জলেও গেরুয়া-সবুজে ফারাক
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বহু বার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ বণ্টনে বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন। সেই বঞ্চনার প্রমাণ ফের একবার পাওয়া গেল কেন্দ্রের ক্ষতিপূরণ বন্টনের চিত্রে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বন্যা কবলিতে মোট ১৪টি রাজ্যকে ৫৮৫৮.৬০ কোটি টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু সেই ঘোষনায় দেখা গিয়েছে ক্ষতিপূরণের সিংভাগই অর্থই গিয়েছে বিজেপি জোট শাসিত মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, গুজরাত এবং অসমের ভাগে। অন্যদিকে বাংলার কপালে জুটেছে কিঞ্চিৎমাত্র ।
যে ১৪টি রাজ্যকে কেন্দ্র এদিন সাহায্য পাঠিয়েছে, সেগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা পেয়েছে মহারাষ্ট্র। ভোটমুখী রাজ্যে ১,৪৯২ কোটি টাকা বন্যাত্রাণের জন্য পাঠাচ্ছে মোদি সরকার। অন্ধ্রপ্রদেশকে ১০৩৬ কোটি টাকা, অসমকে ৭১৬ কোটি টাকা, বিহারকে ৬৫৫.৬০ কোটি টাকা, গুজরাতকে ৬০০ কোটি টাকা দেওয়া দেওয়া হলেও বাংলাকে দেওয়া হয়েছে ৪৬৮ কোটি টাকা। যেখানে ২০০৯ সালের পর চলতি বছরে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন পশ্চিমবঙ্গ । দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলা, বিশেষ করে পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর কার্যত জলের তলায়।
অন্যদিকে, দল বিভাজনে যে ক্ষতিপূরণের বিভাজন তাই দেখা গেল কংগ্রেস শাসিত তেলেঙ্গানাকে ৪১৬.৮০ কোটি এবং হিমাচল প্রদেশকে ১৮৯.২০ কোটি টাকা এবং বামশাসিত কেরলকে ১৪৫.৬০ কোটি টাকা পাঠানোর মাধ্যমে। ক্ষতিপূরণে এই বিরাট পার্থক্যের প্রশ্নে কেন্দ্রের যুক্তি, যে রাজ্যে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটার আন্দাজ করেই এই অনুদানের বণ্টন। আগামী দিনে কেন্দ্রীয় দলের পর্যবেক্ষণের পর ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ানো হবে।
এর আগেও বাংলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে একাধিকবার কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে তিনি উল্লেখও করেছেন, ডিভিসির অপরিকল্পিত জল ছাড়ার জেরেই এবছর বাংলা জলের তলায়। অথচ কেন্দ্রের ক্ষতিপূরণ হিসাবে জুটল মাত্র ৪৬৮ কোটি টাকা। যেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, রাজ্যে বন্যার জেরে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি দল পাঠানো হবে। সেই দলের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাড়তি সাহায্য পাঠানো হতে পারে।