ডিএনএ বলবে ভবিষ্যতে কত সন্তান
আপনি কি কখনও ভেবেছেন আপনার প্রথম সন্তান জন্মের সময় আপনার বয়স কত হবে, বা আপনার কতগুলো সন্তান হবে? বিজ্ঞানীদের মতে, আপনার ডিএনএ থেকে এর উত্তর মিলবে।
গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, জেনেটিক তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে আমাদের প্রজনন আচরণ সম্পর্কে সঠিকভাবে অনুমান করা সম্ভব।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে এ-সম্পর্কিত একটি গবেষণা করা হয়। ওই গবেষণায় ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪ জন পুরুষ ও নারীর প্রথম সন্তান জন্মের সময় তাদের বয়স কত ছিল সে তথ্য এবং ৩ লাখ ৩০ হাজার পুরুষ এবং নারীর সন্তান সংখ্যা সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে ৬২ সেট তথ্য-উপাত্তের বিশ্লেষণ করা হয়।
এখন পর্যন্ত প্রচলিত ধারণাটি হলো, প্রজননগত আচরণ মূলত ব্যক্তিগত পছন্দ বা সামাজিক পরিস্থিতি এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের নানা উপাদানের ওপর নির্ভরশীল।
তবে, এই গবেষণায় দেখা গেছে, প্রজননগত আচরণের পেছনে একটি জৈবিক বা শারীরিক ভিত্তিও আছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেলিন্ডা মিলস বলেন, “এই প্রথমবারের মতো আমরা এখন জানি যে প্রজননগত আচরণের সঙ্গে যুক্ত ডিএনএ এলাকা কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে।”
মিলস বলেন, “উদারহণত, গবেষণায় আমরা দেখতে পেয়েছি যেসব নারীদের ডিএনএতে মাতৃত্ব বিলম্বিত করার মতো বৈশিষ্ট্য আছে তাদের মধ্যে ঋতুস্রাব দেরিতে শুরু হওয়া এবং মেনোপজ দেরিতে হওয়ার পেছনে দায়ী ডিএনএ কোডও আছে।”
“একদিন এসব তথ্য ব্যবহার করে ডাক্তাররা বলতে পারবেন যে সন্তান জন্মদানে কেউ সর্বোচ্চ কতদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবেন।”
তবে সন্তান জন্মদানের পেছনে প্রধানত নানা সামাজিক একং পরিবেশগত উপাদানই সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। এই উপাদানগুলো সব সময়ই সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করবে।
যৌনতার উন্নয়ন বা প্রথম সন্তান কখন হবে এর সঙ্গে ডিএনএ’র বৈশিষ্ট্যর ভিন্নতা যেমনভাবে যুক্ত ঠিক তেমনি মেয়েদের প্রথম ঋতুস্রাব কখন হবে, ছেলেদের গলার স্বর কখন ভাঙবে বা নারীদের মেনোপজ কখন হবে তার পেছনেও ডিএনএ’র বৈশিষ্ট্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক গবেষক নিকোলা বারবান বলেন, “আমাদের জিন আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে দেয় না। কিন্তু এই প্রথমবারের মতো আমরা ডিএনএ কোডের একটি অংশ চিহ্নিত করেছি যা আমাদের আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে।”