জানেন কি চেহারাই এই ১১ বিস্ময়ের আয়না
কলকাতা টাইমস :
সবাই অপরকে মূল্যায়ন করে। কাউকে দেখার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই- হোক তা ডেটিংয়ে গিয়ে বা মুদির দোকানে- আমরা তার সম্পর্কে অসংখ্য মূল্যায়ন করে ফেলি। তিনি কতটা স্মার্ট তা থেকে শুরু করে তার দ্বারা কোনো অপরাধ করা সম্ভব কিনা প্রভৃতি বিষয়ে ভাবি আমরা।
বিস্মকরভাবে আমাদের প্রথম অবতার প্রায়ই উল্লেখযোগ্যভাবে নিখুঁত হয়। লোকের চেহারা দেখে তাদের সম্পর্কে আমরা যে বিষয়গুলো নির্ণয় করি তার কয়েকটি হলো:
১. আপনি যদি দেখতে সুন্দর হন তাহলে লোকে ভাবে যে আপনার মধ্যে আরো অনেক ইতিবাচক গুনাবলী রয়েছে। যেমন বুদ্ধিমত্তা এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা। আর কর্মস্থলেও সুন্দর চেহারার লোকেরা বেশি মজুরি পান। তেমনি এক গবেষণায় দেখা গেছে, এক সুন্দরী নারীর ছবি দেখিয়ে একদল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে একটি নিবন্ধের মুল্যায়ন করতে বলা হলে তারা অনেক বেশি ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন। অথচ একজন অনাকর্ষণীয়া নারীর ছবি দেখানোর পর এর উল্টো ফল পাওয়া গেছে।
২. ছবি দেখেও অন্যদের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অদ্ভুতভাবে নিখুঁত মূল্যায়ন করতে পারেন লোকে। ২০০৯ সালে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, কারো ছবি দেখেই তিনি কতটা বহির্মুখী স্বভাবের, কতটা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন, কতটা ধার্মিক, কতটা নমনীয় এবং বিবেকবান হবেন তা বলে দেওয়া যায়।
৩. আপনার মুখের অভিব্যক্তি দেখেই লোকে আপনার উচ্চতা সম্পর্কে অনুমান করেন এবং আপনার মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো গুনাবলী আছে কিনা তারও মূল্যায়ন করেন। ২০১৩ সালে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের একদল মনোবিজ্ঞানী, স্নায়ুবিজ্ঞানী এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের চালানো এক গবেষণায়ও এমনটাই প্রমাণিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, লম্বা মানুষদের চেহারার ছবি দেখেই লোকে তাদেরকে নেতৃত্বদানের জন্য যোগ্য লোক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
৪. আপনার মুখের কাঠামো থেকে আপনি কতটা আগ্রাসী সে সম্পর্কেও লোকে ধারণা নেন। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষের যৌন সক্ষমতা বেশি তাদের মুখমণ্ডল অনেক চওড়া হয় এবং গালের হাড়গুলোও বড় হয়। এই ধরনের কাঠামো সম্বলিত চেহারার মানুষেরা অনেক বেশি আগ্রাসী এবং স্ট্যাটাসচালিত ব্যক্তিত্বেরও অধিকারী হন।
৫. লোকে আপনার চেহারার কাঠামো দেখে আপনি কতটা দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী তারও মূল্যায়ন করেন। ২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সুখী অভিব্যক্তি সম্বলিত মুখের ছবি দেখে লোকে তাকে বেশি বন্ধুভাবাপন্ন এবং বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অন্যদিকে, রাগান্বিত চেহারার ছবি দেখে লোকে এর বিপরীত মূল্যায়ন করেছেন। আর প্রশস্ত চেহারার লোকদেরকে দৃঢ় চরিত্রের হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
৬. আপনাকে দেখে যদি অবিশ্বস্ত মনে হয় তাহলে আপনাকে একজন অপরাধী হিসেবেই বিবেচনা করা হতে পারে। এটা পরিষ্কার নয় যে কেন আমাদের কাউকে চেহারা দেখে বিশ্বাসযোগ্য আবার কাউকে অবিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। তবে এ থেকে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের চেহারা দেখে কম বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে লোকে তাদেরকে অপরাধী হিসেবেও বিবেচনা করেছে বেশি। আর রাগান্বিত চেহারার লোকদেরকেই বেশিরভাগ সময় অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
৭. আপনি যদি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকেন তাও লোকে আপনার চেহারা দেখে বুঝতে পারেন!
৮. আপনার চেহারা দেখে অনেক সময় আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কেও ধারণা করা যায়। যেমন, কারো চেহারায় বলিরেখা থাকলে তা তার হৃদপিণ্ডের সমস্যা রয়েছে এমনটাই নির্দেশ করে।
৯. অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা প্রথমে চোখে ধরা পড়ে। ডাক্তাররা আপনার চোখের দিকে তাকিয়েই আপনার দেহের বহু রোগ সম্পর্কে ধারণা করতে পারবেন। চোখের রেটিনায় লাল দাগ ডায়াবেটিসের লক্ষণ। রক্তে সুগারের হার বেড়ে গেলে এটি রেটিনার রক্তের শিরাগুলোকে বন্ধ করে দিতে পারে। যার ফলে সেগুলো স্ফীত বা বিস্ফোরিতও হতে পারে।
১০. তবে চেহারাতেই সবকিছুর ইঙ্গিত নাও থাকতে পারে। পুরুষদের আঙ্গুলের দৈর্ঘ্য থেকে তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে কিনা তা বলে দেওয়া যায়।
১১. আর আপনার উচ্চতা থেকেও আপনার মধ্যে বিশেষ কিছু রোগের ঝুঁকি রয়েছে কিনা তা বলে দেওয়া যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, লম্বা লোকদের হৃদরোগের সম্ভাবনা থাকে কম। অন্যদিকে, খাটো লোকদের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। এই ঝুঁকি মুলত গ্রোথ হরমোন বা বেড়ে ওঠার হরমোনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। গ্রোথ হরমোন নিঃসরণের পরিমাণের সঙ্গে কিছু রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি আর কিছু রোগের ঝুঁকি বাড়ার বিষয়টি জড়িত। তার মানে এই নয় যে, লম্বা বা খাটো হলে আপনি কিছু রোগ থেকে মুক্তি পাবেন আবার কিছু রোগের ঝুঁকিতে পড়বেন।