পৌরষত্বে অক্ষম’ করছে কভিড
কভিডের কারণে অনেকেরই হৃদযন্ত্র, ফুসফুস বা স্নায়ুর ক্ষতি হচ্ছে—চিকিৎসকরা তা বহুদিন ধরেই বলছেন। হালের গবেষণায় উঠে এলো আরো এক তথ্য। কভিড সংক্রমণের ফলে পুরুষের যৌনক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। গত মার্চে পুরুষ মনস্তত্ত্ববিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী অ্যান্ড্রোলজিতে এক নিবন্ধে এমনই দাবি করেছেন সারা পৃথিবীর বেশ কয়েকজন মনোবিদ।
কভিড সংক্রমণ-পরবর্তী স্বাস্থ্যের হাল নিয়ে সম্প্রতি এক সমীক্ষায় চালানো হয়েছিল ইতালির পুরুষদের ওপর। সেই সমীক্ষার ফলই প্রকাশিত হয়েছে অ্যান্ড্রোলজিতে। সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে, কভিড সংক্রমণের ফলে বহু পুরুষের হৃদযন্ত্র ও শিরা-ধমনির নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে যৌনাঙ্গে। পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত সেখানে পৌঁছতে পারছে না। ফলে সঙ্গমকালে যৌনাঙ্গের শিথিলতা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না এই রোগে আক্রান্ত পুরুষরা। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে ‘ইরেকটাইল ডিসফাংশন’ (ইডি) বলা হয়, সেই সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে ভারতের মনোবিদ ও চিকিৎসক সঞ্জয় গর্গ বলছেন, কভিড-পরবর্তী সময়ে ভারতেও এমন ঘটনা ঘটছে। করোনা ও লকডাউন মিলিয়ে বহু পুরুষেরই উদ্বেগ ও অবসাদ বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে যৌনস্বাস্থ্যে। আবার অবসাদ বা উদ্বেগ কাটানোর ওষুধ যাঁরা খাচ্ছেন, সেই ওষুধের প্রভাবেও তাঁদের অনেকের মধ্যে যৌন অক্ষমতা বাড়ছে।
অবশ্য ভারতীয় পুরুষদের মধ্যে এই সমস্যা যে শুধু ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ঘটছে, এমন নয় বলে জানিয়েছেন বহু মনোবিদ। একই মত সঞ্জয়েরও। তাঁর কথায়, “সেভাবে অঙ্গগত সমস্যা বা ‘অর্গানিক’ সমস্যা হয়তো নেই, কিন্তু তবু অনেকেই ভুগছেন এই ‘ইডি’তে। সঙ্গীর সঙ্গে টানা এতটা সময় সচরাচর আমরা কাটাই না। এখন কাটানোর ফলে একদিকে যৌনচাহিদা বাড়ছে অনেক পুরুষ ও নারীর মধ্যে এবং সেই চাহিদা মেটাতে গিয়ে মানসিক চাপে ভুগছেন উল্টোদিকের নারী ও পুরুষ উভয়েই। দুজনেরই যৌনস্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে।” আগামী দিনে এটি বড় সমস্যার আকার নিতে পারে বলেও আশঙ্কা চিকিৎসকদের।