ডিনার দেরিতে করা মানেই এই মারণ রোগের থাবা !
কলকাতা টাইমস :
এখনকার ব্যস্তময় জীবনে না ঘুমের সঠিক সময় আছে না খাওয়ার। সারাদিন ইঁদুর দৌড়ের পর রাতের খাবার খেতে প্রায়ই দেরি হয় যায় অনেকের । কোনও রকমে খেয়েই ঘুমোতে যাবার তাড়া। তাহলে সাবধান, না বুঝেই ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়াচ্ছেন আপনি। কোন সময়ে খাচ্ছেন তার উপরে শরীরের অনেক সমস্যার কারণ লুকিয়ে থাকে। মোটা বা রোগা হয়ে যাওয়া, ব্লাড প্রেসার, ব্লাড সুগারের হঠাৎ ওঠানামা এসবই কিন্তু নির্ভর করে খাবার সময়ের উপর। আপনি কখন রাতের খাবার খাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করছে ক্যান্সারের ঝুঁকিও।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ক্যান্সার প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, দেরি করে রাতের খাবার খেলে স্তন ক্যানসার আর প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ৬২১ জন প্রস্টেট এবং ১২০৫ স্তন ক্যান্সারের রোগীর উপর পরীক্ষাও চালানো হয় এই বিষয়ে, যার মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ছিল ৮৭২ জন এবং নারীর সংখ্যা ১৩২১ জন। স্পেনের গবেষকদের একটি দল এই গবেষণাটি পরিচালনা করেন। অংশগ্রহণকারীদের ঘুমের সময়সূচী এবং রাতের খাবার সময় সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
পরিবারে কারো ক্যান্সার আছে কিনা বা অংশগ্রহণকারীদের আর্থসামাজিক অবস্থান এবং তাদের পরিবেশে ক্যান্সার হতে পারার মতো কোনও প্রভাব রয়েছে কিনা ইত্যাদি বিষয়গুলি খুঁটিয়ে দেখেন গবেষকেরা। ফলাফল হিসেবে তাঁরা জানান, দেরি করে রাতের খাবার খেলে সার্বিকভাবেই প্রস্টেট ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রোস্টেট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা গেছে যে রাত ৯ টার আগে যারা রাতের খাবার খেয়ে নেন বা খাবার খাওয়ার দু’ঘণ্টা পরে ঘুমোন তাঁদের প্রস্টেট ক্যান্সার সৃষ্টির ঝুঁকি ২৬ শতাংশ কম ছিল। একইভাবে,প্রাথমিক স্তরের মহিলাদের যারা রাত ১০ টার আগে ডিনার সেরে নেন তাঁদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ১৬% কম।
গবেষকরা আরো জানান যে, দেরি করে খাবার খেলে, এবং খাবার পরেই ঘুমিয়ে পড়লে শরীরের সার্কাডিয়ান ছন্দ ব্যহত হয়। যার ফলে বিভিন্ন জৈব প্রক্রিয়া যেমন ঘুম, হরমোনের কার্যকারিতা,শক্তিমাত্রা এবং শরীরের তাপমাত্রা ভারসাম্য হারায়। এর ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়, টিউমার হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। গবেষকরা আরও বলছেন, খাদ্য উপাদান আর আলো এই সার্কাডিয়ান ছন্দকে সবচেয়ে ভালো নিয়ন্ত্রণ করে। আগে বিভিন্ন গবেষণায় মানুষের শরীরে ক্যান্সার তৈরিতে বিভিন্ন খাবারের কী কী ঝুঁকি তা নিয়ে বিস্তর পরীক্ষানিরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু ক্যান্সারের কারণ হিসেবে খাবারের সময়সূচি কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে হতে পারে তা নিয়ে খুব সীমিত গবেষণাই রয়েছে।