তিন দিন উপোসে করুন নতুন জীবন পান, কিভাবে …
কলকাতা টাইমস :
বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা কারণে মানুষ সারাদিন বা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খাবার গ্রহণে বিরত থাকে, রোজা রাখে বা উপোস পালন করে। ধর্মীয় কিংবা আধ্যাত্মিক কারণে ছাড়াও শরীরের উপকার হবে, এমন ধারণাও রয়েছে অনেকের। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে টেলিগ্রাফ।
সম্প্রতি এক গবেষণার ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তিন দিন উপোস করা হলে তা দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা আমূল পরিবর্তন করে। এতে দেহের শ্বেত রক্তকণা অনেকাংশে বেড়ে যায়, যা জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কিছু সময়ের জন্য খাবার গ্রহণে বিরত থাকার ফলে দেহের কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণ, হৃদরোগের সম্ভাবনা কমানো ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়। এতে দীর্ঘ জীবনের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তবে চিকিৎসকরা জানান, স্বাস্থ্যগত এ উপকারিতা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে।
এটি দেহের জন্য তখনই উপকারী হবে, যখন তার শুরুতে ও শেষে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হবে। অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হলে এর উপকারিতা থাকবে না বরং তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
এ ছাড়া খাবারে বিরতি দেওয়ার সময় কিছু সাময়িক সমস্যা হতে পারে। সমস্যাগুলোর মাঝে রয়েছে মাথাব্যথা, মুড খারাপ হওয়া ও মনোযোগ দিতে ব্যর্থতা। তবে এ সমস্যাগুলো বেশি হয় উচ্চমাত্রায় ফ্যাট ও চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ায় অভ্যস্তদের মাঝে। এ ধরনের খাবারগুলো হঠাৎ বাদ গেলে দেহ বিষয়টিকে বিপদ হিসেবেই বিবেচনা করে। কিন্তু যারা আগে থেকেই স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে অভ্যস্ত, তাদের এতে প্রতিক্রিয়া কম হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে সারাদিন যদি খাবারে বিরতি দেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে একবেলা করে বিরতি দেওয়া যেতে পারে। এতে অভ্যস্ত হওয়ার পর সারাদিন খাবার না খেয়েও থাকা যাবে।
একবার সারাদিন খাবারে বিরতি দেওয়ার পরদিন এ কাজে বিরতি দেওয়া যেতে পারে। এরপর আবার তা শুরু করা যায়। এতে অনেকের যথেষ্ট উপকার পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক ভল্টার লঙ্গো জানিয়েছেন, না খেয়ে থাকলে রক্তে কিছু উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয়। টিউমার ও ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষগুলো ওইসব উপাদান সংগ্রহ করেই বেঁচে থাকে এবং বিস্তার লাভ করে। তাই এ ধরনের রোগের চিকিৎসার সময় না খেয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় উপাদানের অভাবে রোগগ্রস্ত কোষগুলো মরে যায়।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াকে খাবারে বিরতি দেওয়ার ক্ষেত্রে এটি সবার প্রথম পদক্ষেপ বলে মনে করছেন তারা। কারণ, স্বাস্থ্যকর খাবারে অভ্যাস না করলে খাবারে বিরতির কোনো উপকারিতা পাওয়া নাও যেতে পারে।