কলকাতা টাইমস :
বয়স্ক মানুষেরা অবসাদে ভোগেন কখন অবসাদ হল এমন এক রোগ যা জীবনের সমস্ত আনন্দকে শেষ করে দেয়। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষেরা যদি এই রোগে আক্রান্ত হন তাহলে তা আরও ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরিবারের বাকিরা বুঝতেই পারেন না যে তাদের সংসারের প্রবীণতম সদস্য়টি এমন একটি নাগপাশে জড়িয়ে পরেছেন। কম বয়সিরা এই রোগে আক্রান্ত হলে সহজেই তা বুঝে ফেলা সম্ভব হয়। কিন্তু বয়স্কদের ক্ষেত্রে অবসাদের লক্ষণগুলি এমন হয় যে বেশিরভাগ মানুষ সেগুলির সঙ্গে বয়স্কালের নানা রোগের লক্ষণকে গুলিয়ে ফেলেন।
এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো যে অবসাদের চিকিৎসা যদি ঠিক সময়ে শুরু করা না যায় তাহলে তা থেকে হার্টের রোগ সহ আরও নানাসব জটিলতা দেখা দিতে পারে। এমনকী রোগীর মৃত্য়ু পর্যন্ত ঘটতে পারে। এমনকী একাধিক কেস স্টাডি করে এও দেখা গেছে যে বয়স্ক মানুষেরা ডিপ্রেশনের শিকার হলে তাদের আর বাঁচার ইচ্ছা থাকে না, ফলে এদের মধ্য়ে আত্মহত্য়া করার প্রবণতা দেখা দেয়। তাই পরিবারের বাকি সদস্য়দের এটা দায়িত্ব যে তারা প্রবীণদের পাশে থাকবেন, তাদের আনন্দে রাখবেন।
১. বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে বয়স্করা ধীরে ধীরে অবসাদের শিকার হয়ে পরেন। বাচ্চারা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মায়েদের ছেড়ে বাইরে চলে যান। ফলে তারা আরও একা হয়ে পরেন।
২. ইনসমনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কারণেও অনেকে অবসাদের শিকার হন। প্রসঙ্গত, এইসব ক্ষেত্রে বেশি মাত্রায় ঘুমের ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। এমনটা করলে অন্য় ধরনের শারীরিক রোগ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
৩. কোনও দুঃখের ঘটনা, সমাজের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া, একাকিত্ব, ভালোবাসার কাউকে হারিয়ে ফেলা, বিবাহ বিচ্ছেদ, শারীরিক অসুস্থতা প্রভৃতি নানা কারণে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেউ অবসাদে আক্রান্ত হতে পারেন। ৪. এও দেখা গেচে যে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, ডিমেনশিয়া, ক্যাসের, ডায়াবেটিস প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত হলেও অনেকে অবসাদের ফাদে পড়ে যান। তাই আপনারও যদি এই সব রোগের মধ্য়ে কোনওটা থাকে, তাহলে আগে থেকেই সাবধান হওয়াটা জরুরি।
৫. অ্যালকোহল অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন অ্যালকোহল সেবন করেন, তাদের বয়স্কালে গিয়ে অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আগে থেকেই সাবধান হন, নচেৎ কিন্তু বিপদ!
৬. জীবনের গাড়িকে সচল রাখতে হবে। আর তার জন্য় প্রতিনিয়ত নিজেকে ব্য়স্ত রাখতে হবে নানা কাজের মধ্য়ে, বিশষত বয়স্কালে। দেখা গেছে যারা প্রতিনিয়ত কোনও না কোনও কাজে নিজেকে যুক্ত রাখেন, ফিজিকালি অ্যাকটিভ থাকেন, তাদের ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৭. নেতিবাচক চিন্তা এবং দুঃখ মানুষকে ধীরে ধীরে ভেঙে দেয়। তাই বয়স হলে এগুলির থেকে নিজেকে দুরে রাখুন। ভুলে যাবেন না নানাবিধ রোগের সঙ্গে যদি এগুলি যুক্ত হয় তাহলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৮. অবসাদের চিকিৎসা এখন অনেক উন্নত হয়েছে। তাই যখনই বুঝবেন আপনার পরিবারের প্রবীণতম সদস্যটি টি এমন কোনও অসুবিধায় জড়িয়ে গেছেন, তখন যত শীঘ্র সম্ভব চিকিৎসা শুরু করবেন। নচেৎ কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।