হিটলারের এই ঘাঁটি খুঁজে পেয়ে চমকে গিয়েছিলেন সবাই
কলকাতা টাইমস :
আর্কটিকে নাৎসি বাহিনীর পরিত্যক্ত একটি ঘাঁটির সন্ধান পাওয়া গেছে। সংক্রমিত মেরু ভল্লুকের মাংস খাওয়ার পর সেখানকার সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং ঘাঁটিটি ছেড়ে চলে যায়।
ট্রেজার হান্টার’নামের রহস্যময় এই ঘাঁটিটি তৈরি করা হয় হিটলারের রাশিয়া হামলার এক বছর পর, ১৯৪২ সালে। রুশ গবেষকরা সেখানে একটি সমরিক ঘাঁটি ও বিজ্ঞানীদের ব্যবহৃত জিনিষপত্রের সন্ধান পান। সংক্রমিত মেরু ভল্লুকের মাংস খাওয়ার পর ইউ-বোটে করে তারা ঘাঁটিটি ছেড়ে চলে যায়।
প্রাচীন সমরাস্ত্র খুঁজে বের করার জন্য নাৎসিরা একটি মিশন পঠায় উত্তর মেরু এলাকায়। এই ঘাঁটিটি সম্ভবত তারই অংশ। রুশ গবেষকরা ঘাঁটিট খুঁজে পাওয়ার পর সেখান থেকে ৫ শতাধিক প্রাচীন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। ঘাঁটিটি আলেকজান্দ্রা ল্যান্ডে অবস্থিত। উত্তর মেরু থেকে এটি প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে।
চাঁদের মতো উষর বিচ্ছিন্ন এলাকাটির ওই ঘাঁটি থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালের আরো ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে শেল ও অন্যান্য জিনিসপত্র আছে। এ ছাড়া বেশকিছু বাংকারের ধ্বংসাশেষ, পেট্রোলের ফেলে দেওয়া ক্যানিস্টার, এমনকি কাগজের নথিপত্রও উদ্ধার করা হয়। প্রচণ্ড ঠান্ডায় এগুলো সংরক্ষিত ছিল।
আলেকজানন্দ্রা ল্যান্ড- এই নামটি রাখা হয় রুশ সম্ভ্রান্ত এক মহিলার নাম অনুসারে। এটি আর্কটিক চক্রের একেবারে উত্তরে অবস্থিত। নরওয়েসহ বেশ কয়েকটি দেশ এর দাবি করছে। এই উষর দ্বীপটিতে ১৯৩০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত একমাত্র স্থায়ী নিদর্শন হিসেবে দাঁড়িয়েছিল নাৎসিদের তৈরি একটি আবহাওয়া কেন্দ্র।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এলাকাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এখান থেকে আবহাওয়ার যে খবর দেওয়া হতো তা সামরিক অভিযানে সহায়তা করার পাশপাশি পৃথিবীর একেবারে উত্তরে মালামাল পরিবহনে সহায়তা করত।
বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে মিত্র বাহিনী অঞ্চলটির বেশিরভাগ এলাকা দখল করে নেয়। কোনো উপায় না দেখে নাৎসি বাহিনী আলেকজান্দ্রা ল্যান্ডে ছোট্ট একদল পর্যবেক্ষক পাঠায়। প্রত্যন্ত এলাকায় বিমান থেকে খাদ্য বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ফেলা হতো।
১৯৪৪ সালে খাবার না পেয়ে ঘাঁটিতে আটকা পড়া নাৎসিরা মেরু ভল্লুক ধরে কাঁচা মাংস খেতে লাগল। এর ফলে সংক্রামক রোগে আকান্ত হয় তারা। সংক্রমণ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় বিজ্ঞানীদের উদ্ধার করা হয় ইউ-বোট দিয়ে।
স্নায়ু যুদ্ধের সময় এলাকাটি আরো গুরুত্ব পায়। এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরুর আরেকটি কারণ দৃশ্যত সেখানকার খনিজসম্পদ।