November 22, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular ধর্ম

এই গাছের একটিও শিকড় কাটলে ঈশ্বরও আপনাকে বাঁচাতে পারবে না !

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

পনি ভূত কিংবা অশরীরী আত্মায় বিশ্বাস না করতেই পারেন। কিন্তু এটা মানতেই হবে যে, পৃথিবীতে এমন অনেক রহস্যই রয়েছে, যার যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা পাওয়া কঠিন। পঞ্জাবের ফতেহগড় সাহেব জেলার অন্তর্গত চরোটি খেড়ি গ্রামে স্থিত একটি প্রাচীন বট গাছকে কেন্দ্র করে দানা বেঁধেছে এরকমই কিছু অদ্ভুত রহস্য। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস, এই গাছের একটি শিকড় কাটলেই, যিনি সেই শিকড় কাটছেন, কিছুদিনের মধ্যেই তাঁকে ঢলে পড়তে হবে অবধারিত মৃত্যুর কবলে।

এই বট গাছের আশেপাশে রয়েছে জনবসতি এবং কৃষিজমি। আর পাঁচটা বট গাছের মতো এই গাছের শিকড়ও সুযোগ পেলেই মাটির ভেতর দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের জমিতে। অনেক সময়ে পার্শ্ববর্তী কৃষিজমিতেও হানা দেয় গাছটির শিকড়। মাটির তলায় বট গাছের মোটা শিকড় থাকলে চাষবাসের অসুবিধা হয়। ফলে সেই শিকড় কেটে ফেলাই বিধেয়। কিন্তু চরোটি খেড়ির কৃষকরা এই গাছের শিকড় ভুলেও কাটেন না, সে তাঁদের কৃষিকাজে যত অসুবিধাই হোক না কেন। প্রয়োজন হলে ওই জমিতে চাষবাস বন্ধ করে তাঁরা চলে যান। কিন্তু গাছের শিকড় তাঁরা কাটবেন না। কারণ স্থানীয় বিশ্বাস, এই বট গাছের একটি মূলও যিনি কাটবেন, শিকড় কাটার কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর নিজের, অথবা তাঁর কোনও নিকটজনের মৃত্যু হবে।

গ্রামবাসীরা মনে করেন, এই বট গাছের বয়স অন্তত ৫০০ বছর, এবং এই গাছের অলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে। গ্রামের বয়স্ক মানুষ অনিল চৌহান জানালেন, “আমি আমার জীবনে অনেক মানুষ দেখেছি, যারা ওই গাছের শিকড় কাটার কয়েকদিনের মধ্যেই মারা গিয়েছে। আমাদের যৌবনে গুরপ্রীত নামের এক চাষির মৃত্যুর কথা মনে আছে। তার জমিতে ওই গাছের শিকড় বেড়ে গিয়েছিল বলে সে শিকড়টা কেটে দিয়েছিল। কিন্তু তার সাত দিনের মধ্যে কলেরা হয়ে সে মারা যায়। বছর দশেক আগেও বলবিন্দর নামের এক যুবক লোকবিশ্বাসকে ভুল প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে সাহস করে বট গাছটির একটি শিকড় কেটেছিল। তার দিন দশেকের মাথায় ছেলেটির বউ গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। সেই থেকে আর কেউ গাছের শিকড় বা ডালপালা কাটার সাহস করে না। আর গাছটি কাটার তো প্রশ্নই ওঠে না। “

পঞ্জাব বনদফতরের আধিকারিক গুরপ্রীত মান অবশ্য এইসব অলৌকিক তত্ত্ব মানতে নারাজ। তিনি বলছেন, “বনদফতরের কর্মীরা ওই গাছটি পরীক্ষা করেছিলেন। ওটি অতি সাধারণ একটি বট গাছ। গাছের শিকড় কাটার পরে মৃত্যুর যে ঘটনাগুলি ঘটেছে, তা নিতান্তই কাকতালীয়। গাছের শিকড় না কাটলেও ওই সমস্ত মৃত্যু ঘটত। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণও রয়েছে। হ্যাঁ, গাছটি প্রাচীন ঠিকই। কিন্তু তার বয়স মোটেই ৫০০ বছর নয়। বড়জোর শ’খানেক বছরের পুরনো হবে গাছটি। বট গাছের পক্ষে ওটা এমন কিছু বেশি বয়স নয়।”

চরোটি খেড়ির বাসিন্দাদের কাছে অবশ্য গাছটি নিছক ভয়ের সামগ্রী নয়, বরং শ্রদ্ধা উদ্রেককারীও। কারণ তাঁদের বিশ্বাস, এই গাছে বৃক্ষদেবতার অধিষ্ঠান। তাই মন থেকে কিছু চাইলে, এই গাছ সেই মনোবাসনা পূরণ করে। গাছটিকে কেন্দ্র করে তাই পূজার্চনাও লেগেই থাকে। তাছাড়া গাছটির অদূরেই রয়েছে একটি প্রাচীন শিব মন্দির। তাতে স্থানীয় হিন্দুদের পাশাপাশি শিখ ধর্মাবলম্বীদের কাছেও বৃদ্ধি পেয়েছে এই গাছের আধ্যাত্মিক মাহাত্ম্য। সব মিলিয়ে ভয়ে এবং ভক্তির আবরণে আবৃত হয়ে জটাজূট নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে চরোটি খেড়ির প্রাচীন বটগাছ।

Related Posts

Leave a Reply