‘ফণী’ গোটা দেশে অভিশাপ, এই গ্রামে আশীর্বাদ

কলকাতা টাইমস :
ফণী আতঙ্ক বিরাজ করছে ভারতজুড়ে। জনগণ বলছে অভিশাপ। বিভিন্ন রাজ্যে ইতোমধ্যেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং উপকূলবর্তী এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু এর ব্যতিক্রম অন্ধ্র প্রদেশের বিজয়নগরাম। সেখানে ফনী আশীর্বাদ। কারণ এখানকার মানুষ খরা এবং তীব্র জলের সংকটে দিন কাটাচ্ছে বহু দিন ।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে জলের সংকট নজীরবিহীন আকার ধারণ করেছে। গত ৫০ বছরে এমন ভয়াবহ সংকটে পড়েনি ওই গ্রামের মানুষ।প্রতিদিন মাত্র দেড় কোটি লিটার জল পায় সেখানকার মানুষ। কিন্তু, চার লাখ জনসংখ্যার জন্য সেখানে প্রতিদিন পানির প্রয়োজন সাড়ে জলই চার কোটি লিটার। বিজয়নগরাম জেলায় অবস্থিত চম্পাবতী, ঝানঝাবতীসহ বেশিরভাগ নদীর জলই শুকিয়ে গেছে।
এমন খরা আর তীব্র জল সংকটের কারণে সেখানকার লোকজন ঘূর্ণিঝড় ফণীর জন্য অপেক্ষা করছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতে খরাপ্রবণ এলাকাটির জল সংকট কমবে। সে কারণেই তারা ফণীকে স্বাগত জানাচ্ছে। যদিও জেলার বেশ কিছু স্থানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে ঘূর্ণিঝড়।
ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও ঘূর্ণিঝড়কে আশীর্বাদ হিসেবেই দেখছেন বিজয়নগরামের মানুষ। আগামী কয়েকদিন সেখানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদী-নালা জলে ভরে উঠবে এবং ভূগর্ভে জলের চাহিদা কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিজয়নগরামের কালেক্টর এম.হ্যারি জহরলাল বলেন, আগামী কয়েকদিনে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে জেলার বিভিন্ন স্থানে খাবার জলের সংকট কমে যাবে। তবে ঝড়ের কারণে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনাকেও যথেষ্ঠ গুরুত্বে সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা কোন ঝুঁকি নিতে চাই না। বিভিন্ন স্থানে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে এবং বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
বিজয়নগরামের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট এ আর দামোদার বলেন, ফণীর প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতিতে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে সাড়া দিতে প্রস্তুত রয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী, দমকল বাহিনী, পুলিশ, এনডিআরএফ, নৌবাহিনী এবং অন্যান্য বিভাগের লোকজন।
ওড়িশা উপকূল থেকে ঘূর্ণিঝড়টি ৪৫০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণী। শক্তি বাড়িয়ে ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার করে এগিয়ে আসছে মারাত্মক এই ঘূর্ণিঝড়। বুধবার সন্ধ্যায় পুরী থেকে এর দূরত্ব ছিল ৬১০ কিলোমিটার। আর কলকাতা এবং দিঘা থেকে এর দূরত্ব ছিল যথাক্রমে এক হাজার এবং ৮শ কিলোমিটার।