শোওয়ার ঘরে ঠাকুরের ছবি রেখেছেন নাকি? সর্বনাশ …
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
সাধারণত প্রতিটি বাঙালি বাড়িতেই আলাদা করে ঠাকুর ঘর তৈরি করা হয়ে থাকে। যেখানে নিত্য পুজোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এমন অনেক বাড়িও আছে যেখানে জায়গার অভাবে আলাদা করে ঠাকুর ঘরের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তারা এখন কী করবেন? কারণ শাস্ত্র এবং বাস্তু মতে তো শোয়ার ঘরে ঠাকুরের ছবি পর্যন্ত রাখা উচিত নয়! একেবারে ঠিক প্রশ্ন করেছেন। তাই তো এই প্রবন্ধের প্রথম ধাপে কেন শোয়ার ঘরে ঠাকুরের ছবি রাখা উচিত নয়, সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আর দ্বিতীয় ধাপে আলোকপাত করার চেষ্টা করা হবে শোয়ার ঘরে ঠাকুরের আসন পাতলেও কী কী নিয়ম মেনে চললে কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যাবে সে সম্পর্কে। এখন প্রশ্ন হল কী কী কারণে বেড রুমে ঠাকুরের ছবি পর্যন্ত রাখতে মানা করা হয়?
১. শোয়ার ঘর হল বাড়ির একেবারে প্রাইভেট পার্ট: বাড়ির এই অংশে স্বামী-স্ত্রী তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত উপভোগ করে থাকেন। তাই তো বেড রুমে ভগবানের ছবি বা মূর্তি রাখলে মারাত্মকভাবে নেগেটিভিটি তৈরি হয়। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে নেগেটিভিটি একেবারেই কিন্তু সাংসারিক জীবনের জন্য সুখের নয়। হিন্দু শাস্ত্রতেও কিন্তু এমন কথার উল্লেখ পাওয়া যায়। তাই বাড়িতে যদি আলাদা করে ঠাকুর ঘর থাকে, তাহলে ভুলেও ঠাকুরের ছবি বা মূর্তি শোয়ার ঘরে রাখবেন না যেন!
২. শোয়ার ঘর একেবারেই পবিত্র থাকে না: খেয়াল করে দেখবেন আমার অনেকেই বেড রুমে খাওয়া-দাওয়া করে থাকি। সেই সঙ্গে ড্রেস চেঞ্জ বা ঐ ধরনের অনেক কাজ করি, যা শোয়ার ঘরকে একেবারেই পবিত্র রাখে না। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে দেব-দেবীর স্থান পবিত্র জায়গায়, আপবিত্র জায়গায় নয়! এবার বুঝেছেন তো শেয়ার ঘরে কেন ঠাকুরের ছবি রাখতে মানা করা হয়।
৩. ঠাকুরের সামনে অ্যালকোহল পান নৈব নৈব চ: একাধিক প্রাচীন গ্রন্থে এমনটা লেখা রয়েছে যে ঠাকুরের ছবি বা মূর্তির সামনে বসে মদ্যপান করলে পরিবারে নেগেটিভি বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে ভগবানের নেকনজর সরতে থাকে পরিবারে সদস্যদের উপর থেকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খারাপ কিছু ঘটার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এই কারণেও শোয়ার ঘরে ঠাকুরের আসান পাততে মানা করা হয়। কারণ কোনও না কোনও সময় বেড রুমে ড্রিঙ্ক করতে করতে রিল্যাক্স করার ইচ্ছা সবার মনেই জাগে। ফলে খারাপ কিছু ঘটে যাওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
৪. শোয়ার ঘরে ঝগড়াও তো কম হয় না: সুখ-দুঃখ হাত ধরাধরি করেই তো জীবনের পথে আমাদের এগিয়ে নিয়ে চলে। তাই স্বামী-স্ত্রী মধ্যে ঝগড়া হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু সেটা ঠাকুরের সামনে হওয়াটা একেবারেই উচিত নয়। আর বেড রুমই যেহেতু বাঙালি স্বামী-স্ত্রীদের কাছে মল্ল যোদ্ধের আখড়া, তাই সেখানে ঠাকুরের আসন পাতা বা ছবি রাখা একেবারেই উচিত নয়। কারণ ঝগড়া এমনিতেই নেগেটিভিটি সৃষ্টি করে। তার উপর যদি শোয়ার ঘরে ঠাকুরকে রাখা হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৫. ঠাকুরের ছবি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে: যাদের বাড়িতে ছোট বাচ্চা রয়েছে, তাদের তো বেশি করে ঠাকুরের ছবি শোয়ার ঘরে রাখা উচিত নয়। কারণ বেড রুমই তো বাচ্চাদের খেলার ময়দান। আর এমনটা করতে গিয়ে একটা বল ঠাকুরের ছবিতে বা মূর্তি লেগে গিয়ে সেটির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও তো থাকে, তাই না!
এবার জানার বিষয় হল একান্তই যাদের শোয়র ঘরে ঠাকুরের ছবি বা আসন না রাখলে চলবে না, তারা কী করবেন? এক্ষেত্রে কতগুলি মিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন ধরুন…
১. প্রতিদিন নিয়ম ঠাকুরের ছবি পরিষ্কার করতে হবে: শোয়ার ঘরে ঠাকুরের আসন বা ছবি রাখলে তা প্রতিদিন পরিষ্কার করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা করলে নেগেটিভিটি মাত্রা কমবে। সেই সঙ্গে ঠাকুরের আসনের আশপাশ কিছুটা হলেও পবিত্র থাকবে।
২. প্রতিদিন পুজো করতে হবে: শোয়ার ঘরে রাখা ঠাকুরের ছবির সামনে প্রতিদিন সকালে স্নান সেরে ধুপ-ধুনো জ্বালাতে হবে। সেই সঙ্গে কুমকুম বা চন্দনের লেপ ঠাকুর মাথায় লাগাতে হবে। এমনটা করলে শুভ শক্তির আশীর্বাদ সব সময় পরিবারের প্রতিটি সদস্যের উপর থাকবে।
৩. ঠাকুরের দিকে পা করে শোবেন না: শোয়ার ঘরে ঠাকুরের ছবি বা আসন পাততে হলে একটি বিষয় খেয়াল করা একান্তই প্রয়োজন। কী সেই বিষয়? শোয়ার সময় ভুলেও পা ঠাকুরের দিকে করবেন না বা খেয়াল রাখবেন আপনার পা ঠাকুরের ছবি বা মূর্তির গায়ে যেন না লাগে।
৪. ঠাকুরের ছবি ছোঁয়ার আগে ভাল করে হাত ধুয়ে নেবেন: এমনটা করতে কেন বলা হয় জানেন? কারণ দেব-দেবীরা হলেন পবিত্রতার প্রতীক। তাই তো তাঁদের ছোঁয়ার আগে নিজেকেও কিছুটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নেওয়া উচিত! না হলে বাড়ির অন্দরে শুভ শক্তির প্রভাব কমতে শুরু করে। আর এমনটা আপনার সঙ্গেও ঘটুক, তা নিশ্চয় চাইবেন না!
৫. ঠাকুরের সামনে আগুন আনবেন না: ধূপ-ধুনো দিয়ে পুজো করতেই পারেন। কিন্তু সাবধান! কারণ ঠাকুরের ছবিতে আগুন লেগে যাওয়া একাবেরই পবিত্র ঘটনা নয় বলে বিশ্বাস করা হয় হিন্দু শাস্ত্রে। তাই এই বিষয়টি খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন।
৬. শোয়ার ঘরকে একেবারে অন্ধকার করে রাখবেন না: একান্তই যদি বেড রুমে ঠাকুরের আসন পাততে হয়, তাহলে ভুলেও কোনও সময় শেয়ার ঘর অন্ধকার করবেন না। ছোট একটা ডিম লাইন সব সময় জ্বালিয়ে রাখবেন। কারণ ঠাকুরের ছবি বা মূর্তি অন্ধকারে রাখা উচিত নয়।