এক বেলা খাবার না খেলেই মারাত্মক বিপদ!
কলকাতা টাইমস :
খাবার নিয়ে বরাবরই বলা হয়ে থাকে রুটিন মেনে খাবার খান। অর্থাৎ আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে সবার আগে আপনার খাবারের তালিকা ঠিক করতে হবে। কিন্তু আমাদের মাঝে অনেকই আছেন যারা ঘুম, কাজ, লাইফস্টাইল বিভিন্ন কারণে নিয়ম মেনে তিন বেলা খাবার খান না। ঘুমের জন্য সকালের খাবার দুপরে, দুপরের খাবার সন্ধ্যায় খেয়ে থাকেন। অনেকে আবার ডায়েটের নাম করেও খাবার নিয়ে অনেক অনিয়ম করে থাকেন। কিন্তু এটা একবারও চিন্তা করেন না যে, এক বেলার খাবার বাদ দেয়া মানেই আপনি নিজের জন্য ডেকে নিয়ে আসছেন মারাত্মক বিপদ! কীভাবে? আসুন জেনে নেই, যেকোনো এক বেলার খাবার বাদ দেয়ার কারণে কি কি সমস্যা হতে পারে।
ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা থাকে: অনেকেই জানেন না যে দুপুরের খাবার যদি বাদ দেয়া হয় তাহলে রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় যার ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর কারণ সময় মতো খাবার গ্রহন না করলে দেহে ইন্সুলিনের প্রতিক্রিয়ায় বিলম্ব হয়।
রক্তের শর্করার মাত্রা: আমাদের দেহে চিনি গৃহিত খাবারের শর্করার ভাঙনের মাধ্যমে পাওয়া যায়। এই শর্করা আমাদের দেহে জ্বালানী হিসেবে কাজ করে যা দেহের অঙ্গগুলোর স্বাভাবিক ক্রিয়ার জন্য প্রয়োজন। তাই যখন কোনো এক বেলার খাবার বাদ দেয়া হয় তখন দেহের কোনো জ্বালানী বা কর্মশক্তি থাকে না এর ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা কমে গিয়ে মাথা ঘুরাতে পারে এবং দেহের ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হতে পারে।
হজমের সমস্যা: অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার একটি প্রধান কারণ হচ্ছে খাবার বাদ দেয়ার প্রবণতা। প্রতিবার খাবার বাদ দেবার ফলে পাকস্থলীতে কিছু অ্যাসিড উৎপন্ন হয়ে তা খুব খারাপভাবেই পাকস্থলীকে আক্রান্ত করে যার ফলে আলসার ও পেটের ব্যাথার মতো বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে।
মন মেজাজের পরিবর্তন: খাবার বাদ দেয়ার একটি বড় কারণ হতে পারে মেজাজের পরিবর্তন। সাধারণত খাবার থেকে গ্লুকোজ সংগৃহীত হয় এবং এই গ্লুকোজ হচ্ছে মস্তিস্কের প্রধান শক্তির উৎস যা মন মেজাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া খাবার বাদ দেয়ার ফলে মস্তিস্কে কম শক্তির সরবরাহ হয় যার ফলে এটা ব্যক্তির মাঝে বদমেজাজ এবং বিরক্তির সৃষ্টি করে।
বিপাক ক্রিয়া ব্যাহত হয়: দিনের কোনো একসময়ের খাবার বাদ দেয়ার ফলে তা দেহ তন্ত্রের মাঝে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এর ফলে দেহ স্টারভেশন মুডে চলে যায়। তখন দেহের সংরক্ষিত শক্তি ব্যবহৃত হয় এবং যখন এই শক্তি শেষ হয়ে যায় তখন দেহের সামগ্রিক বিপাক কমে যায়। যার ফলে এটা ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে।
সতর্কতা:
ভালো স্বাস্থ্যকর অবস্থা বজায় রাখতে হলে সবচেয়ে ভালো হয় যদি দিনে কম পরিমানে ৪-৫ বার খাওয়া যায়। এতে করে পেট ভরা থাকার একটা অনুভূতি পাওয়া যায় এবং ক্ষুধা কম অনুভূত হয় যা দ্রুত ওজন কমার উপায় হিসেবে কাজ করে।
আরো একটা ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে যে দিনের দুইবার খাবারের মধ্যবর্তী সময় যেন কোনোভাবেই ৪ ঘণ্টার বেশি না হয়। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে কোনোভাবেই দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার অর্থাৎ সকালের নাস্তা বাদ দেয়া যাবে না।