করোনাকে ‘না’ বলেই বিশ্বে উদাহরণ ভারতের ‘দেশি মদ’ গ্রামের নারীরা
কলকাতা টাইমস :
বিশ্বে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। দেশটির প্রতিটি রাজ্য, প্রতিটি জেলায় এবং গ্রামে-গঞ্জে ঢুকে পড়েছে করোনা। এত কিছুর মধ্যেও এই ভাইরাস থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে একটি ছোট গ্রাম! করোনা নাকি এখনো ঢুকতেই পারেনি সেই গ্রামে।
গ্রামের নাম চিখালার। মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলার অন্তর্গত ওই গ্রাম। সারা ভারতে যখন লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, মৃত্যুর সংখ্যায় রেকর্ড তৈরি হচ্ছে, সেই সময়ে সারাবিশ্বের কাছে নজির তৈরি করেছে গ্রামটি।
জানা গেছে, ২০০৯ সালেই মোট ৮৭টি পরিবার বাস করত ওই গ্রামে। জনসংখ্যা ৪৭৬ জন। গ্রামে নারী ও পুরুষের অনুপাত প্রায় সমান। ২৪০ জন নারী ও পুরুষ ২৩৬ জন।
মূলত ওই গ্রামের নারীদের তৎপরতায় এমনটা হওয়া সম্ভব হয়েছে। করোনা সংক্রমণ আটকাতে কোনো বহিরাগতকে গ্রামে ঢুকতে দেয় না তারা। নিজেরাও সচরাচর গ্রাম ছেড়ে বের হয় না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য গ্রামের নারীরা দুজন যুবককে নিয়োগ করেছে। ওই দুজনই প্রয়োজন জেনে নিয়ে গ্রামের বাইরে গিয়ে সেগুলো নিয়ে আসে এবং বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়।
বেতুলের ওই গ্রামে প্রবেশের মূল রাস্তা বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে নারীরাই। গ্রামের নারীরা নিজেদের মধ্যেই দিনের ২৪ ঘণ্টা সময় ভাগ করে নিয়েছে পাহারা দেওয়ার জন্য। রীতিমতো লাঠি হাতে পাহারা দেয় তারা।
বিনা প্রয়োজনে কাউকে রাস্তায় ঘুরতে দেখলে প্রয়োজনে লাঠির ঘা মেরে রাস্তা ফাঁকা করতেও পিছপা হয় না তারা। ভারতে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও প্রায় চার লাখ।
এ পরিস্থিতিতেও গ্রামটিকে এখনো ছুঁতে পারেনি করোনা। এতদিন চিখালার কুখ্যাত ছিল দেশি মদের জন্য। বাড়ি বাড়ি বেআইনি দেশি মদ তৈরি করেই মূলত দিনযাপন করতেন গ্রামবাসীরা। নারীদের এই উদ্যোগে সারা দেশের কাছে উদাহরণ হয়ে উঠেছে গ্রামটি।