জানেন কি বিশ্বে আত্মহত্যার শীর্ষে কোন দেশ
কলকাতা টাইমস :
কখন অভাবের তাড়না, কখন বা মানুষিক কষ্ঠ পেয়ে সুন্দর এই পৃথিবী মায়া ত্যাগ করে নিজে আত্মহত্যার করে। প্রত্যেকটি দেশেই আত্মহত্যার সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
কিন্তু তারপরও সম্প্রতি আত্মহত্যার উপর এক সার্ভের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর হিসাব জানাচ্ছে, প্রতি দু’ মিনিট অন্তর একজন ভারতীয় আত্মঘাতী হন। বিশ্বের ‘আত্মহত্যার রাজধানী’ তকমা পেল ভারত। এই পরিসংখ্যান পৃথিবীর অন্য কোনও দেশের জিম্মায় নেই।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি ৪০ সেকেন্ডে বিশ্বের কোথাও না কোথাও কেউ আত্মহত্যা করছেন। এর মধ্যে তিনটির একটি ঘটনা ঘটে ভারতে। গত এক দশক যাবত সমীক্ষা চালানোর পর এই খতিয়ান নজরে এসেছে হু-এর। সংস্থার মতে, ২০১২ সালে এদেশে মোট আড়াই লক্ষ মানুষ আত্মহত্যা করেন। ভারতে এ ব্যাপারে সবচেয়ে এগিয়ে পাঞ্জাব, কেরলা ও তামিলনাডু। যদিও দেশটির সরকারি নথি এই তথ্য মানতে নারাজ।
সমীক্ষায় উঠে এসেছে অজানা কিছু বৈশিষ্ট। জানা গিয়েছে, বয়স্কদের চেয়ে আত্মহননের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে কমবয়সীরাই। ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
শুধু তাই নয়, পুরুষের থেকে মহিলাদের মধ্যেই এই প্রবণতা বেশি মাত্রায় দেখা যাচ্ছে। হু-এর রিপোর্টের মুখ্য প্রণেতা শেখর সাক্সেনা জানিয়েছেন, ‘একজন আত্মহত্যাকারীর সঙ্গে আরও ২০ জন আত্মহত্যার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
কী কারণে বাড়ছে আত্মহত্যার সংখ্যা?
এইমস-এর ডিরেক্টর এম সি মিশ্র জানিয়েছেন, ‘সমাজে বস্তুবাদের রমরমা এর অন্যতম কারণ। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সিক্ষাগত বৈষম্যের কারণে জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মাচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। কেউ একবার আত্মহত্যা করতে বিফল হলে ফের চেষ্টা করতে পারে।’
হু-এর মতে, বেশির ভাগ আত্মহত্যাই চেষ্টা করলে রুখে দেওয়া যায়। সংস্থার মতে, ভারতে আত্মহত্যার চেষ্টা অপরাধ হিসাবে গণ্য হয় বলে সমস্যা বেশি। আত্মঘাতী হতে গিয়ে অসফল হলে অন্তত এক বছরের কারাদণ্ড হয়। এই ব্যবস্থা যতদিন থাকবে, ততদিন আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষ নিজেদের সমস্যার কথা কারও সঙ্গে আলোচনা করতে ভয় পাবেন।
এ ছাড়া, বাড়িতে কীটনাশকের মতো বিষাক্ত পদার্থ না রাখা, সেতুর রেলিংয়ের উচ্চতা বাড়ানো এবং আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার উপর জোর দিতে হবে বলেও জানিয়েছে হু।