কলকাতা টাইমস :
প্রতি সোমবার সকালে এক মনে “ওম নম শিবায়” মন্ত্রটি যপ করতে করতে যদি দেবাদিদেবের সবথেকে শক্তিশালী রূপ, “সদাশিব মূর্থি” এর আরাধনা করা হয়, তাহলে যে কোনও ধরনের কষ্ট কমতে সময় লাগে না। শিব পুরানে দেবাদিদেবের ৬৪ টি রূপের বর্ননা রয়েছে। সেই ৬৪ টি রূপের অন্যতম হল “সদাশিবহ মূর্থি”। এই রূপে শিব ঠাকুরের পাঁচটি মুখ।
শাস্ত্র মতে দেবের এই রূপটি শক্তির প্রতীক এবং এক মনে এই রূপের আরাধনা করলে গৃহস্থের প্রতিটি কোণায় শুভ শক্তির মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে তার প্রভাবে একাধিক উপকার মেলে। যেমন ধরুন…
১. মনের যে কোনও ইচ্ছা পূরণ হয়: শিব পুরান অনুসারে প্রতি সোমবার উপোস করে দেবাদিদেবের এই বিশেষ রূপের আরাধনা করলে সর্বশক্তিমান এতটাই প্রসন্ন হন যে দেবের আশীর্বাদে ভক্তের মনের মণিকোঠায় সযত্নে সাজানো প্রতিটি স্বপ্ন পূরণ হতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, জীবন পথে চলতে চলতে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা যে কোনও সমস্যা মিটতেও সমায় লাগে না। ফলে অনন্দে ভরে ওঠে জীবনের প্রতিটি দিন।
২. বিবাহ সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা মিটে যায়: হাজারো চেষ্টা করেও মনের মতো জীবনসঙ্গীর সন্ধান মিলছে না? সেই সঙ্গে লেজুড় হয়েছে বিবাহ সংক্রান্ত নানা ঝামেলাও? তাহলে বন্ধু আজ থেকেই দেবাদিদেবর সদাশিব মূর্থি রূপের পুজো শুরু করুন। দেখবেন সব ঝামেলা মিটে যাবে। সেই সঙ্গে মনের মতো জীবনসঙ্গীর খোঁজও পাবেন। শুধু তাই নয়, এমনটাও বিশ্বাস করা হয় যে নিয়মিত দেবাদিদেবর আরাধনা করলে বৈবাহিক জীবনে কোনও ধরনের ঝামেলা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও যায় কমে। ৩. কোনও রোগ ছুঁতে পারবে না: একেবারে ঠিক শুনেছেন বন্ধু! শাস্ত্র মতে প্রতি সোমবার এক মনে দেবের অরাধনা করতে করতে করতে যদি “ওম নম শিবায়” অথবা মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠ করা হয়, তাহলে দেবাদিদেবের আশীর্বাদে শরীর এবং এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে আয়ু বাড়ে চোখে পরার মতো।
৪. পিতৃ দোষ, কালশর্প যোগ এবং মঙ্গল দোষ কেটে যায়: এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি সোমবার উপোস করে সদাশিব মূর্তির আরাধনা করলে দেব এতটাই প্রসন্ন হন যে তাঁর আশীর্বাদে যে কোনও ধরনের গ্রহ দোষ তো কেটে যায়ই। সেই সঙ্গে কালশর্প দোষ, মঙ্গল দোষ এবং পিতৃ দোষও কেটে যায়। ফলে নানাবিধ সমস্যায় জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় কমে। তাই তো বলি বন্ধু, যাদের জন্ম কুষ্টিতে এমন দোষের যোগ রয়েছে, তারা দেবাদিদেবের এই বিশেষ রূপের আরাধনা করতে ভুলবেন না যেন!
৫. অকাল মৃত্যু হাওয়ার আশঙ্কা কমে: সময়ের আগে এই পৃথিবী ছাড়ার ইচ্ছা না থাকলে দেবের শরণাপন্ন হতে দেরি করবেন না যেন! কারণ শাস্ত্র মতে নিয়মিত দেবের অরাধনা করলে আমাদের আশেপাশে উপস্থিত খারাপ শক্তির প্রভাব কমতে শুরু করে। ফলে কোনও ধরনের বিপদ ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি অকাল মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনাও আর থাকে না। ৬. টাকা-পয়সা সংক্রান্ত সব ঝামেলা মিটতে শুরু করে: নানা কারণে ধার-দেনা কি খুব বেড়ে গেছে? এদিকে কীভাবে টাকার জোগার করবেন ভেবে পাচ্ছেন না? তাহলে বন্ধু একবার বিশ্বাস করে দেবাদিদেবের সদাশিব মূর্থি রূপের আরাধনা শুরু করুন। দেখবেন অল্প সময়েই টাকা-পয়সা সংক্রান্ত সব ঝামেলা মিটে যাবে। শুধু তাই নয়, দেবের আশীর্বাদে অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হতেও দেখবেন সময় লাগবে না।
এ জন্মে যদি বড়লোক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ করতে হয়, তাহলে দেবাদিদেবের শরণাপন্ন হতে দেরি করবেন না যেন!
৭. স্বামীদের আয়ু বাড়ে: এমন বিশ্বাস রয়েছে যে বিবাহিত মহিলারা যদি পর পর চারটে সোমবার উপোস করে দেবাদিদেবের সদাশিব মূর্থি রূপের আরধনা করেন, তাহলে নাকি স্বামীর আয়ু তো বাড়েই, সেই সঙ্গে তাঁর কোনও ধরনের বিপদে পরার আশঙ্কাও যায় কমে। শুধু তাই নয়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্কেরও উন্নতি ঘটে।
৮. শনি দেবের বক্র দৃষ্টি পরার আশঙ্কা যায় কমে: শাস্ত্র মতে নিয়মিত দেবাদিদেবের আরধনা করলে শনি দেবের খারাপ দৃষ্টি পরার আশঙ্কা যায় কমে। শুধু তাই নয়, সাড়ে সাত বছরের আগেই শনির সাড়ে সাতির প্রভাব কমতে শুরু করে। ফলে হারিয়ে যাওয়া সুখ-শান্তি ফিরে আসতে সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু যাদের জন্ম কুষ্টিতে সাড়ে সাতির খপ্পরে পরার যোগ রয়েছ, তারা নিয়মিত দেবের নাম নিতে ভুলবেন না যেন!
৯. জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি মেলে: গীতায় বলে সময় হলে দেহের অন্দরে থাকা আত্মা পুরানো জামা-কাপড়ের মতো এই শরীর ত্যাগ করে আরেক শরীরে গিয়ে বাসা বাঁধে। অর্থাৎ এইভাবে জন্ম-মৃত্যুর খেলা চলতেই থাকে। কিন্তু এই চক্র থেকে মুক্তির উপায়ও আছে। কী উপায়? এক্ষেত্রে প্রতি সোমবার একমনে ওম নম শিবায় মন্ত্রটি জপ করত করতে দেবের পুজোর করতে হবে। তাহলেই দেখবেন মুক্তি মিলবে। ফলে বারে বারে ফিরে আসতে হবে না এই ধরাধামে।
১০. দুঃখ-কষ্ট তেকে মুক্তি মেলে: মনে পরে সমুদ্র মন্থনের সময় সমুদ্র বক্ষ থেকে যখ বিষ উঠে এসেছিল
তখন দেবদিদদেব সেই বি।ষ পান করেছিলেন। তাই তো তাঁর আরেক নাম নীসকন্ট। দেব যে ভাবে বিষ পান করেন, সেই একই ভাবে ভক্তের জীবনে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা নানা সমস্য়া এবং দুঃখেকে নিমেষে শুষে নেন। তাই তো দেবের পুজোর আয়োজন করলে যে কোনও ধরেনর কষ্টের হাত থেকে মুক্তি মিলতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে রাগ, ইগো এবং ইর্ষার মতো খারাপ অনুভূতিরও মৃত্য়ু ঘটে। ফলে মানুষ হিসেবে আমাদের উন্নতি ঘটে।