এই সংকটে শরীর ঠিক রাখতে লাল আলু খান!
কলকাতা টাইমস :
করোনা সন্ত্রাসে সবাই এখন চাপে। তবে যেভাবেই হোক শরীর মন সুস্থ্য রাখতে হবে তাই এমন পরিস্থিতিতে সহজে শরীরের ক্ষয় আটকাতে একটা দারুন খাবারের সন্ধান দিতে পারে আজকের এই প্রতিবেদন! বাজার গিয়ে চোখ ফেরালেই লাল-লাল রাঙা আলুর দিকে নজর পরতে বাধ্য! এবার থেকে যখনই এই সবজিটি চোখে পরবে অমনি ব্যাগ ভর্তি করে নিয়ে চলে আসবেন। আর বানিয়ে ফেলবেন নানা মুখরোচক পদ।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, লাল আলুর শরীরে এমন কিছু পুষ্টিকর উাপাদান আছে, যা হার্ট থেকে কিডনি, শরীরের প্রতিটি ভাইটাল অর্গ্যানের খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবে আয়ু তো বাড়েই, সেই সঙ্গে শরীরও তরতাজা হয়ে ওঠে। তাহলে আর অপেক্ষা কেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে লাল আলু আমাদের শরীরের খেয়াল রেখে থাকে।
অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমায় : লাল আলুতে রয়েচে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা শরীরে প্রবেশ করার পর এত মাত্রায় শ্বেত এবং লহীত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় যে রক্তাল্পতার মতো সমস্য়া কমতে সময়ই লাগে না।
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায় : প্রচুর মাত্রায় ফাইবার থাকার কারণে নিয়মিত এই সবজিটি খেলে পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে কনস্টিপেশনের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে। তাই হে খাদ্য়রসিক বাঙালি, গ্যাস-অম্বলের সমস্যায় যদি জর্জরিত থাকেন,তাহলে এই সবজিটির সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে সময় নেবেন না যেন!
ক্যান্সার রোগকে প্রতিরোধ করে : এই সবজিটিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যারোটিনয়েড এবং ভিটামিন এ ক্যান্সার রোগকে আটকাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, এই উপাদানগুলি দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
ভিটামিন সি-এর ঘাটতি দূর করে : দাঁত এবং হাড়কে শক্তপোক্ত করার পাশাপাশি হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এবং একাধিক সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে এই ভিটামিনটির কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। এখানেই শেষ নয়, একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে ব্লাড সেলের ফর্মেশানেও ভিটামিন সি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ভিটামিন বি৬-এ পরিপূর্ণ : এই ভিটামিনটি শরীরে ফরস্থিত একাধিক ক্ষতিকর কেমিকেলের প্রভাবকে কমিয়ে দেয়। ফলে একাধিক ডিজেনারেটিভ ডিজিজ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্য়েরও উন্নতি ঘটায়। এমনটা হওয়ার কারণে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক এবং একাধিক হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
ভিটামিন ডি-এর চাহিদা পূরণ করে : শরীরকে সচল রাখতে যে যে ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণই ভূমিকা পালন করে থাকে, তার মধ্য়ে অন্য়তম হল ডি ভিটামিন। এই ভিটামিনটি হাড়কে শক্তপোক্ত করার পাশাপাশি শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে এবং মানসিক অবসাদের মতো সমস্যা কে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি যাতে কোনও সময় না হয় তার জন্য় নিয়মিত লাল আলু খাওয়া উচিত। কারণ এই সবজিটির অন্দরে যে পরিমাণে এই ভিটামিনটি থাকে, তা দেহের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায় : আয়রন হল এমন একটি খনিজ যা শ্বেত এবং লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে ইমিউন সিস্টেমের ক্ষমতা বাড়াতে দারুন কাজে আসে। আর এই খনিজটি প্রচুর পরিমাণে আছে লাল আলুতে। ফলে সপ্তাহে ১-২ বার এই সবজিটি খাওয়ার অভ্যাস করলে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণের আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
ডায়াবেটিসকে দূরে রাখে : স্বাদে মিষ্টি হলেও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এই সবজিটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে একেবারে নিচের দিকে রয়েছে রাঙা আলু। তাই এই সবজিটি খাওয়া মাত্র শরীরের অন্দরে সুগারের মাত্রা তো বাড়েই না, উল্টে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
স্ট্রেস কমায় : রাঙা আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম। এই খনিজটি আর্টারি এবং হার্টের পেশির কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি স্ট্রেস কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রকাশিত একাটি কেস স্টাডি অনুসারে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় গত এক দশকে স্ট্রেস সম্পর্কিত রোগের প্রকোপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পয়েছে। তাই আপনার শরীরকে ছোঁয়ার আগে স্ট্রেসকে আটকে দিন, না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
ব্রেন পাওয়ার বাড়ায় : মানব মস্তিষ্কের অন্দরে থাকা নার্ভ সেলগুলি নিজেদের মধ্যে যত সুন্দরভাবে সিগনাল আদান প্রদান করবে, তত ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে বাড়বে বুদ্ধি, মনোযোগ এবং মনে রাখার ক্ষমতাও। আর কীভাবে এমনটা সম্ভব হবে? এক্ষেত্রে পটাশিয়াম দারুনভাবে কাজে আসতে পারে। আর এই খনিজটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে রাঙা আলুতে। তাই কর্মক্ষেত্রে যদি সফল হতে চান, তাহলে আপনি জানেন আপনাকে কী করতে হবে।
হাড়ের রোগকে দূরে রাখে : রাঙা আলুতে উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপাদান, হাড় এবং জয়েন্টকে মজবুত করে। ফলে বুড়ো বয়সে নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। এনার্জি লেভেল বাড়ানোর পাশাপাশি হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে, নার্ভের কর্মক্ষমতা বাড়াতে এবং ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও এই সবজিটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে