হাতির গোবর দিয়ে কোটিপতি!
কলকাতা টাইমস :
প্রকৃতি তার সৃষ্টির সুবিধার জন্য অঢেল সম্পদ দিয়েছে। এর মধ্যে এমন কিছু সম্পদ এমন জায়গায় লুকানো আছে যেগুলো আমরা ভাবতেও পারি না। মনে করি ফেলনা আবর্জনা। এসব ফেলনা আবর্জনাই ঠিকঠাক হাতে পড়লে হয়ে ওঠে মহামূল্যবান সম্পদ। তবে চিনে নেয়াটা কঠিন, ওটা যার তার কাজ না। ভারতের মহিমা মেহেরা এবং ভিজেন্দ্র সাখাওয়াত এরকমই একটা ফেলনা জিনিসের মাঝে লুকোনো সম্ভাবনাকে খুঁজে পেয়েছিলেন। আর সেই ফেলনা জিনিসটা হলো হাতির গোবর।
আরও পড়ুন : ঘুম ভাঙাতেও ছিল পেশাদার, বাকি ১৪ অদ্ভুতুড়ে পেশার মতো তারাও গায়েব
১৫০০০ টাকা ধার নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও এখন তারা কোটি টাকার ব্যবসার মালিক। ব্যবসার প্রধান কাঁচামাল হাতির গোবরই তাদের কোটিপতি বানিয়ে দিয়েছে। তাদের শুরুটা জানতে হলে ফিরে যেতে হবে ২০০৩ সালে। জয়পুর অ্যাম্বার দূর্গের কাছে হাটতে হাটতে পথে পড়ে থাকা হাতির টাটকা গোবরে হোঁচট খেয়েছিলেন মহিমা। ইউরেকা ইউরেকা বলে চিৎকার না করলেও দারুন একটা ভাবনা খেলে গিয়েছিল তার মাথায়। এই গোবর দিয়েই কাগজ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। প্রায় এক দশক ধরে এই দম্পতি মানুষের ছি ছি শুনে গেছেন। কিন্তু তারা মনবল হারাননি। হাতির গোবরের নোংরাটুকু পেরিয়ে আরো অনেক বড় সম্ভাবনার দেখা পেয়েছিলেন তারা।
এরপর আর তাদেরকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তাদের তৈরি কাগজ এখন রীতিমতো বিখ্যাত। তাদের কোম্পানিও খ্যাতনামা ব্র্যান্ড। নোটবুক থেকে শুরু করে ছবির অ্যালবাম, ফ্রেম, ব্যাগ, গিফট ব্যাগ সবই তৈরি করছেন হাতির গোবর দিয়ে বানানো কাগজ দিয়ে। দামও রয়েছে হাতের নাগালের মধ্যেই। ১০-৫০০ তাকাতেই পাওয়া যায় এসব পণ্য।
ব্যবসা ভারতে শুরু হলেও শুরুতেই তারা তাদের পণ্য রপ্তানি করে আসছিলেন দেশের বাইরে। এমনকি পণ্য ভারতের বাজারে আসার চার বছর আগে থেকেই তারা এগুলো জার্মানিতে রপ্তানি করতেন। আর বর্তমানে ‘হাতি ছাপ’ দেয়া পণ্য ব্রিটেনেও জায়গা করে নিয়েছে।
এই গোবর থেকে কাগজ তৈরির পদ্ধতি বেশ অবাক করার মতো। হাতির হজমে বেশ গোলমাল রয়েছে। যা খায় তার সবটা হজম করতে পারে না। যার ফলে তাদের গোবর অনেক আঁশালো হয়। আর এই আঁশ ব্যবহার করেই অনেক ভাল মানের কাগজ তৈরি করা যায়। গোবর থেকে কাগজ তৈরির প্রথম ধাপ গোবর পরিষ্কার করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। প্রথমেই বড় একটি জলের ট্যাঙ্কে গোবরগুলো জমা করা হয়। এই গোবর ধোয়া জলও কিন্তু ফেলনা না, এটাকেও জৈব সার হিসেবে কৃষি জমিতে ব্যবহার হয়। আর পরবর্তী ধাপে গোবরগুলো শুকিয়ে কাগজ তিরির জন্য মন্ড প্রস্তুত করা হয়