না শুনলেও শিকার হতে পারেন ফুড কোমা-র

কলকাতা টাইমস :
ফুড কোমা শব্দটির সঙ্গে অনেকেরই কোনো পরিচয় নেই। কিন্তু বেশি পরিমাণে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পর এমন পরিস্থিতির শিকার হতে পারেন অনেকেই। আর তাই ফুড কোমা থেকে সতর্ক থাকা উচিত সবারই। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
ফুড কোমা কী?
অস্বাস্থ্যকর খাবার কেউ যখন খুব বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলে তখন খাওয়ার পরেই তার প্রচণ্ড ক্লান্তি আসতে পারে। এতে এক পর্যায়ে সংজ্ঞাহীনতার মতো যে মারাত্মক অবস্থা তৈরি হতে পারে তাকে ফুড কোমা বলে।। মূলত পোস্টপ্রান্ডিয়াল সমনোলেন্স কে ২০১৪ সালে ফুড কোমা নাম দেয়া হয়।
কী কারণে হয় ফুড কোমা?
গবেষকরা বলছেন, খাবারের কিছু প্রোটিন ও লবণ এ ফুড কোমার জন্য দায়ী। আমরা যখন কোনো খাবার খাই তখন পাকস্থলিতে গ্যাস্ট্রিন নামক হরমোন উৎপন্ন হয়। এই হরমোন পরিপাক রস নিঃসরণে কাজ করে। আমরা যখন বেশি পরিমাণে কোনো খাবার খাই তখন এ ফুড কোমায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মূলত খাবারের যে অংশগুলো হজম হওয়া কঠিন সেগুলোই এ ঘটনার জন্য দায়ী।
এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বোউলিং গ্রিন স্টেট ইউনিভার্সিটি ও স্ক্রিপস রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষকরা। তারা জানিয়েছেন কার্বহাইড্রেট এ প্রক্রিয়ার জন্য প্রধানত দায়ী নয়। এর পেছনে মূল কাজটি করে অস্বাস্থ্যকর ফাস্ট ফুড তথা বাড়তি চর্বি, প্রোটিন ও লবণযুক্ত খাবার।
বিশেষত ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার এ ধরনের নিদ্রার জন্য দায়ী। কিন্তু প্রোটিন বা সুষম পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার খেলে এমন হয়না। এ ধরনের খাবারের ফলেই নিদ্রাচ্ছনতা বা স্থিরতা তৈরি হয় শরীরে। প্রোটিন জাতীয় খাবারের এমাইনো এসিড মস্তিষ্কে প্রবেশ করার পর উদ্দীপক প্রভাব রাখে।
কিভাবে রক্ষা পাবেন ফুড কোমা থেকে? এ প্রসঙ্গে গবেষকরা বলছেন কয়েকটি পরামর্শের কথা।
১. সক্রিয় থাকুন
দিনের প্রধান খাবার খাওয়ার পরে হালকা কোন কাজ করার মাধ্যমে সক্রিয় থাকুন। এর ফলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। খাওয়ার পর পরই শুয়ে পড়বেন না বা অলস বসে থাকবেন না।
২. অতিরিক্ত খাওয়া নয়
অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন। অল্প অল্প করে কয়েকবারে খান। একবারে অনেক বেশি পরিমাণে খেলে ঘুম আসে এবং ওজন ও বৃদ্ধি পায়।
৩. ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খান
পুষ্টি উপাদানের ভারসাম্য রক্ষা করে চললে নিদ্রালুতা এড়িয়ে যাওয়া যাবে এবং ওজন ও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। প্রোটিন ও কার্ববোহাইড্রে ১ : ২ অনুপাতে খান। প্রাণিজ স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিবর্তে উদ্ভিজ ও সামুদ্রিক ফ্যাট গ্রহণ করুন।
৪. শাকসবজি ও ফলমূলক খান
সকল ধরনের মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট ও খনিজ উপাদান যেন আপনার দৈনিক খাদ্যের মধ্যে থাকে তা নিশ্চিত করুন। এ জন্য সবজি, সালাদ ও ফল খান।