সন্তান বাঁচবে আশায় ১৮ ঘণ্টা ছোট্ট শরীর পিঁপড়ের পাতে
ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে স্থানীয় এক দম্পতির বিরুদ্ধে। তারা নানা রকম তুকতাক করার কাজে পরিচিত। তাদের মণ্ডলী বলে ডাকেন এলাকার লোকজন। বুধবার জলে ডুবে মারা যায় দু’বছরের ছোট্ট গৌরব। তার পরেই সেই মণ্ডলীই শিশুটিকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব বলে জানান।
মৃত শিশুর মা ববিতা মাইতি জানান, ছেলেকে বাঁচিয়ে তোলার কথা বলে মণ্ডলীর গুরু বলেন, শিশুকে অন্ধকার ঘরের মধ্যে দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখতে। ওই ঘরেই ধূপধুনো জ্বেলে, ফুলচন্দন দিয়ে যীশুর কাছে প্রার্থনা চলে বিকেল থেকে রাত। তারপরে মণ্ডলী ও তার লোকজন ওই ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। মৃত শিশুর পরিবারকে বলা হয়, দরজা না খুলতে। সকাল হলেই নাকি বাচ্চাটি বেঁচে উঠবে, মা বলে ডাকবে।
শোকসন্তপ্ত পরিবার তাই করে। সারা রাত কেটে যায়। সব মিলিয়ে প্রায় ১৮ ঘণ্টা। কিন্তু প্রাণ কীভাবে ফিরবে মৃত শিশুর! গতকাল, বৃহস্পতিবার সকালে মণ্ডলীকে জানানো হয়, কোনও সাড়া মেলেনি ঘর থেকে। মণ্ডলী তখনও আশ্বাস দেয়, ছেলে ভালই আছে। কিন্তু বেলা গড়িয়ে গেলেও শিশুর কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে পরিবারের লোকেরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখে পিঁপড়ে খুবলে খেয়েছে শিশুটির দেহ। দেহে ধরেছে পচন।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে পুকুরে পড়ে যায় বছর দুয়েকের গৌরব মাইতি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। কিছুক্ষণ পর জলে ভেসে ওঠে শিশুর দেহ। স্থানীয় মাধবনগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে শিশুটির দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে আনার পরই শুরু হয় কুসংস্কারের পালা।