রেস্তোরাঁয় খাওয়ার পরে মৌরি কেন দেওয়া হয়, জানেন আসল কারণ?
কলকাতা টাইমস :
ধরা যাক, রেস্তোরাঁয় গিয়ে আপনি ভরপেট খাওয়া-দাওয়া করলেন। খাওয়ার শেষে ওয়েটারকে ডেকে বললেন বিল দিতে। বিল দেওয়ার সময়ে সহাস্য ওয়েটার বিলের সঙ্গেই দিয়ে গেলেন মৌরিতে ভর্তি একটি প্লেট। আপনি বিল মিটিয়ে মুখে এক চিমটি মৌরি ভরে চিবোতে চিবোতে বেরিয়ে এলেন রেস্তোরাঁ থেকে। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন কি, রেস্তোরাঁয় খাওয়ার শেষে কেন দেওয়া হয় মৌরি?
যদি রেস্তোরাঁরই কোনও কর্মচারীকে ডেকে এই প্রশ্ন করা হয়, তাহলে সদুত্তর পাওয়ার সম্ভাবনা কম। আসলে এই রীতি আজকের নয়। বহুকাল থেকেই উপমহাদেশে কিছু খাওয়ার পরে মৌরি চিবোনোর রীতি প্রচলিত রয়েছে। তার কারণ, প্রাচীন যুগেই ভারতীয় বৈদ্যরা আবিষ্কার করেছিলেন, খাওয়ার শেষে মৌরি খাওয়ার বিশেষ কিছু উপকারিতা রয়েছে।
প্রথমত, মৌরি মাউথ ফ্রেশনার হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর। মৌরিতে এমন কিছু উপাদান থাকে যা নিজস্ব সুগন্ধের জোরে মুখ থেকে খাবারের গন্ধ (তা সে সুগন্ধ বা দুর্গন্ধ যা-ই হোক না কেন) দূর করতে সক্ষম। দ্বিতীয়ত, মৌরি গৃহীত খাদ্য দ্রুত হজম ও কোষ্ঠবদ্ধতা দূরীকরণে সহায়ক। মৌরি চিবোলে মুখ থেকে যে লালা ক্ষরিত হয় তা হজমে সাহায্য করে। পাশাপাশি মৌরিতে যে ফাইবার থাকে তা যেমন খাদ্যকে পাচন তন্ত্র বেয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে তেমনই তা কোষ্ঠবদ্ধতার ওষুধ হিসেবেও কার্যকর। মৌরির এই গুণের কথা জেনেই, খাওয়ার শেষে মৌরি মুখে দেওয়ার রীতি চালু হয়েছিল।
মৌরির এই কার্যকারিতা আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানেও স্বীকৃত। যে কারণে এখনও ইসবগুল বা পেট পরিষ্কার রাখার ওষুধ তৈরিতে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল মৌরি। হোটেল রেস্তোরাঁয় অবশ্য খাওয়ার শেষে মৌরি পরিবেশন করা হয় নিছক রীতি মেনে। কিন্তু এই রীতি অনুসরণের মাধ্যমেই রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ যে আমাদের সুস্থতার দিকে পরোক্ষে নজর রাখছেন, তা জানলে মন ভাল হয়ে যেতে বাধ্য।