আলিবাবা না থাকলেও এখানে গুপ্তধন এখনো আছে!
কলকাতা টাইমস :
হঠাৎ করে আলিবাবার মতো রাস্তা হারিয়ে কোনও গুহার সন্ধান পেলে কেমন হয় বলুন তো? চিচিং ফাঁক বললেন আর গুহার দরজা খুলে গেল। চোখের সামনে ঝলকে উঠল রাশি রাশি সোনা, হিরে! আহ্, মনটা কেমন উরু উরু করছে না! আলিবাবার গুহার খোঁজ হয়তো পাওয়া যাবে না। তবে, এমন অনেক গুপ্তধন কিন্তু এখনও রয়েছে এই দুনিয়ায়। রূপকথা থেকে বেরিয়ে আপনাকে আজ রিয়েল লাইফ গুপ্তধনের হদিশ দিলাম। একবার যাবেন নাকি গুপ্তধনের সন্ধানে?
আসুন এবার আমরা দেখে আসি কোথায় পাবো এই গুপ্তধন:
১-১৭৩৯ সালে ভারত আক্রমণ করেন নাদির শাহ। ইতিহাস অনুযায়ী, প্রচুর ধন-সম্পদ লুঠ করেছিলেন তিনি। নাদির শাহের মৃত্যুর পর তাঁর ঘনিষ্ঠ আহমেদ শাহ লুঠ হওয়া সম্পদ নাকি লুকিয়ে রাখেন হিন্দুকুশ পর্বতে।
এমনটাই অনেকের বিশ্বাস। যদিও এখনও পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া যায়নি লুকিয়ে রাখা সম্পদের।
২-বিহারের রাজগিরে অবস্থিত সোনভাণ্ডার গুহায় দু’টি অদ্ভুত চেম্বার আছে। চেম্বার দু’টির মুখ পাথরের চাঁই দিয়ে আটকানো।যার উপরে শঙ্খলিপি খোদাই করা আছে।
কথায় আছে, সেখানে নাকি মহারাজা বিম্বিসারের সম্পদ লুকনো আছে। আর সেই গুপ্তধনের সন্ধান দেওয়া আছে শঙ্খলিপিতে।
কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও খোদাই করা শঙ্খলিপির অর্থ উদ্ধার করা যায়নি।
৩-হায়দরাবাদের কিং কোঠি প্যালেসের মাটির নীচের চেম্বারেও প্রচুর সোনাদানা লুকনো আছে বলে শোনা যায়।
মাটির নীচে ওই গুপ্ত ঘরেই নাকি হায়দরাবাদের শেষ নিজাম মির ওসমান আলি তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময়টা কাটাতেন। তাঁর সমস্ত সম্পদ তিনি নাকি এই ঘরের ভিতরেই লুকিয়ে রেখেছিলেন।
৪-১৭৮২ সালে প্রচুর সম্পদ নিয়ে ভারত থেকে ইংল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জাহাজ ‘দ্য গ্রসভেনর’।
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন থেকে ৭০০ মাইল দূরে তা মাঝ সমুদ্রে হারিয়ে যায়।
হারিয়ে যাওয়ার সময় জাহাজটিতে ২ কোটি ৬০ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা, হিরে এবং চুনি ছিল।
পরে জাহাজটির খোঁজ পাওয়া গেলে কিছুটা সম্পদ উদ্ধার করা যায়।
তবে বেশিরভাগটা এখনও পানির নীচে জাহাজেই আটকে আছে।
৫-সুপ্রিম কোর্টের অনুমতিতে কেরলের তিরুঅন্তপুরমের পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে বন্ধ হয়ে থাকা একটি ভল্টের দরজা খোলা হয় ২০১১ সালে। সেখানে মেলে মূল্যবান গয়না, মুকুট, মূর্তি, সোনার বাসনপত্র।
সব মিলিয়ে যার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ২২০০ কোটি ডলার। এই মন্দিরে এখনও বন্ধ হয়ে আছে বেশ কিছু ভল্ট। যেগুলো খোলা যায়নি।
৬-আমেরিকার বেডফোর্ডে ৬ কোটি ৩ ডলারের গুপ্তধন আছে বলে শোনা যায়। যদিও তার হদিশ এখনও পাওয়া যায়নি।
এমন ঘটনা শোনা যায় যে, এই সম্পত্তির মালিক থমাস বেলি নামে এক ব্যক্তি।
বেলফোর্ডের বাসিন্দা বেলি তাঁর সমস্ত সম্পদ এই দেশেই কোথাও লুকিয়ে রেখে নিখোঁজ হয়ে যান।
তিনি বন্ধুকে একটি বাক্স হস্তান্তর করেছিলেন। বাক্স থেকে তিনটে চিরকুট মেলে।
যার একটিতে গুপ্তধনের ঠিকানা, একটিতে গুপ্তধনের পরিমাণ এবং আর একটিতে গুপ্তধনের মালিকদের নাম লেখা ছিল।
দ্বিতীয় চিরকুটের ভাষা উদ্ধার করা গেলেও, বাকি দু’টো এখনও বোধগম্য হয়নি। যার ফলে গুপ্তধনের পরিমাণ জানা গেলেও তা উদ্ধার করা যায়নি।
৭-১৬২২ সালে স্পেন থেকে বহু ধনসম্পদ নিয়ে যাওয়ার সময় ঝড়ে ফ্লোরিডা থেকে ১৬০ কিমি দূরে মাঝ সমুদ্রে ডুবে যায় কয়েকটি জাহাজ। সব মিলিয়ে তাতে ৭০ কোটি ডলারের সম্পদ ছিল।
১৯৮৫ সালে তার মধ্যে প্রায় ৫০ কোটি ডলারের সম্পদ উদ্ধার করা গিয়েছে। বাকিটা এখনও থেকে গিয়েছে জলের তলায়।
৮-দক্ষিণ আমেরিকার কলম্বিয়ার গুয়াটাভিটা হ্রদের তলায় প্রচুর সোনার মুদ্রা পড়ে রয়েছে।
না, কোনও রাজা তাঁর সম্পদ এখানে লুকিয়ে রেখে যাননি। উল্টে স্থানীয় একটি রীতিই এর কারণ।
জল দেবতাকে তুষ্ট করার জন্য প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে পুরোহিত সারা গায়ে সোনার ধুলো মেখে একটি স্বর্ণমুদ্রা এই হ্রদে ফেলে থাকেন।
তা হলে ভাবুন, কত সোনার মুদ্রা এই জলাশয়ের নীচে জমেছে এত দিনে! এই জলাশয়ে কিন্তু নামা নিষিদ্ধ।
৯-আল্পস পর্বতের উপরে থাকা টপলিজ হ্রদেও নাকি প্রচুর গুপ্তধন রয়েছে। শোনা যায়, অপারেশন বার্নহার্ড অসফল হওয়ার পর নাজিরা এক সময় প্রচুর সম্পদ এই হ্রদের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল।
২০০২ সালে যার হদিশ পাওয়া যায়। যা এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
১০-ম্যাক্স ভ্যালেনটিন নামে এক ব্যক্তি ১৯৯৩ সালে সোনার পেঁচা লুকিয়ে রেখে দিয়েছিলেন। ফ্রান্সের ঘটনা। পেঁচাটি যে খুঁজে দিতে পারবে তাঁকে অনেক পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন ম্যাক্স।
কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও তার খোঁজ কেউ পায়নি। ২০০৯ সালে ম্যাক্স মারা যান। সোনার পেঁচা রহস্যেই থেকে গিয়েছে।