খাবেন নাকি ৭০ বছর আগের একই মেনু, আসুন এই রেস্টুরেন্টে
কলকাতা টাইমস :
ধরুন আজ থেকে ৩০-৪০ বছর আগে আপনার বাবা-মা আপনাকে খেতে নিয়ে গিয়েছিলেন কোনো রেস্টুরেন্টে। ফের আপনি নিজের সন্তানদের নিয়ে খেতে গেলেন সেখানেই। কিন্তু গিয়েই অবাক। একি ! ৪০ বছর আগেও যে মেনু ছিল, আজ তাই রয়েছে। পাল্টায় নি একটুও। রাজধানী দিল্লির ‘দ্যা অ্যামবেসি’ নামে একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকলে যে কেউ অবাক হবেন। কারণ এ রেস্টুরেন্ট দীর্ঘদিন ধরে তার ঐতিহ্য শুধু ধরে রাখতে সক্ষম হয়নি, এমনকি এর মেনুও পরিবর্তন হয়নি দীর্ঘ ৭০ বছরে।
১৯৪৮ সালে দ্যা অ্যামবেসি রেস্টুরেন্টটি চালু করা হয়। এরপর বহু উত্থান-পতন ঘটে গেছে এ উপমহাদেশে। কিন্তু রেস্টুরেন্টটি টিকে রয়েছে ঠিক আগের মতো। আভিজাত্যের প্রতীক এ রেস্টুরেন্টে বহুদিন ধরেই ভোজনরসিক মানুষের আনাগোনা। তবে এ রেস্টুরেন্টের রয়েছে অভিজাত একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির গ্রাহক, যারা একে টিকিয়ে রেখেছেন বহুদিন ধরেই।
১৯৪৮ সালের গ্রীষ্মে দুই বন্ধু পি এম মালহোত্রা ও জি কে ঘাই পাকিস্তানের রেস্টুরেন্ট ব্যবসা ত্যাগ করে দিল্লিতে রেস্টুরেন্টটি চালু করেন। এ রেস্টুরেন্ট সে সময় যে মেনু চালু করে তাতে সামান্য সংযোজন করা হলেও মূলত সেই মেনুটিই এখনো চলছে।
এ রেস্টুরেন্টের আতিথেয়তা গ্রহণ করতে বিভিন্ন সময়ে বিখ্যাত রাজনীতিক ও তারকারাও ভিড় করেছেন। এ রেস্টুরেন্টের অতিথিদের তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ড. রাজেন্দ্র প্রাসাদ ও জ্ঞানী জেইল সিং, বলিউডের তারকা রাজ কাপুর, ওম প্রকাশ ও যশ চোপড়া। এ ছাড়া এল কে আদভানি, অরুণ জেটলি, মদন লাল খুরানাসহ বহু রাজনীতিকও এ রেস্টুরেন্টের আতিথেয়তা নিয়েছেন।
রেস্টুরেন্টের উদ্যোক্তা মালহোত্রা বলেন, রেস্টুরেন্টের মেনুতে যে খাবারগুলো শোভা পাচ্ছে তা বহুদিন আগের। এ ছাড়া এ রেস্টুরেন্টে যে গ্রাহকরা আসেন তারা অত্যন্ত উচ্চপর্যায়ের। এমনকি জনশ্রুতি রয়েছে, আজকে পার্লামেন্টে কী ঘটনা ঘটবে তার আঁচ পাওয়া যাবে এ রেস্টুরেন্টে আসলেই।
কেন এতদিন ধরে একই মেনু রয়েছে রেস্টুরেন্টটিতে? এ প্রশ্নে মালহোত্রা বলেন, ‘আমাদের গ্রাহকরা পরিবর্তন পছন্দ করেন না। এ কারণে আমরা ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোই পরিবেশন করছি। অবশ্য সময়ে সময়ে সামান্য সংযোজন করা হয়েছে। আমাদের একটি ডিশের নাম টমেটো ফিশ। এটি পটেটো ফিংগার, মাছ ও বাড়িতে তৈরি টমেটো সসের সঙ্গে তৈরি করা হয়। আমরা যখন সেই ফিংগার চিপসকে কিছুটা মচমচে করলাম তখনই আমাদের নিয়মিত কাস্টমার এক ভদ্রলোক আপত্তি জানালেন। তিনি এ পরিবর্তনে অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছেন এবং পরবর্তীতে কোনো পরিবর্তন না করতে পরামর্শ দিয়েছেন।’
এ রেস্টুরেন্টের কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী খাবারের তালিকা ও তার প্রচলনের তারিখ :
অ্যামবেসি সামোসা (১৯৪৮)
তন্দুরি চিকেন (১৯৪৮)
অ্যামবেসি পুডিং (১৯৪৮)
মুর্গ মুসাল্লাম (১৯৫২)
ডাল মিট (১৯৫৪)
চানা ভাটুরা (১৯৪৮)
ফেশ চিজ কাটলেট (১৯৭৪)