অঙ্ক কষে ১৫ রাতে ১২১ নারীর সঙ্গে রাত কাটাতেন সম্রাট !
কলকাতা টাইমস :
প্রাচীন চীনে হাজার মাইল দীর্ঘ প্রাচীর নির্মাণ হচ্ছে অংকের হিসাবে– প্রতি পদক্ষেপ গুণে গুণে। দেশটিতে অংক এত জরুরী ছিল যে সাম্রাজ্যের কার্যক্রম কি আদালতের বিচারিক কার্যক্রম, তারও ভিত্তি ছিল গণিত বা অংক।
ক্যালেন্ডার ও গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হত সম্রাটের সকল সিদ্ধান্ত, এমনকি তার দিন ও রাতের কর্মকাণ্ডও নির্ধারিত হত এর দ্বারা। সম্রাটের উপদেষ্টারা নতুন এক পদ্ধতি বের করেছিলেন, যার মাধ্যমে নির্ধারিত হতো হারেমের বিপুল সংখ্যক নারীর সঙ্গে সম্রাটের রাত্রিযাপনের পালাক্রম।
কী সেই পদ্ধতি : এই পদ্ধতির মূল ব্যপারটি ছিল গাণিতিক হিসাব যাকে বলা হতে ‘জ্যামিতিক ক্রমবৃদ্ধি’। কিংবদন্তী আছে, ১৫ রাতের ব্যবধানে সম্রাটকে ১২১ জন নারীর সঙ্গে রাত্রিযাপন করতে হবে।
তার ক্রম নির্ধারিত হত এভাবে:
* সম্রাজ্ঞী – তিনজন ঊর্ধ্বতন সঙ্গিনী- নয়জন পত্নী -২৭জন উপপত্নী এবং ৮১জন দাসী।
প্রতিটি দলে মহিলার সংখ্যা তার আগের স্তরের নারীদের তিন গুণ। এর ফলে গাণিতিক হিসাব করে সহজেই একটি রোটা বা তালিকা করে ফেলা যেত যে ১৫ রাতের মধ্যে সম্রাট হারেমের প্রতিজন নারীর সঙ্গে রাত্রিযাপন করছেন।
‘রাজসিক উদ্যম’ : প্রথম রাত্রি নির্ধারিত ছিল সম্রাজ্ঞীর জন্য। এরপর পালাক্রমে আসতেন ঊর্ধ্বতন সঙ্গিনী এবং পত্নীরা। উপ পত্নীদের তালিকা অনুযায়ী পছন্দ করা হতো, একেক রাতে নয়জন করে।সর্বশেষ নয় রাতে পালা করে ৮১ জন দাসীর সঙ্গে রাত্রিযাপন করতেন সম্রাট।
তালিকায় এটা অবশ্যই নিশ্চিত করা হত যে, মর্যাদায় উচ্চতর অবস্থানে থাকা নারীদের সঙ্গে সম্রাট পূর্ণ-চাঁদের কাছাকাছি সময়ে রাত কাটাবেন। এর মাধ্যমে সম্রাটের উত্তরাধিকার অর্থাৎ তার সন্তান-সন্ততি যেন মর্যাদাশীল নারীর গর্ভে জন্ম নেয় সেটি নিশ্চিত করা হতো।
এভাবে সম্রাটের শয্যার রুটিনেই কেবল গণিত নয়, সাম্রাজ্যের বংশ পরম্পরাও সৃষ্টি হত গাণিতিক হিসেব নিকেশ অনুযায়ী। চীনা সাম্রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রেও গণিত এক বিরাট প্রভাব রেখেছিল।
গণিত প্রীতি : চীন ছিল এক বিশাল ও ক্রমবর্ধনশীল সাম্রাজ্য, যেখানে আইনকানুন খুব কড়া ছিল। ব্যাপক কর দিতে হত নাগরিকদের। এছাড়া ওজন, মাপজোক আর মুদ্রার প্রচলন ছিল। পশ্চিমের দেশগুলোর এক হাজার বছর আগেই প্রাচীন চীনে দশমিকের ব্যবহার ছিল এবং সমীকরণের সমাধানে তা ব্যবহৃত হত। পশ্চিমের দেশগুলোতে যা উনিশ শতকের শুরুর আগ পর্যন্ত দেখা যায়নি।
কিংবদন্তী জনশ্রুতি আছে, চীনের প্রথম সম্রাটের একজন দেবতা ছিলেন, খ্রিষ্টপূর্ব ২৮০০ সালে যিনি গণিত তৈরি করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, প্রতিটি সংখ্যার মহাজাগতিক গুরুত্ব আছে। এমনকি আজকের চীনেও সংখ্যা তত্ত্বের এই গুরুত্বে বিশ্বাস করেন চীনারা।