আঙুল চাটা বা নখ কামড়ানো শিশুরা বিশেষ সুবিধাভোগী !

কলকাতা টাইমস :
অনেক শিশুদের মায়ের কোলে শুয়ে আঙুল চুষতে দেখা যায়। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়, যে শিশুদের আঙুল চাটা ও আঙুল বা নখ কামড়ানোর অভ্যাস রয়েছে তাদের জীবনে ভালো কিছু ঘটতে পারে। এটা বদভ্যাস হলেও বিশেষজ্ঞরা ক্লাসিক বদভ্যাস বলতে চান।
নিউজিল্যান্ড এবং কানাডার ১ হাজার শিশুর ওপর গবেষণা পরিচালিত হয়। দেখা যায়, যারা আঙুল চোষে ও কামড়ায় তাদের মধ্যে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে। সেই সঙ্গে মুখের কাজেও তারা দক্ষ হয়ে ওঠে।
প্রধান গবেষক ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির ম্যালকম সিয়ার্স জানান, এখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছতার বিষয়টি প্রশ্নের সম্মুখীন। আঙুল চাটা বা নখ কামড়ানোর কারণে শিশুদের মুখে ধুলোবালি প্রবেশ করে। এতে তারা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু আরেকটি ভালো জিনিস ঘটে যায়। ধুলোবালিতে তারা অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং তাদের অ্যালার্জির সমস্যা কম দেখা দেয়।
গবেষকরা ডিউনডিন মাল্টিডিসিপ্লেনারি স্টাডি থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। নিউ জিল্যান্ডের ওই অঞ্চলে ১ হাজার ৩৭ জন শিশুর জন্ম হয় ১৯৭২-১৯৭৩ সালের মধ্যে। ৫, ৭, ৯ এবং ১১ বছর বয়সী শিশুদের আঙুল চোষা ও কামড়ানোর অভ্যাস রেকর্ড করা হয়েছিল। পরে তাদের ত্বকের পরীক্ষা করা হয়। দেখা গেছে, বালি, ঘাস এবং পোষা প্রাণী থেকে যেসব অ্যালার্জি দেখা দেয় তাতে অন্যদের চেয়ে কম আক্রান্ত হয় ওইসব শিশুরা।
গবেষকরা দেখেছেন, শিশুদের ৩১ শতাংশের এ অভ্যাস রয়েছে। তাদের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা করে এসেছে অন্যদের অপেক্ষা ৩৮ শতাংশ। যাদের আঙুল চাটা ও নখ কামড়েছে তাদের অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাস ৩১ শতাংশ কম থাকে। এমনকি এই সুবিধা ৩২ বছর বয়সী মানুষের মধ্যেই দেখা গেছে।
তবে এ ঘটনার পেছনে কি ধরনের জৈবিক প্রক্রিয়া কাজ করে তার সম্পর্কে ধারণা নেই বিশেষজ্ঞদের। এ কাজ অস্বাস্থ্যকর। মুখে জীবাণু প্রবেশ করে। তবে কিভাবে এসব জীবাণু প্রতিরোধে দেহ কাজ করে তা সত্যিই বিস্ময়কর। আসলে এ অভ্যাসের ফলে তাদের দেহের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এসব তথ্য দেন নিউ জিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব অটাগোর এপিডেমিওলোজিস্ট রবার্ট জে হ্যানকক্স।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা না দিতে পারলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, রোগ প্রতিরোধীব্যসস্থা সক্রিয় হওয়ার ফলে তারা বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি থেকে বেঁচে যায়।
কাজেই শিশুকালে আঙুল ও নখ চাটা বা কামাড়নোর অভ্যাস যাদের গড়ে ওঠে তাদের রোগ প্রতিরোধীব্যবস্থা অন্যদের চেয়ে আগে পরিপক্কতা লাভ করে।