November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শিল্প ও সাহিত্য

ডিম (গল্প) 

[kodex_post_like_buttons]
অমৃতাভ বন্দোপাধ্যায়
ঙ্কুবাবু  লোড-শেডিং এর মধ্যে একটু বেশী রাতে, আপিস থেকে, ঝড় বৃষ্টি মাথায় হাঁটু জল ঠেলে বাড়ি ঢোকা মাত্র  স্ত্রী শোভার হুকুম-‘যাও ছ’টা ডিম-নিয়ে এস দেখি’। হঠাত্ আসা ঝড় বাদলে চারদিক এমনিতেই আলুথালু, বাজার দোকান প্রায় বন্ধ।স্টেশন থেকে আসার পথেই খেয়াল করেছিলেন বঙ্কুবাবু।শোভাকে সে কথা জানিয়ে লাভ হয়নি কোনো। ওর এক কথা,” ডিম চাই। “
অগত্যা ,কুকুর বেড়াল না বেরোক ,ডিম আনতে তাকে বেরুতেই হয়েছিল। গোটা বাজার শুনশান।অন্ধকার। এক-দুটো যা পান বিড়ির দোকান আর ওষুধের দোকান খোলা। বাজারের ভেতরে খান দুই দোকানদার-, একজন পেয়ারা আপেল আমসত্ত্ব নিয়ে  আর একজন কুচোফুল বেলপাতা নিয়ে মোমবাতি জ্বেলে বসে আছে। ফুলফলের দোকানে ডিম আছে কিনা জিজ্ঞাসা করা ঠিক হবেনা ভেবেও,বঙ্কুবাবু কাঁদো কাঁদো মুখে না শুধিয়ে পারেন না। “এখানে ডিম আছে”?বেলপাতাওয়াল কটমটকরে তাকাতে, মিনমিন করে ওঠেন বঙ্কুবাবু।
–“মানে কোথায় পাবো বলতে পারেন? “
বেলপাতাওয়ালা এবার খিচিয়ে ওঠেন”-বিষ্টিতে খিচুড়ি ডিমভাজা খাবার শখ হচ্ছে না”?
বঙ্কুবাবু তুতুলে ওঠেন –“আমার না, আমার বউ এর! “
আমসত্ত্বওয়ালা হেসে ওঠে কান্নার সুরে, “ডিমতো ছ’টা আমরাও কিনেছি দাদা, কিন্তু চালের দোকান যে একটাও খোলেনি ভাই, কোথায় পাই বলুন দেখি? “
সেই ঝড়বাদলের রাতে বঙ্কুবাবু একটি অসমসাহসিক কাজকরে  তিন পুরুষের মুখ রক্ষা করেছিলেন।
বেলপাতাওয়ালা ও আমসত্ত্বওয়ালা কে  নিয়ে বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে লুকিয়ে দুজনকে তিন-তিন কৌটো চাল দিয়ে দুজনের থেকে তিনটে-তিনটে ছটা ডিম নিয়ে বউর হাতে তুলে দিয়ে করিতকর্মা স্বামীর খেতাব পেয়েছিলেন।এবং সে বর্ষার রাতে তিন -তিন জন পুরুষের সারারাত বৃষ্টিভেজা হবার সম্ভাবনার -গুড়ে বালি ঢেলে অন্তত মাথার ওপর ছাদ ও পিঠের নিচে গরম বিছানার সুবন্দোবস্ত বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছিলেন। 
খালি ঘুম আসার আগে অবধি শঙ্কিত ছিলেন বঙ্কুবাবু, ভাগ্যিস শোভা চালের ব্যাপারটা টের পায় নি! 
শোভার কাছে চালিয়াতির শাস্তি বড় ভয়ংকর। ছাল ছাড়িয়ে নেবে একদম। স্বামী- বেটা মানবে না। 
কিছু পরে, পাশে শোওয়া শোভার ঘুমন্ত ডান হাটুটা বুকে উঠে এলে, ডিম ভাবনা দীর্ঘনিঃশ্বাস হয়ে বঙ্কুবাবুর বুক ছেড়ে ঘরের ডিম আলোয়
 

Related Posts

Leave a Reply