বয়স্কদের ফ্যান ব্যবহারে হিতে বিপরীত
আমরা স্বাভাবিকভাবে গরম লাগলে বৈদ্যুতিক ফ্যানের বাতাসে ঠাণ্ডা হতে পারি। কিন্তু বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু আলাদা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স বাড়লে ফ্যানের বাতাস হিতে বিপরীত হতে পারে।
সাধারণত একজন ব্যক্তির দেহের তাপমাত্রা কমাতে পারে বৈদ্যুতিক ফ্যান। এ ক্ষেত্রে ফ্যানের বাতাসে মানুষের দেহের ঘাম দ্রুত বাষ্পীভূত হয়ে যায়। আর এ কারণে তাপও কমে যায় দেহের। কিন্তু বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি বিপরীত কাজ করতে পারে।
বয়স যখন ৬০ পার হয়ে যায় তখন ফ্যানের বাতাসের এ বিপরীত ফল দেখা দিতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সাম্প্রতিক এক গবেষণাতেও বিষয়টির প্রমাণ মিলেছে।
বয়স্ক ব্যক্তিদের হৃৎস্পন্দন ও শরীরের তাপমাত্রার কারণে এমনটা হতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা। বয়স্কদের দেহের তাপমাত্রা হতে পারে ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গবেষকরা বলছেন, ফ্যান ব্যবহার করে তারা যখন ঠাণ্ডা হওয়ার চেষ্টা করেন তখন তাদের দেহের তাপমাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। এ বিষয়ে গবেষণাটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে জেএএমএ জার্নালে।
এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের সাউথওয়েস্টার্ন মেডিকেল সেন্টারের ইন্টারনাল মেডিসিনের গবেষক ক্রেগ ক্র্যানডাল। তিনি বলেন, ‘যদিও পার্থক্যটি খুব একটা বড় নয়, তবুও তাপমাত্রা বিষয়ে এ পার্থক্য ক্লিনিক্যালি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে তাপ যখন বেড়ে যায় তখন এ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।’
ক্র্যানডাল বলেন, ‘আমরা জানি, তরুণ ও অল্পবয়সী ব্যক্তিরা ফ্যানের মাধ্যমে দেহের ঘাম বাষ্পীভূত করেন। এতে তাদের দেহের তাপমাত্রা কমে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ঘাম নিঃস্বরণের এ ক্ষমতা পাল্টে যায় এবং গরমের সময় ফ্যান ব্যবহারের কারণে দেহের তাপমাত্রা ও হৃৎস্পন্দনের ধকল বাড়তে পারে।’
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য গবেষকরা বেশ কিছু বয়স্ক ব্যক্তির ওপরও গবেষণা চালান। তাদের বয়স ছিল ৬০ থেকে ৮০ বছর। এ সময় তাদের একটি কক্ষে দুই ঘণ্টা করে রেখে বিভিন্ন তাপমাত্রা ও আর্দ্রতায় বিষয়টি পরীক্ষা করা হয়।
গবেষকরা জানান, বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফ্যান খুব একটা কার্যকর নয়। মূলত তাদের দেহের ঘাম নিঃস্বরণ ও অতিরিক্ত গরমে দেহের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের ফলে এমনটা ঘটে। তবে অতিরিক্ত গরমের ক্ষেত্রে এ প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও অল্প গরমে ফ্যান কার্যকর বলে মনে করছেন গবেষকরা।