অবাক করবে ঘুমন্ত অবস্থায় মস্তিষ্কের এই ৭টি কাজ
কলকাতা টাইমস :
জীবনের এক তৃতীয়াংশ সময় মানুষ ঘুমিয়ে কাটায়। মানুষের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের ওপর ঘুমের অবদান ব্যাপক। তবে ঘুমন্ত অবস্থায় কী ঘটে মানব শরীরে? এসময় শরীর অচল থাকলেও, ঘুমের মাঝে আমাদের মস্তিষ্ক ঠিকই কাজ করে। জেনে নিন ঘুমন্ত অবস্থায় আপনার মস্তিষ্ক কী কী করতে থাকে।
পুরোনো কিছু ঘটনার ক্রম মনে করিয়ে দেয় : পুরোনো কিছু ঘটনার স্মৃতি মনে আছে আপনার। কিন্তু কোনটির আগে কোনটি ঘটেছে তা মনে রাখতে পারেন না অনেকেই। যেমন আপনি আগে সাইকেল চালানো শিখেছিলেন নাকি সাঁতার? ঘটনার ক্রম মনে করার ক্ষেত্রে ঘুমের গুরুত্ব আছে। ভালো ঘুমের ফলে ঘটনার ক্রম ঠিক থাকে এবং মনে করাটা সহজ হয়।
নতুন নতুন কাজ শেখে : ড্রাইভিং, সাইক্লিং, সাঁতার বা নতুন কোন খেলা শেখার মতো শারীরিক কাজগুলো শেখার প্রক্রিয়া চলে ঘুমের মাঝেই। এ সময়ে মস্তিষ্ক এসব কাজের স্মৃতিকে দীর্ঘমেয়াদি করে যাতে কাজটা করার অভ্যাস আমাদের মাঝে শক্তপোক্ত হয়ে যায়।
সিদ্ধান্ত নেয় : দিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে আমরা যেসব সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয় ঘুমন্ত অবস্থায় সেসব সিদ্ধান্ত খুব সহজেই নেয় আমাদের মস্তিষ্ক। সে অনুযায়ী পরের দিন কাজ করার জন্য প্রস্তুত হয়। দিনের বেলায় পাওয়া তথ্য এবং স্মৃতি যাচাই-বাছাই করে জটিল সব সিদ্ধান্ত নিতে পারে মস্তিষ্ক।
স্মৃতি তৈরি করে এবং ভুলে যাওয়া স্মৃতি মনে করিয়ে দেয় : সারাদিনে আমরা যেসকল কাজ করি মস্তিষ্ক তা থেকে স্মৃতি তৈরি করে। পাশাপাশি মস্তিষ্ক পুরোনো স্মৃতিগুলোকে আরও মজবুত করে এবং নতুন ও পুরোনো স্মৃতির মাঝে সংযোগ সৃষ্টি করে। মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাস অংশ এই কাজ করে থাকে। তবে ঘুম কম হলে হিপ্পোক্যাম্পাসের কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়, ফলে স্মৃতি তৈরির প্রক্রিয়ায় ত্রুটি দেখা যায়। অল্প সময়ে স্মৃতি ভুলে যেতে থাকি। কারণ ঘুম না হলে পড়া মনে থাকার সম্ভাবনা কমে যেতে পারে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত!
পুরোনো স্মৃতি মজবুত করার পাশাপাশি ভুলে যাওয়া স্মৃতি মনে করিয়ে দিতে কাজ করে ঘুম। বিশেষ করে কোনও কাজ অনেকদিন না করার ফলে যদি তাতে আপনার দক্ষতা কমে যায় বা একেবারেই চলে যায়, তাহলে ঘুম এই হারানো স্মৃতি মনে করিয়ে দিতে পারে।
সৃজনশীলতা বাড়ায় : পর্যাপ্ত ঘুম মানুষের কাজ করার গতিকে ত্বরান্বিত করে। মস্তিষ্ককে সৃজনশীল চিন্তাভাবনা করতে সহায়তা করে। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ঘুম থেকে উঠে নতুন নতুন সব আইডিয়া পেয়ে যান শিল্পীরা। এর কারণ হলো ঘুমন্ত অবস্থায় মস্তিষ্ক এমন সব বিষয়ের সংযোগ খুঁজে পায় যা জাগ্রত অবস্থায় পাওয়া সম্ভব নয়।
টক্সিন দূর করে : গবেষকরা ইঁদুরের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখেন যে, ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের মস্তিষ্কের কোষগুলোর মাঝে দূরত্ব বেড়ে যায়। ফলে সারাদিন ধরে মস্তিষ্কের মাঝে জমে থাকা টক্সিন দূর করতে পারে সহজে। যথেষ্ট ঘুম না হলে মস্তিষ্ক এসব টক্সিন দূর করার সুযোগ পায় না। ফলে দেখা দেয় আলঝেইমার্স এবং পারকিনসনের মতো রোগ।
ওজন কমায় : ঘুমের সময় ওজন কমাতে সাহায্য করে মস্তিষ্ক। এ সময়ে আপনার শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায় নিশ্বাস এবং ঘামের সাথে। আর এ সময়ে আপনি খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করেন না বলে দিনের বেলার চাইতে দ্রুত ওজন কমে রাতের বেলায়।