মানুষের ঘামের নেশায় রোজ রাতে বিছানায় এই বিষাক্ত সাপ!
তাই, আরাম ঘুমের জন্য বিছানায় যাওয়ার আগে সাবধান। পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবদের কাছে এই ঘামের গন্ধ অসহ্য হলেও তা অন্য কাউকে যোগাচ্ছে নেশা। তাই অবশ্যই ঘুমিয়ে পড়ার আগে ভাল করে দেখে নিন বিছানা। মশারির ভেতর ভাল করে দেখুন কালাচ সাপ নেই তো। আর যদি ভাল করে না দেখেই গা এলালেন আপনার সাধের বিছানায়, আর সেখানেই ঘাপটি মেরে রয়েছেন তিনি। তবে যে কোনও সময় কালাচের কামড়ে মৃত্যু হতে পারে আপনার। কেও টেরও পাবে না। কারণ আদতে ভীষণ শান্ত স্বভাবের এই কালাচ। যার দংশনে নিমেষে অনিবার্য মৃত্যু।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে কালাচ সাপ উদ্ধারের ঘটনায় এমনই সাবধান বাণী শোনালেন উত্তরবঙ্গের বেলাকোবা রেঞ্জের বনাধিকারীক সঞ্জয় দত্ত। রঘুনাথপুর এলাকার ফরেস্ট রোডে মদন চৌধুরীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় একটি কালাচ সাপ। সাপটিকে শোওয়ার ঘরে খাটের নীচে দেখতে পান পরিবারের লোকেরা। ফণাহীন সাপটিকে দেখে সকলে প্রথমাবস্থায় আশ্বস্ত হয়েছিলেন যে সেটির কোনও বিষ নেই। তবে পরে সর্প বিশারদদের কথা শুনে সকলের চক্ষু চড়ক গাছ। পরিবারের লোকেদের রক্ত হিম হয়ে যাওয়ার উপক্রম।
কালাচের উপস্থিতির খবর পেয়ে ফরেস্ট রোডের ওই বাড়িতে পৌঁছে প্রায় সাড়ে তিন ফিট লম্বা সাপটিকে উদ্ধার করেন সাপ প্রেমী মনজিত্ দেব। লোকালয়ে ঘরের ভেতর কালাচ উদ্ধারের ঘটনায় বৈকুণ্ঠপুর বেলাকোবা রেঞ্জের বনাধিকারীক সঞ্জয় দত্ত জানান যে খুবই শান্ত স্বভাবের হলেও সাপটির বিষ খুবই তীব্র। কাউকে কামড়ালে ব্যথা না হওয়ায় প্রথমাবস্থায় কেউ বুঝতেই পারবেন না যে তাঁকে সাপে দংশন করেছে। এমনকি কাটা জায়গা ফুলবেও না। থাকবে না কোনও অনুভূতিও। এই অবস্থায় অনেকের কাছেই সাপের কামড়ের ব্যাপারটি প্রথমে অজানাই থেকে যায়।
তবে ধীরে ধীরে বিষ শরীরে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় গলা ও পেটের ব্যথা এমনকি অস্বস্তি বোধের মত লক্ষণগুলিও। সময়ে চিকিত্সার সুযোগ না হলে যার পরবর্তী পর্যায় মৃত্যু। কালাচকে কেউ কেউ ইন্ডিয়াম ক্রেট, কেউ আবার ব্ল্যাক ক্রেট এমনকি ঘামচিতি নামেও ডাকেন। মানুষের গায়ের ঘামের গন্ধ এদের খুবই প্রিয়।
ঘামের গন্ধের টানে এরা মাঠ ছেড়ে মানুষের শোওয়ার ঘরে রীতিমতো বিছানায় উঠে লুকিয়ে পড়ে। ঘুমের ঘোরে গায়ে হাত পা পড়লে তখনই কামড় বসিয়ে পালিয়ে যায়। পাশাপাশি বনাধিকারীক এ কথাও জানিয়েছেন যে, কোনও কিছুর কামড়ের ঘটনা ঘটুক না কেন। অহেতুক ভীত হওয়া নয়। ঠাণ্ডা মাথায় এক মুহূর্তও দেরি না করে সোজা হাসপাতালে চলে যাওয়া উচিত।