যে গ্রামের সবাই যৌন নির্যাতনের আসামি
মানুষগুলো সমাজের সকলের কাছেই ঘৃণিত। বলা হয়ে থাকে এর চেয়ে নিকৃষ্ট কাজ আর নেই। যারা এমন কাজ করে সবাই তাদের পশুতুল্য মনে করে এড়িয়ে চলে। কিন্তু তাদের জন্য আলাদা একটা গ্রাম- এমন কখনও শোনা যায়নি।
আমেরিকার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে রয়েছে সেই গ্রাম। যেখানে পশুতুল্য এই মানুষদের রাখা হয়। তারা সবাই ধর্ষক কিংবা যৌন কেলেঙ্কারীর দায়ে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী।
গ্রামটির নাম সিটি অব রিফিউজি বা নির্বাসিতদের গ্রাম। গ্রামের বাসিন্দারা সবাই জীবনের কোন না কোন সময় মহিলার সম্ভ্রমহানী বা যৌন নির্যাতনের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। উত্তর ফ্লোরিডার পাম বিচ কাউন্টির এই গ্রামটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন গ্রাম হিসেবে বিবেচিত।
পাম বিচ কাউন্টির বাসিন্দাদের কাছে গ্রামটি ‘মিরাকল ভিলেজ’ নামেও পরিচিত। তবে ২০১৪ সালে সরকারিভাবে গ্রামটির নাম পাল্টে ‘সিটি অব রিফিউজি’ করা হয়। সব মিলিয়ে ৫৪টি বাড়িতে প্রায় দুইশ মানুষ আছে এই গ্রামে।
গ্রামটি গড়ে ওঠার পেছনে ফ্লোরিডার একটি আইনের ভূমিকা রয়েছে। ফ্লোরিডার আইনে ধর্ষক বা যৌন নির্যাতনের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের স্কুল, বাস স্ট্যান্ড, খেলার মাঠ এবং বাচ্চাদের এক হাজার মিটারের মধ্যে বসবাসে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। তখন সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীরা এই স্থানে এসে বাস করতে শুরু করে।
গ্রামটি গড়ে তোলার পেছনে রিচার্ড উইদিরো নামে এক ব্যক্তির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। রিচার্ড ছিলেন ফ্লোরিডার রাজ্যমন্ত্রী। তিনি আইনে ধর্ষকদের এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানতেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গ্রামটি গড়ে ওঠে। তিনি চাইতেন- লোকালয় থেকে দূরে এই অপরাধীদের জন্য আবাসস্থল গড়ে উঠুক। যাতে তারা সমাজে ছড়িয়ে পড়তে না পারে। তাছাড়া সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন দাগী অপরাধীরও স্বাভাবিক জীবন কাটানোর অধিকার আছে।
তবে এই গ্রামে চাইলেই যেকোন ধর্ষক বসবাস করতে পারে না। এখানে বাস করতে হলে আগে গ্রাম পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কমিটির প্রধানের নিকট আবেদন করতে হয়। প্রতি সপ্তাহে গড়ে বিশটির মতো আবেদন আসে। কিন্তু গ্রহণ করা হয় মাত্র একটি। শিশু ধর্ষণকারী, ক্রমিক ধর্ষক (সিরিয়াল রেপিস্ট) এবং মারাত্মক সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের আবেদন গৃহীত হয় না।