সামান্য নারকেলই যখন ভূমিকম্প রোধের নকশা!
প্রকৃতির উপাদানই প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে রুখে দিতে পারে৷ ভূমিকম্প প্রতিরোধী দেওয়াল তৈরি করতে যখন নানারকম ভাবনা-চিন্তা স্থপতিদের, তখন তাঁদের পথ দেখাচ্ছে নারিকেল৷ মনে করা হচ্ছে, নারিকেলের গড়নেই লুকিয়ে আছে ভূমিকম্প প্রতিরোধের নকশা৷
নারিকেল গাছের উচ্চতা যথেষ্ঠ বেশি হয়৷ সেখান থেকে নিচে পড়লেও নারিকেলের শস্য অংশের কোনো ক্ষতি হয় না৷ শস্য নিরাপদ রাখতে প্রায় স্তরে স্তরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে নারিকেলের গঠনে৷ প্রথমে ছোবড়ার আবরণ, পরে শক্ত দেওয়ালের জেরেই অনেক উঁচু থেকে পড়ার পরও মাটির প্রত্যাঘাত নারিকেলের শস্যে পৌঁছয় না৷ গঠনের এই বিশেষ পদ্ধতিতেই তা আটকানো সম্ভব হয়েছে৷ এই বিষয়টিই ভাবিয়েছে জার্মানের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের৷
নারিকেলের এই বিশেষ গঠন রীতিমতো পরীক্ষা করে দেখছেন তাঁরা৷ কীভাবে মাটির আঘাতজনিত কম্পন স্তিমিত হয়ে যাচ্ছে তা নতুন ভাবনার জন্ম দিচ্ছে বিজ্ঞানীমহলে৷ শুধু ছোবড়ার আবরণই নয়, ঠিক যে বিন্যাসে ছোবড়ার তন্তুগুলি থাকে তাও গুরুত্বপূর্ণ৷ এই কৌণিক বিন্যাসই কম্পনকে ধাপে ধাপে কমিয়ে দেয়৷ এরপরে থাকে শক্ত দেওয়ালের আবরণ৷ ফলত শস্য একেবারে নিরাপদে থাকে৷ এমনকী শক্ত দেওয়ালে ফাটলও ধরে না৷ তন্তুর আবরণ সরিয়ে তবেই বিতরের দেওয়ালে ফাটল ধরানো সম্ভব হয়৷
ঠিক এই প্রযুক্তি দেওয়াল তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় কি না, ভাবছেন স্থপতিরা৷ ভূমিকম্পের প্রভাবও যদি কোনও কিছুর কৌণিক বিন্যাসে কমিয়ে দেওয়া সম্ভব হয় তাহলে আর দেওয়ালে ফাটল ধরবে না৷ সেইসঙ্গে ছোবড়ার তন্তু যথেষ্ট হালকা৷ অর্থাৎ হালকা বস্তু বিশেষ প্রযুক্তিতে রাখলে বড় কম্পন যে আটকানো সম্ভব, তা নারিকেলের গঠনেই স্পষ্ট৷ আরও বিশ্লেষণ করে এই পদ্ধতি বাস্তবে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখছেন বিজ্ঞানীরা৷