November 12, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

বিশ্বাস কে বেশি ভাঙে জানলে লজ্জায় পড়বেন না তো !

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

পৃথিবীতে ক্রমাগত বাড়ছে প্রতারণার ঘটনা। বিশেষ করে নারী-পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে। একজন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে আরেকজনের শান্তিতে। এই অশান্তিই ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী।

বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনই তার সঙ্গীর সঙ্গে প্রতারণা করছে  প্রতিনিয়ত। এই অপরাধ মনষ্কতা একটি মামুলি ব্যাপার তাদের কাছে। কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে কোন শ্রেণির মানুষ অন্যের বিশ্বাস ভঙ্গ করে?

সম্প্রতি এ সংক্রান্ত নতুন এক গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে পার্সোনালিটি অ্যান্ড ইনডিভিজুয়াল ডিফারেন্স জার্নালে। সেখানে সমাধান মিলেছে নারী-পুরুষের বিশ্বাস-অবিশ্বাস সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের।

বিষয়টি নিয়ে জরিপ পরিচালনায় গবেষকরা ৫৭৬ জন প্রাপ্তবয়স্ককে বেছে নেন। তাদের ব্যক্তিত্ব,  প্রতারণাপূর্ণ আচরণ এবং প্রতারণার কারণ বিশ্লেষণ করা হয়।

গবেষণায় অন্যের সঙ্গে প্রতারণা থেকে বিরত থাকার কারণও বিশ্লেষণ করা হয়। যারা প্রতারণা বিরোধী তারা খুব দায়িত্বশীল, ন্যায়পরায়ণ এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ। অর্থাৎ যে বৈশিষ্ট্যগুলো তার ভেতর ইতিবাচক মনষ্কতা তৈরিতে সাহায্য করে।

কিন্তু ব্যক্তিত্বের কোন বৈশিষ্ট্য বেশি প্রতারণাপূর্ণ বলে  মনে হয়? উত্তরটি হয়তো এমনটিই আসবে ‘যারা খোলা মনের মানুষ’। আর প্রথম দৃষ্টিতে তাদেরকেই খোলা মনের মানুষ মনে হতে পারে যারা নতুন ধারণাকে স্বাগত জানায়, নতুন ধারণাকে অন্যকে বিপথে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র মনে করে না।

একটি জিনিস প্রায়ই বিবেচনা করা হয়, খোলা মনের মানুষ বেশি সৃজনশীল এবং কল্পনাপ্রবণ, যৌন স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং নিজের সামাজিক অবস্থানে সুখি। এই সমস্ত বিষয়কেই ইতিবাচক হিসেবে দেখা হয়। অবাক করার মতো বিষয় হলো এই সমস্ত বৈশিষ্টই প্রতারণার ক্ষেত্রে সহায়ক বলে ধরা পড়েছে গবেষণায়।

সেক্স থেরাপিস্ট ড. টামি নেলসন বলছেন, বিষয়টি এমন নয় যে প্রতারকরাই সকালে ঘুম থেকে উঠে  কৌশল খোঁজে তার সঙ্গীকে প্রতারণা করার। প্রকৃতপক্ষে, এমন অনেকেই আছে যারা খারাপ মানুষ নয়, অথচ অন্যকে প্রতারণা করার সিদ্ধান্তটি খুব সাধারণভাবেই নিয়ে নেয়।

গবেষণায় আরো দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে খুবই কম সংখ্যকই অন্যের সঙ্গে প্রতারণা করতে চায়। আর নারীরা বেশি বিশ্বস্ত পুরুষের চেয়ে।

প্রতারণার সঙ্গে আরেকটি বিষয় বেশ শক্তভাবে যুক্ত। তা হলো সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ।

গবেষকরা লিখেছেন, ‘সামগ্রিকভাবে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি, নারীদের মধ্যে অন্যকে প্রতারণা করা প্রবণতা কম। তারা অন্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কিন্তু অতটা খোলা মনের নয়। তারা একজনের সঙ্গে সম্পর্কে সন্তুষ্ট।

অন্যদিকে, পুরুষের মধ্যে প্রতারণা প্রবণতা বেশি। তারা একজনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে সন্তুষ্ট নয়। গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, নারীরা বিশ্বাস ভঙ্গ করলে তাদেরকে শাস্তি পেতে হয়। কিন্তু পুরুষের বেলা তা হয় খুব কম।

আরো বলা যায়, বর্তমান সমাজে প্রতারণা এত বেশি বেড়ে যাওয়ার পেছনে আমরা সবাই কম-বেশি দায়ী। মূলত একটি প্রতারণা জন্ম দিচ্ছে আরো অনেক প্রতারণার। একটি ঘটনা যতই সাধারণ হোক আমাদের কারোরই উচিত নয় তা এড়িয়ে যাওয়া বা ক্ষমা করা। তাই, বিষয়টি নিয়ে সবাইকে ভাবার সুপারিশ করা হয়েছে গবেষণায়।

বলা হয়েছে, প্রতারণার ঘটনাকে সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচনা করা মানেই তা আরো বাড়িয়ে দেওয়া। আমরা ডেটিং সংস্কৃতি গড়তে চাই, ভালো কথা। কিন্তু প্রতারণা হলে আমাদের সবাইকে তা দেখতে হবে। আমরা প্রতারককে ‘খারাপ লোক’ হিসেবে অভিহিত করবো না, কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে থাকতে হবে কঠোর।

Related Posts

Leave a Reply