অর্ধেক বিশ্ব কম দেখবে ২০৫০ এর মধ্যে
কলকাতা টাইমস :
বিশ্বের প্রায় ৫০০ কোটি মানুষের দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা দেখা দেবে। ২০৫০ সালের মধ্যে এ পৃথিবীর অর্ধেক মানুষের চোখ আর দূরের জিনিস দেখতে পাবে না। কেবলমাত্র কাছের বস্তু দৃষ্টিতে পরিষ্কার হবে। বিশেষ এ অবস্থার নাম মাইয়োপিক।
চোখের বিশেষ এ অবস্থা ‘নেয়রসাইটেন্ডনেস’ নামেও পরিচিত। অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরের একদল বিজ্ঞানী এক গবেষণার ভিত্তিতে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বিশ্বের অর্ধেক মানুষ চলতি শতকের মধ্যভাগে দৃষ্টিক্ষীণতায় আক্রান্ত হতে পারে। আর বিশেষ ধরনের এ অন্ধত্ব স্থায়ীত্ব পাবে বলেও জানান বিজ্ঞানীরা।
অপথালমোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়, এখন কাছের বস্তু বা দৃশ্য দেখার কাজে চোখের ব্যবহার হচ্ছে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। প্রায় সব বয়সী মানুষ কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের মতো যন্ত্রের পর্দায় প্রচুর সময় ব্যয় করছেন। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তাদের চোখে। তাই ২০৫০ সালের মধ্যে এই গ্রহের ৫০ শতাংশ মানুষই চোখে চশমা বা কনট্যাক্ট লেন্স নিতে বাধ্য হবে। আর জনসংখ্যার ১০ শতাংশ গুরুতর মাইয়োপিয়া রোগে আক্রান্ত হবে।
গবেষণায় আরো বলা হয়, ২০৫০ -র মধ্যে আমেরিকার ২৬০ মিলিয়ন মাইয়োপিকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০০০ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯০ মিলিয়ন। কানাডায় ২০০০ সাল নাগাদ মাইয়োপিকে আক্রান্ত ১১ মিলিয়ন মানুষেরে সংখ্যাটি ২০৫০ সালের মধ্যে ৬৬ মিলিয়নে উপনীত হবে।
এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে অভিভাবকের ভূমিকাই মূখ্য। শিশুরা যেন খুব বেশি সময় ধরে প্রযুক্তির পর্দায় পড়ে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে চোখের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অবস্থিত নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রায়ান হোল্ডেন ভিশন ইনস্টিটিউট এবং সিঙ্গাপুর আই রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকদের মতে, ভবিষ্যৎ দৃষ্টিক্ষীণতার জন্য পরিবেশগত কিছু কারণও দায়ী। যেমন পড়াশুনার অত্যধিক চাপ। আর দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে এই সমস্যার হার আরো বেশি। সেখানে ১৯ বছর বয়সীদের মাত্র সাড়ে ৩ শতাংশ সুস্পষ্টভাবে দেখতে পায়। ইউরোপে প্রায় ৫০ শতাংশ কিশোর-তরুণ মাইওপিয়ায় আক্রান্ত। অথচ তাদের মা-বাবার প্রজন্মেই ওই বয়সীদের দৃষ্টিক্ষীণতার হার ছিল ২৫ শতাংশের কিছু কম।