চমকে দেবে ৮৭ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা মৃতদেহের চাহনি!
৮৭ বছর কেটে গেলেও একই রকম সুন্দর এটি। কাঁচের ভিতর সুন্দর এক ম্যানিকুইন। পরনে বিয়ের গাউন। মাথায় ভেল। অপূর্ব সুন্দর চাহনি দেখলে কিছুক্ষণের জন্য থমকে যাবেন। মনে হবে যেন আপনার দিকেই তাকিয়ে আছে। মেক্সিকোর ‘লা পাসকুয়ালিতা’ নামের একটি পোশাকের স্টোরে ১৯৩০ সাল থেকে রয়েছে এই ম্যানিকুইন। সেই বছরের ২৫ মার্চ প্রথম রাখা হয়েছিল এটিকে। মাঝে মধ্যেই বদলে দেওয়া হয় পোশাক। তবে এই ম্যানিকুইন আর পাঁচটা দোকানের মত নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক অদ্ভুত গল্প। তাই একে নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই।
স্থানীয় মানুষ মনে করেন, এটি কোনও ম্যানিকুইন নয়। এটি আসলে একটি মেয়ের মৃতদেহ। এত বছর ধরে সংরক্ষণ করা হয়েছে এটিকে। ১৯৩০ সালে যিনি ওই দোকানের মালিক ছিলেন, তার নাম পাসকুয়ালা এসপারজার। গল্প মনে হলেও সত্যি সত্যি দোকান মালিকের সঙ্গে অবিকল মিলে যায় ম্যানিকুইনের চেহারা। জানা যায়, ম্যানিকুইনটি রাখার কিছুদিন আগেই তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছিল। বিয়ের দিনেই বিষাক্ত মাকড়সার কামড়ে তার মৃত্যু হয়। এটি আসলে সেই মেয়েরই মৃতদেহ বলে মনে করা হয়। যদিও মালিক ও তার স্ত্রী পুরো বিষয়টি অস্বীকার করতেন। আজও অনেক বিশেষজ্ঞরা দেখে অবাক হয়ে যান, কি করে এতটা নিখুঁত হল ম্যানিকুইনের হাত-পাগুলো! অনেকেই সময় নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন ম্যানিকুইনটিকে।
দোকানের কর্মী সোনিয়া বুর্সিয়াগা প্রত্যেক সপ্তাহে দুইদিন ম্যানিকুইনের পোশাক পাল্টে দেন। সোনিয়া জানান, ম্যানিকুইনের কাছে যাওয়ার সময় রীতিমত ঘামতে থাকেন তিনি। তার কথায়, ম্যানিকুইনের পা ও হাত এতটাই নিখুঁত যে দেখে একেবারে আসল মানুষের মত মনে হয়। এমনকি হাত পায়ের শিরাটাও দেখা যায় বলে জানান তিনি। সোনিয়ার মতে, এটি কিছুতেই একটা সামান্য ম্যানিকুইন নয়। এটি আসল মানুষ। প্রত্যেকদিন বিশেষ যত্ন নেওয়া হয় ওই ম্যানিকুইনের। আর তাই হয়ত এতদিন পরও দেহটি সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে।
মেক্সিকোর প্রাচীন সভ্যতায় মমি তৈরি খুব স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। কিন্তু বিংশ শতকে তেমন কিছু নির্মাণ সম্ভব কি না, তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক রয়েছে। সর্বোপরি, মেক্সিকোর আজকের আবহাওয়া এই ধরনের সংরক্ষণের একেবারেই সহায়ক নয়। কিন্তু এই সব যুক্তিতে মন মানে না রহস্য-সন্ধানীদের। তারা দলে দলে ছুটে যান লা পাসকুয়ালিতাকে দেখতে।