১০৬ বছর আগের খুনিকে খুঁজতে করিডোরে হাঁটে তরুণীর প্রেতাত্মা
একশ ১৪ বছর পুরনো হোটেলের করিডোরে ঘুরে বেড়ায় এক তরুণীর প্রেতাত্মা। শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। সে নাকি এখনো জানতে চায়‚ কে তার ওষুধে বিষ মিশিয়েছিল। এই ভৌতিক অভিজ্ঞতা নাকি অনেকেরই হয়েছে মুসৌরির দ্য স্যাভ্যয় হোটেলে।
১৯০২ সালে প্রথম অতিথি আপ্যায়ন করে এই হোটেল। ব্রিটিশ আমলে বাড়তে থাকে মুসৌরির গুরুত্ব। ওই হোটেলটি ছিল শৈলশহর মুসৌরির গর্ব বা ল্যান্ডমার্ক। ছুটি কাটাতে পাহাড়ে গিয়ে ওই হোটেলই ছিল ব্রিটিশদের বাঁধা ঠিকার্না।
১৯৬০ সালের পর থেকে কমতে থাকে দ্য স্যাভ্যয়-এর গরিমা। প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে থাকে অন্য নতুন হোটেলেদের থেকে। ২০০৯ সালে হোটেলটি কিনে নেয় আইটিসি ওয়েলকাম গ্রুপ। ধীরে ধীরে নিজের হারানো সম্মান ফিরে পেতে থাকে দ্য স্যাভ্যয়।
এদিকে ১৯১১ সালে নিজের সেরা সময়ের সর্বোচ্চ শিখরে ছিল এই হোটেলটি। সে বছরই ওইখানে থাকতে গিয়েছিলেন গার্নেট ওর্ম। তিনি ছিলেন স্পিরিচুয়ালিস্ট। গিয়েছিলেন লখনৌ থেকে। তার সঙ্গে ছিলেন সঙ্গিনী আর এক স্পিরিচুয়ালিস্ট ইভা মাউন্টস্টিফেন। তিনি নাকি স্ফটিক গোলকে ভবিষ্যৎ দেখতে পেতেন।
একদিন লখনৌ ফিরে যান ইভা। হোটেলে থেকে যান গার্নেট। এক সকালে দেখা যায় নিজের ঘরে রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ৪৯ বছর বয়সী গার্নেটের। অটোপ্সি রিপোর্টে জানা যায়‚ গার্নেটের মৃত্যু হয়েছে সায়ানাইড জাতীয় বিষে। সেই বিষ রাখা হয়েছিল গার্নেটের ওষুধের শিশিতে। কিন্তু কে এই কাজ করেছিল‚ আজও তার সমাধান হয়নি।
কিছুদিন পরে রহস্যজনক মৃত্যু হয় তার চিকিৎসকেরও। স্ট্রিকনিনের প্রভাবে। সেই রহস্যেরও কোনো সমাধান হয়নি।
গার্নেটকে হত্যার দায়ে ধরা হয় ইভাকে। কিন্তু প্রমাণের অভাবে তিনি ছাড়া পেয়ে যান আদালতে। এখনো নাকি ওই হোটেলের করিডোরে নিশুতি রাতে দেখা যায় গার্নেটের অশরীরী আত্মাকে। খুঁজে বেড়ান নিজের হত্যাকারীকে। জানতে চান কে সেই ঘাতক যে, তার ওষুধের শিশিতে বিষ রেখেছিল।
এই ভৌতিক কাহিনি নিয়ে আগাথা ক্রিস্টি ১৯২০ সালে লিখেছিলেন তার প্রথম উপন্যাস। একই ঘটনার ছায়া খুঁজে পাওয়া যায় রাস্কিন বন্ডের লেখাতেও।
মুসৌরিতে হিমালয়ের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে ঘন রহস্যের আধার‚ দ্য স্যাভ্যয় হোটেল।