ধর্ষকের ৮ কোটি ও ধর্ষিতার ৩০০০!

পেট্রা সুইডেনের মালমো শহরে তার অ্যাপার্টমেন্টে ঘুমাচ্ছিলেন, যখন দুজন লোক দরজা ভেঙে তাঁর ঘরে ঢুকে পড়ে। তাদের মধ্যে একজন ছিল পেট্রার পূর্ব পরিচিত এবং অন্যজন ছিল অচেনা। এরপর যা ঘটল তাহলো এক দীর্ঘ এবং সহিংস ধর্ষণের ঘটনা।
অপরাধীরা পেট্রাকে হত্যার হুমকিসহ নির্যাতন করেছিল। অপরাধীরা পেট্রাকে ধর্ষণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল এবং অন্য একজন নারীকে ধর্ষণ ও অপহরণের জন্য দোষীসাব্যস্ত হয়েছিল। অপরাধীরা সেই নারীকে বেসমেন্টের একটি রুমে নিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রেখেছিল এবং তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল।
জেলা আদালত এবং আপিল আদালত উভয়ই রায় দিয়েছিল যে, ২০১৭ সালে যখন অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল তখন একজন অপরাধীর বয়স ১৮ বছরের বেশি ছিল। কিন্তু উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে বর্তমানে ২০ বছর বয়সী সেই অপরাধী তার প্রকৃত বয়সের একাধিক প্রমাণ উপস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছে যা আদালত আমলে নিয়ে আগের রায় পরিবর্তন করে নতুন রায় দেয়।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে এই বলে যে, পেট্রা এবং অন্য একজন নারীকে ধর্ষণের সময় একজন অপরাধীর বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। অর্থাৎ সংজ্ঞানুযায়ী অপ্রাপ্ত বয়স্ক কাউকে কারাদণ্ড দেওয়ার আইন সুইডেনে নাই। এই রায়ের আলোকে আদালত সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, বয়স অনুযায়ী অপরাধীকে মূল সাজার চেয়ে অপরাধীকে অধিকতর ১৪ মাস বেশি সময় কারাবন্দি রাখা হয়েছে এবং বিচারপতি চ্যান্সেলর কর্তৃক অতিরিক্ত ১৪ মাস আটক রাখার জন্য অপরাধীকে ৮ লাখ ৪০ হাজার সুইডিশ ক্রোনার ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, নিম্ন আদালত কর্তৃক দেওয়া রায়ে ধর্ষণের শিকার পেট্রাকে অপরাধীর ২ লাখ ২৫ হাজার ক্রোনার দেওয়ার কথা থাকলেও উচ্চ আদালতের রায়ের পর পেট্রাকে দেওয়া হয় মাত্র ৩ হাজার ক্রোনার এবং বাকিটা মাফ করে দেওয়া হয় ।
উচ্চ আদালতের এই রায়ের কথা জনসমোক্ষে প্রকাশের পর বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে অসম এই আইনের পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়। এরপরই বিক্ষুব্ধ ১৩০০ জন সাধারণ মানুষ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও তীরস্কার স্বরূপ চাঁদা তুলে পেট্রাকে ১ লাখ ৭৮ হাজার ক্রোনার ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রদান করা হয়।