পুলিশের ঘাড়ে ‘ভূত’! তাড়াতে ডাক পড়ল ‘ওঝা’ দের
কলকাতা টাইমস :
পুলিশ কাঁপছে ভূতের ভয়ে। তাই ভূত তাড়াতে ডাকা হল ওঝা, থুড়ি ভূতসন্ধানী গোয়েন্দা-বাহিনীকে ।
এটা অবশ্য ঠিক থানা বা ফাঁড়ি নয়, পুলিশের ট্র্যাফিক গার্ডের ঘটনা। ভিতরে পুলিশ ব্যারাকে ডিউটি শেষে ক্লান্ত পুলিশকুলের রীতিমতো ঘুম চুরি গিয়েছে ভূতের উপদ্রবে। শেষ পর্যন্ত পুলিশভায়াদের কার্যত ওঝার শরণ নিতে হয়েছে। ওঝা মানে, ভূতসন্ধানী গোয়েন্দা-বাহিনী। ভূতের বাড়িতে পর পর দু’রাত কাটিয়েও যাঁরা ভৌতিক কিছুই খুঁজে পাননি।
ঘটনাস্থল, জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ড। ১০২, শোভাবাজার স্ট্রিট। কলকাতার নানা আটপৌরে চিহ্নের মাঝে মোটা মোটা থাম শোভিত যে বাড়ি নজর কাড়ে তার রাজকীয়তায়। নকশাল আমলে ১৯৭১-’৭২ সাল থেকেই ভাগ্যকুলের রায়বাড়ির শরিকদের থেকে যে বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা। “তবে ভূতের গল্প আগে শোনা যায়নি! এ সব বছর দু’-তিনের ব্যাপার”, বলছিলেন জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডে তরুণ বয়সে সার্জেন্ট হিসেবে কর্মরত, বর্তমানে কলকাতার এক উঁচুতলার ট্র্যাফিক কর্তা। রায়বাড়ির ছেলে, পুলিশের গার্ডের বাড়িওয়ালা কৃষ্ণনাথ রায় থাকেন লি রোডে। বলছেন, “এ বাড়ি তো বাবার ঠাকুরদা, জানকীনাথ রায়ের আমলের। নকশাল আমলে উত্তর কলকাতায় থাকা যাচ্ছিল না বলেই আমরা বাড়িটা ভাড়া দিয়ে পালাই! তখন আমার তিন-চার বছর বয়স। কাকারা এখনও বেঁচে। বাড়িটায় ভূতের উপদ্রব তো আগে শুনিনি!”
অধুনা রিজেন্ট পার্ক ট্র্যাফিক গার্ডে বদলি হওয়া এক সার্জেন্টের কিন্তু চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। বলছেন, “এক রাতই আমি জোড়াবাগান গার্ডের ব্যারাকে থেকেছিলাম! মাঝরাতে গালে সপাটে চড় খেয়ে ঘুম ভাঙল! অথচ কেউ কোত্থাও নেই! ঘাড় মটকায়নি এই রক্ষে!” বেহালায় বদলি আর এক পুলিশ আধিকারিকও রাতভর বিটকেল সব আওয়াজে কুঁকড়ে জেগে বসে থাকার কথা শুনিয়েছেন।
জটিল মামলার রহস্যভেদে পুলিশের প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর বা শখের গোয়েন্দাদের সাহায্য নেওয়ার গল্প বাঙালি অনেক শুনেছে। এ যাত্রায় ভূতের চাপে খাস লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা ‘ডিটেক্টিভস অব সুপারন্যাচারাল’ বলে ভূত-শিকারীদের সাহায্য নেন।