সন্তান সুখ চাইলে এই খাবারগুলি ভুলেও না !
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে গত ২০ বছরে সারা বিশ্বে ইনফার্টিলিটিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশই পুরুষ। শুধু তাই নয়, এই সংখ্যাটা কিন্তু থেমে নেই। ক্রমশ বাড়ছে। সম্প্রতি “হু” এর প্রকাশ করা একটি রিপোর্ট বলছে বর্তমানে সারা বিশ্বে ইনফার্টিলিটিতে আক্রান্ত দম্পতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০-৮০ মিলিয়ানে। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের অবস্থাও যে খুব একটা আশাপ্রদ, তা না যদিও। এদেশেও ক্রমশ চিত্রটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। আর সবথেকে ভয়ের বিষয়টা কী জানেন? স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কারণ ছাড়াও কিছু খাবারের কারণেও এমন সমস্যা আরও বেশি মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর এ সম্পর্কে প্রায় সিংহভাগেরই কোনও ধরণা নেই। ফলে অজান্তেই মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, একাধিক সমীক্ষায় দেখা গেছে ২৫-৩৫ বছর বয়সিরা তাদের কর্মজীবনের কারণে বেশিরভাগ সময়ই বাড়ির বাইরে খেয়ে থাকেন। আর সেক্ষেত্রে জাঙ্কফুডই হয় তাদের প্রথম পছন্দ। ফলে যা হওয়ার তাই হয়! একদিক যেমন নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, তেমনি স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়ার কারণে বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রেও নানাবিধ সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। একাধিক গবেষণার পর কিছু খাবারকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাদের মতে এই সব খাবার নিয়মিত খেলে পুরুষদের শরীরে এমন কিছু নেতিবাচক পরিবর্তন হয় যে ধীরে ধীরে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাই বাবা হওয়ার ইচ্ছা থাকলে এইসব খাবার থেকে দূর থাকাই বাঞ্জনীয়। এক্ষেত্র যে যে খাবারগুলি এড়িয়ে চলতে হবে, সেগুলি হল…
১. কোল্ড ড্রিঙ্ক: একাধিক গবেষণা একথা প্রমাণ করেছে যে নিয়মিত কোল্ড ড্রিঙ্ক পান করলে স্পার্ম কাউন্ট চোখে পরার মতো কমে যেতে থাকে। ফলে এক সময় গিয়ে বাবা হওয়ার ক্ষমতাটাই চলে যায়। তাই এবার থেকে তেষ্টার সময় গলা ভেজাতে কোল্ড ড্রিঙ্কের পরিবর্তে জুস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন ক্ষতি হবে কম, উপকার পাবেন বেশি।
২. প্রসেসড মিট: প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া তো প্রায় রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এমনটা হবে নাই বা কেন বলুন! অফিসের চাপে এখন আর কারও হাতেই রান্না করার সময় নেই। তাই অগত্যা এমন ধরনের খাবারেই ফ্রিজ ভরাতে বাধ্য় হচ্ছে অনেকে। কিন্তু বুঝতে তারা জানতে পারছেন না এমন খাবার খাওয়ার কারণে শরীরের কতটা ক্ষতি হচ্ছে। ২০১৪ সালে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাতে দেখা গিয়েছিল প্রক্রিয়াজাত মাংস খেলে স্পার্ম কাউন্ট প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়। আর এমনটা হলে যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা যে আর দূর থাকে না, সে কথা তো বলাই বাহুল্য! বাচ্চাকে সঠিক তেল মাখাচ্ছেন তো?
৩. অ্যালকোহল: বেশি হলে তো কোনও সুযোগই নেই। কিন্তু অল্পতেও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। কারণ অ্যালকোহল শরীরে প্রবেশ করা মাত্র নানাবিধ ক্ষতি সাধন করে থাকে। যার মধ্যে অন্যতম হল স্পার্ম কাউন্ট কমিয়ে দেওয়া। তাই এবার থেকে যখন পানীয়র গ্লাস হাতে আয়েশ করবেন, তখন একবার ভাববেন এমনটা করাতে আপনার ভবিষ্য়ত অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে না তো!
৪. চিজ: ২০১৩ সালে হিউমেন রিপ্রোডাকশনের উপর করা এক গবেষণা অনুসারে দীর্ঘ দিন ধরে চিজ এবং ফুল ফ্যাট মিল্ক খেলে স্পার্ম কাউন্ট চোখে পরার মতো কমে যায়। তবে তাই বলে দুধ খাওয়া বন্ধ করবেন না যেন! শুধু ফুল ফ্যাট মিল্কের বিকল্প কিছু একটা খুঁজে নিলেই চলবে। এখানেই প্রবন্ধটা শেষ হয়ে যায় না। খাবার যেমন ক্ষতি করে, তেমনি ভালও তো করে। তাই এবার সেই সব খাবার সম্পর্কে আলোচনা করা হবে যা খেলে ইনফার্টিলিটি ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।
১. কলা: এই ফলটির গুণাগুণ বলে শেষ করার নয়। কলা একদিকে যেমন শরীরের পুষ্টির ঘাটতি দূর করে, তেমনি ভিটামিন সি, এ এবং বি১-এর মতো উপাদানের যোগান ঠিক রেখে সেক্স হরমোনের কার্যকারিতাকে বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. ব্রকলি: এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এ, যা স্পার্ম কাউন্ট বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, গাজর, পালং শাক এবং রাঙা আলু খেলেও একই উপকার পাওয়া যায়।
৩.আখরোট: ওমেগা-ত্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বন্ধাত্বের মতো রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই উপাদানটি পুরুষাঙ্গে রক্তের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্পার্ম কাউন্ট বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত, আখরোটের পাশাপাশি মাছেও প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই প্রতিদিনের ডায়াটে এই খাবারগুলি থাকা মাস্ট!
৪. রসুন: এতে উপস্থিত অ্যালিসিন এবং সেলেনিয়াম নামে দুটি উপাদান স্পার্মের যাতে কোনওভাবে ক্ষতি না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখে। ফলে বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা দূর হয়।
৫: ভিটামিন সি সমৃদ্ধি খাবার: এই ভিটামিনটি পুরুষদের ফার্টিলিটি সংক্রান্ত নানাবিধ জটিলতা দূর করতে দারুন উপকারে লাগে। তাই তো ভিটামিন সি সমৃদ্ধি খাবার, যেমন- কমলা লেবু, ব্রকলি এবং স্ট্রবেরি খেতে হবে নিয়মিত।