September 24, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular ব্যবসা ও প্রযুক্তি শারীরিক

এই কাঁকড়ার রক্তের দাম লিটারে ১১ লাখ! অবাক করবে কারণ  

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে লিমিউলাস নামে এক প্রজাতির কাঁকড়ার প্রতিলিটার রক্তের দাম ১১ লাখ টাকারও বেশি।

অশ্বক্ষুরের ন্যায় দেখতে উপবৃত্তাকার এই কাঁকড়ার নাম লিমিউলাস। কিন্তু এটিকে কাঁকড়া বলা হলেও প্রজাতিগত দিক থেকে মাকড়সার সঙ্গে মিল বেশি। রক্তের অসাধারণ ক্ষমতার কারণে লিমিউলাস বা অশ্বক্ষুরাকৃতি কাঁকড়া যে কোনো ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। তাই চিকিৎসাবিজ্ঞানে এদের গুরুত্ব অপরিসীম।

এদের রক্তের রঙ নীল কেন? বিজ্ঞানীরা জানান, মেরুদণ্ডী প্রাণিরা সাধারণত হিমোগ্লোবিনে লোহার উপস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে রক্তে অক্সিজেন পরিবহণ করে। কিন্তু লিমিউলাসের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি আলাদা। এরা হিমোসায়ানিনের সাহায্যে অক্সিজেন পরিবহণ করে। এতে তামার উপস্থিতির কারণে রক্তের রঙ নীল হয়।

কাঁকড়ার রক্তে অ্যামিবোসাইট আছে। যা মাত্র ১ লাখ কোটি ভাগের এক ভাগ ব্যাকটিরিয়ার উপস্থিতিতে রক্ত জমাট করতে পারে। যেখানে স্তন্যপায়ী প্রাণির ক্ষেত্রে সময় লাগে ৪৮ ঘণ্টা।

এই Limulus amebocyte lysate বা LAL ব্যবহার শুরু হয় সত্তরের দশকে। সামান্যতম ব্যাকটিরিয়ার উপস্থিতিও তাই বুঝতে পারে এটি। চিকিৎসায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি বা ভ্যাকসিনেও ব্যাকটিরিয়ার উপস্থিতি পরীক্ষায় ব্যবহার হয় এটি।

এই কাঁকড়াগুলি আসলে জীবনদায়ী। এরা নিজেরাই রক্ত দেয় বলা যায়। প্রতি বছর প্রায় ছয় লাখ কাঁকড়া ধরা হয় যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র উপকূল থেকে। এর মধ্যে তাদের থেকে ৩০ শতাংশ রক্ত নেয়া হয়।

এ নিয়ে সম্প্রতি বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কারণ এর ফলে ১০ থেকে ২০ শতাংশ কাঁকড়া মারা যায় বলে জানিয়েছেন কতিপয় প্রাণিবিজ্ঞানী। ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজার্ভেশন অব নেচার’ (আইইউসিএন) এই কাঁকড়াকে ‘ভালনারেবল’ ঘোষণা করে লাল (মহাবিপন্ন) তালিকাভুক্ত করেছে।

আগামী ৪০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে এই কাঁকড়ার সংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যাবে জানিয়েছে সতর্ক করেছে আইইউসিএন।

এমন প্রেক্ষাপটে এই কাঁকড়াকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষায় বিজ্ঞানীরা একটি কৃত্রিম পদার্থ তৈরি করতে চেষ্টা করছেন, যেটি LAL এর সমগোত্রীয়। কারণ এই জীবনদায়ী রক্তের সঙ্গে মানুষের জীবনও জড়িত।

এই প্রজাতির কাঁকড়াকে ‘জীবন্ত জীবাশ্ম’ নামেও অভিহিত করা হয়। কারণ ৪৪ কোটি ৫০ লাখ বছর আগেও পৃথিবীতে এদের অস্তিত্ব ছিল। ডাইনোসরের চেয়েও প্রায় ২০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে আগমণ ঘটেছিল লিমিউলাসের।

Related Posts

Leave a Reply