জালিয়াতির দায়ে গান্ধীর প্রপৌত্রীর সাত বছরের জেল
কলকাতা টাইমস :
সম্প্রতি গেছে মহাত্মা গান্ধীর প্রথম সত্যাগ্রহের দিন। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সেই আন্দোলন তাকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পথ দেখিয়েছিল। আর সেই দক্ষিণ আফ্রিকায়ই গান্ধীর নাতনির মেয়ের নামে উঠেছে প্রতারণার অভিযোগ।
একে ভারতের লজ্জা ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে। প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন মহাত্মা গান্ধীর নাতনির মেয়ে আশিসলতা রামগোবিন।
তার বিরুদ্ধে মোট ৮ লাখ ৩১ হাজার ৩৮০ ডলার মূল্যের প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই শিল্পপতি তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন।
দোষী প্রমাণিতও হয়েছেন গান্ধীর নাতনির মেয়ে। তাই কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। প্রতারণা ও জালিয়াতির দায়ে সাত বছরের জন্য জেলে থাকতে হবে ৫৬ বছরের আসিসলতাকে ।
ডারবানের আদালত এই রায় দিয়েছেন। ঘটনা হলো- দক্ষিণ আফ্রিকায় বহুবার তিনি জেলে গেছেন। ভারতের বর্ণবিদ্বেষ ও নানা আইন নিয়ে লড়াই করে তিনি কারাবরণ করেছিলেন।
তিনি ভারতের জাতির জনক। সততা, পরিচ্ছন্নতা, শান্তির অন্যতম প্রতীক। আর তারই নাতনির মেয়ের গায়ে শেষে প্রতারণার তকমা লেগেছে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি দুই শিল্পপতিকে ঠকিয়েছেন। তারা আশিসলতার বিরুদ্ধে ৮,৩১,৩৮০ ডলার প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন।
এই খবর মিলেছে অনুসন্ধান সংস্থা ‘হক্স’-এর মারফত। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতারণা অনুসন্ধান সংস্থা ‘হক্স’। তার প্রধান কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার হাংওয়ানি মুলাউদজি জানিয়েছেন, গান্ধীর বংশধরের হেফাজত থেকে বেশ কয়েকটি নকল রসিদ ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে তিনটি কন্টেইনার বোঝাই চাদর।
অভিযোগ রয়েছে, ওই সব নকল নথি, রসিদপত্র দেখিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই শিল্পপতি ও বিনিয়োগকারীর থেকে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন মহাত্মার প্রপৌত্রী। কিন্তু পরে জানা যায়, কোনো দ্রব্যই রপ্তানি করা হয়নি।
হাংওয়ানির মুলাউদজির আরো দাবি, নকল কাগজপত্র দেখিয়ে তিনি ব্যবসা ফেঁদে বসেছিলেন। কী ছিল সেই ব্যবসা? জানা গেছে, বেসরকারি হাসপাতাল গ্রুপ ‘নেটকেয়ার’-কে বিছানা সরবরাহের বরাত জোগাড় করেছিলেন আশিসলতা রামগোবিন। সেই বিছানা কোথা থেকে আনাতেন তিনি? জানা গেছে, ভারত থেকে জাহাজে কন্টেইনার বোঝাই বিছানা আমদানি করেন তিনি।
আশিসলতার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে। এসআর মহারাজ নামে দক্ষিণ আফ্রিকার আরেকজন শিল্পপতির কাছ থেকে ৬২ লাখ র্যান্ড নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিনিয়োগ করা অর্থের মোটা অঙ্কের সুদ মিলবে বলে মহারাজকে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এ-ও জানিয়েছিলেন, ওই অর্থ বিভিন্ন শুল্ক মেটাতে খরচ করা হবে। অভিযোগ রয়েছে, একই কৌশলে অন্য এক বিনিয়োগকারীর থেকে ৫২ লাখ র্যান্ড অগ্রিম হিসাবে আদায় করেছিলেন গান্ধীর প্রপৌত্রী।
জানা গেছে, তিনি বিখ্যাত মানবাধিকারকর্মী ইলা গান্ধী এবং মেওয়া রামগোবিনের সন্তান। তারা গান্ধীর দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকার সময় ঐতিহাসিক ফিনিক্স চুক্তিপত্র উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।