্ঞানীর পরামর্শ ভেষজই পারে করোনার সংক্রমণ দূরে রাখতে।আর এই ব্যক্তিটি হচ্ছেন ভারতীয় বাঙালি গবেষক-অধ্যাপক রাজাগোপাল চট্টোপাধ্যায়। বোস ইনস্টিটিউটের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগে দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে কাজ করছেন। এই গবেষকই অতীতে জানিয়েছিলেন আমলকি, হরিতকি, বহেড়া, খয়ের, বিলিতি আমড়া, কুলত্থ কলাই এবং অনন্তমূলের ভেষজ প্রয়োগে ক্যানসার নিরাময়ের কথা। ২০১৬ সালে রাজাগোপাল ও তাঁর ছাত্রী ইন্দ্রাণী করের প্রকাশিত গবেষণাপত্রে সেটার উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু নানা জটিলতায় এই ওষুধের কোনও পেটেন্ট নেওয়া হয়নি।
ফরাসি ভাষায় ‘নোভেল’ শব্দের অর্থ নতুন। ‘করোনা’ শব্দের অর্থ সূর্যের ছটা। অর্থাৎ, সূর্যের নতুন ছটা। অনুবীক্ষণের নীচে জীবাণুর গঠন দেখে এমন নামকরণ করেন বিজ্ঞানীরা। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসকে কী করে ঠেকাতে পারে ত্রিফলা?
রাজাগোপাল চট্টোপাধ্যায় জানান, যে কোনও জীবাণু তার জিনগত বৈশিষ্ট্য বহন করে ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড, ডিএনএ অথবা রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড, আরএনএ রূপে। করোনা হল আরএনএ ভাইরাস। ফলে এর মিউটেশনের হার অত্যন্ত বেশি। সে ক্ষেত্রে করোনার বিস্তার কমাতে রোধ করতে হবে আরএনএ’র সিন্থেথিস। ত্রিফলা-সহ ভারতীয় ভেষজ উদ্ভিদের উপাদান এই সিন্থেসিস ঠেকাতে পারবে বলে রাজাগোপালের ধারণা।
তিনি বলেন, ক্যানসারের ক্ষেত্রে যেমন ডিএনএ-র উপাদানগুলো ভেষজ নির্যাসগুলোর প্রভাবে ধ্বংস হয়, করোনার ক্ষেত্রেও আরএনএ-র নির্মাণে জরুরি নিউক্লিওসাইড নিউক্লিওটাইডগুলি, ফেনটনের মতো উপাদানগুলি ধ্বংস হবে। এতে আরএনএ তৈরি স্তিমিত হবে।
গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাসের ওষুধ তৈরি এক দীর্ঘপথ। তার আগে করোনার তাণ্ডব ঠেকাতে এই ভেষজ উপাদানগুলো বিশেষ উপকারী বলে মনে করেন রাজাগোপাল। তাই তাঁর পরামর্শ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত আমলকি, হরিতকি, বহেরা, খয়ের, বিলিতি আমড়া খাওয়া দরকার। বিলিতি আমড়া পাওয়া না গেলে, বেদানা বা ডালিমেও কাজ হতে পারে।