দুই সেকেন্ডেই তাজা
কলকাতা টাইমস :
অঙ্গভঙ্গি ধারণার চেয়েও অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে। অবসরপ্রাপ্ত আর্গোনমিস্ট এবং হিউম্যান পারফরমেন্স বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ম্যাক্স ভারক্রুইসেন মানুষের দৈহিক ভঙ্গির প্রভাব বিষয়ে অনেক গবেষণা করেছেন। একেক অঙ্গভঙ্গিতে দেহ কিভাবে কাজ করে এবং সেখান থেকে কি কি সুবিধা আদায় করা যায় তা নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ। এসব ভঙ্গির ব্যাহারে মাত্র ২ সেকেন্ডের মধ্যেই আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ।
১. দুপুরে খাওয়ার পর একটা ঝিমুনিভাব চলে আসে। এটা বেশ বিরক্তিকর অনুভূতি। একমাত্র সোজা হয়ে বসলে বা দাঁড়ালে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। এতে প্রতি মিনিটে হৃদযন্ত্র ১০ বার বেশি স্পন্দিত হয়। প্রতিক্রিয়ায় গতিশীল হয় দেহ। এর সঙ্গে মনোযোগ বাড়ে। বিশেষ করে অফিসে জরুরি কাজের সময় চেয়ারে শিঁরদাড়া সোজা করে বসলে দারুণ উপকার মেলে। এ ছাড়া ঝিমুনিভাব দূর হবে এমন যেকোনো অঙ্গভঙ্গি আপনার জন্যে উপকারী বলে গণ্য হতে পারে।
২. কঠিন কোনো কাজের প্রস্তুতি নিতে চলেছেন? এতে মনোযোগ ঢালতে আরামদায়ক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসুন। দেহ যত আরাম পায় ততই মনোযোগ নষ্ট হতে থাকে। শক্তিহীন মনে হতে থাকে। কিন্তু অস্বস্তিকর অবস্থায় সজাগ থাকে দেহ। তাই এমন অবস্থানে চলে যান যা একটু কষ্টকর বলে মনে হবে। শক্ত চেয়ারে বসে কাজটি করুন। কঠিন কাজগুলো দ্রুততার সঙ্গে করতে হলে আরামদায়ক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসুন। তবে অবস্থা যেন আপনার জন্যে যন্ত্রণাদায়ক না হয়ে ওঠে। কেবলমাত্র আয়েশিভাব বিদায় নেবে এমন পরিবেশ আনুন।
৩. বিষণ্ন এবং পরাজিত মনের হতাশা ভর করলে আমাদের দেহ শক্তি হারিয়েছে বলে মনে হয়। তখন কুঁজোভাব নিয়ে বসে থাকা সাধারণ দৃশ্য। এমনিতেই যারা এমনভাবে বসার অভ্যাস গড়ে তুলেছেন তাদের মধ্যে মন খারাপ অবস্থা চলে আসে। সান ফ্রান্সিসকো স্টেট ইউনিভার্সিটি হেলথ এডুকেশন বিভাগের প্রফেসর এরিক পিপার তার গবেষণায় দেখিয়েছেন, দেহের নানা ধরনের অঙ্গভঙ্গিতে অবসাদ ভাব চলে আসে। একটি চেয়ার জবুথবু হয়ে বসে থাকলে নৈরাশ্যবাদী নানা চিন্তা চলে আসে। এভাবে বসার কারণে অসহায় মনে হয় নিজেকে। ইতিবাচক চিন্তা আনতে মস্তিষ্ককে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। এভাবে বসার কারণে টেসটোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে আসে। আর কর্টিসলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। দ্বিতীয় হরমোনটি মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণত এমন অঙ্গভঙ্গি পরাজিত পশু বা প্রাণীর মধ্যে দেখা যায়।
আশার ব্যাপর হলো, এমন ভঙ্গির বিপরীত অবস্থায় বিপরীত ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ, বুক টানটান করে বসলে আত্মবিশ্বাস কাজ করে মনে। বিজয়ী পশু বা প্রাণীর মধ্যে এমন ভঙ্গি লক্ষ্য করা যায়।
কাজেই আশাবাদী হতে এবং সময়কে ইতিবাচক করতে দৈহিক ভঙ্গি বেশ প্রভাবশালী বিষয়। মেজাজটাকে চাঙ্গা করতে এবং প্রাণশক্তি বৃদ্ধিতে এদের ব্যবহার জরুরি।