জলজ্যান্ত মিথ্যার ধরার পথ বাতলালেন হার্ভার্ডের মনোবিজ্ঞানী
কলকাতা টাইমস :
এ কথা সবাই জানেন, উসখুস করা বা চোখে চোখ না রাখতে পারা মিথ্যা বলার লক্ষণ। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের প্রফেসর অ্যামি কাডির মতে, কেবল এসব লক্ষণ দেখেই সত্যিকার অর্থে মিথ্যা ধরা যায় না। নতুন বই ‘প্রেজেন্স’-এ তিনি বলেছেন, কেবলমাত্র কারো চোখের দিকে তাকিয়ে থেকেই মিথ্যা ধরার চেষ্টা করলে আশাহত হতে হবে। বরং বিভিন্ন অংশের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য জলজ্যান্ত মিথ্যার চেহারা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যোগাযোগের নানা পন্থা যেমন- মুখভঙ্গি, আচরণ, অঙ্গভঙ্গি এবং কথার ধরনেও মিথ্যা লুকিয়ে রয়েছে।
কাডি বলেন, মিথ্যা বলা কঠিন বিষয়। কারণ এখানে একটি ঘঠনা ছাপিয়ে অন্য একটি গল্প বানিয়ে বলতে হচ্ছে। এই মিথ্যা বলার সঙ্গে মানুষের মাঝে এক ধরনের মানসিক যন্ত্রণা কাজ করতে থাকে। আর তা সামাল দিতে নানা প্রচেষ্টা চালাতে থাকেন মিথ্যাবাদীরা।পুরোপুরি গুছিয়ে মিথ্যা বলতে যা যা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন পড়ে তা আমাদের মস্তিষ্ক গুছিয়ে নিতে পারে না। তখন বেসামাল হয়ে অনেক কিছুই বেরিয়ে আসে। আর এসব লক্ষণ বুঝেই মিথ্যা ধরতে হয়।
এর জন্যে মানুষ কি বলছে এবং করছে তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।বিপরীতমুখী আবেগের বর্হিপ্রকাশ ঘটবে। যেমন- কণ্ঠে আনন্দ ঝরে পড়লেও মুখের ভঙ্গিতে বিষাদ থাকলে সেখানে কোনো গোলযোগ আছে বলেই বোঝা যায়।
অধিকাংশ মানুষ মিথ্যা ধরার ক্ষেত্রে মোটেও দক্ষ নন। যারা মিথ্যা ধরতে পারেন তারাও খুব বেশি পারদর্শী নন। আর বাকিরা ধারণা করে নেন। কিন্তু নিশ্চিত হতে পারেন না যে এটা মিথ্যা।
কাডি জানান, আমরা সবাই অন্যের বক্তব্যের ভাষার দিকেই বেশি বেশি মনোযোগ দিয়ে থাকি। বলার সময় তার আচরণ ও আবেগের প্রকাশ খেয়াল করি না।
কাডি এবং তার সহকর্মী ন্যান্সি এটকফ এ গবেষণায় দেখেছেন, ভাষা বুঝতে যাদের সমস্যা হয় তারা মিথ্যা শনাক্তে অন্যদের চেয়েও দক্ষ। তারা কথা বুঝছেন না। কিন্তু বক্তার আচরণ ও আবেগের তুলনা করে মিথ্যা বুঝতে পারছেন।
যখন মানুষ সত্য এবং মিথ্যা বুঝতে আগ্রহী থাকেন, তখন বক্তার মুখের ভাষাতেই খেয়াল করেন । ফলে তার অঙ্গভঙ্গি বা মুখায়ব দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যায়।