সামান্য জেদেই বস্তি ছেলে থেকে ২৫ লাখ কোটির মালিক হন তিনি !
কলকাতা টাইমস :
সাড়ে বারো টাকা বেতন থেকে শুরু করে এন্ড্রু কার্নেগি এক সময়ের অন্যতম মার্কিন ধনী ব্যক্তি। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৮৩৫ সালে। তিনি স্কট ল্যান্ডের সামান্য দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন। জীবনের ১৩টি বছর কাটে তার পরিবারের সাথে। পরবর্তীতে অবশ্য পরিবারসহ জীবন জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমান আমেরিকায়।
সেখানে তাদের ঠিকানা হয় একটি বস্তি। মানুষ চাইলে নাকি এমন কোনো কিছু নেই যেটা না পারে। তার জীবনের বাস্তবতায় দাড়িয়ে ধনী হওয়ার স্বপ্নটা আকাশ কুসুম পরিকল্পনার মত। কিন্তু চাওয়ার কমতি ছিল না কার্নেগির। তিনি যেটা চাইতেন তা আর কিছু নয়, তার ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন তিনি প্রচুর অর্থের মালিক হবেন।
আর এইসব ঘটনা অনেকেই জেনে থাকবেন হয়ত। আর যদি নাই জানেন তাহলে জানার জন্য আবার একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখা যাক। যেটা ইতিহাসে আজও অমর হয়ে আছে। কার্নেগির বয়স যখন ১৩ বছর তখন তার পোশাক-আশাক একেবারেই ভালো ছিল না।একে তো নোংড়া তারপর পর আবার ছেড়া-ফুটো। এমন বেশে একদিন পাবলিক পার্কে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলেন।
কিন্তু পার্কটি ধনীদের উন্মুক্ত, আর গরীবদের জন্য নয়। তাই পার্কের দারোয়ান তাকে পার্কে যেতে দিলেন না। কার্নেগি অনেক অনুনয় করার পরও তাকে পার্কের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। শেষশেষ ছোট কার্নেগি দারোয়ানকে বলে যে, পার্কে সে ঢুকবে এবং কিনেই পার্কের ভিতরে ঢুকবে। সেই থেকে তার মনে জেদ।
সেই পার্ক কিনতে তার যে প্রচুর পরিমানে টাকা প্রয়োজন আর সেজন্য সুতার কলে মাসে সাড়ে বার টাকা বেতনে তাঁতের মজুর হিসেবে যোগ দেন তিনি। এটাই ছিলো তার জীবনের প্রথম রোজগার। এর বেশ কিছুদিন তা প্রায় ১ বছর পর রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে অফিসের দরজায় – ‘কম বয়েসী পিয়ন চাই লেখা দেখতে’ পান ।
কাজটা পেতে সেখানে গেলে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কেউ কোনো কাজ দিতে চায় না কার্নেগিকে। কিন্তু তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বড় কোনো কাজ না মিললেও ছোট কিছু দিয়েই শুরু করতে হবে তাকে। শুধু তাই নয় তিনি অনেকবার চাকরি লাভের আশায় কার্নেগি অফিসের ভিতরে যান। কিন্তু পোশাক-আশাক ভালো না হওয়ায় তাকে বের করে দেওয়া হয়।
কার্নেগি দরজার বাইরে দাঁড়িয়েই থাকতেন। তার মনে মনে ভাবনা জাগতো বড়কর্তা এসবের কিছুই জানতেন না হয়তো। এক সময় তাকে ডাকবেন বড় কর্তা। এই আশায় তিনি বারংবার সেই অফিসে গিয়েছেন।
তৃতীয় দিন কেরানি তাকে তাড়িয়ে না দিয়ে বড় কর্তার কাছে ঘটনাটি খুলে বলেন। বড় সাহেব সব শুনে বলেন ছোকড়াটাকে পাঠিয়ে দাও দেখি সে কি চায়। ঐদিন থেকে সে চাকরিটা পেয়ে যায়। সেদিনের সেই ছোট ছোকড়াটি টেলি-বিভাগের বড় সাহেবও হয়েছিলেন।
কিন্তু কিভাবে? সেই পিয়নের কাজ করতে করতে টেলিগ্রাফের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন কার্নেগি।
তারপর পিয়নের চাকরি ছেড়ে যোগ দেন স্থানীয় রেলস্টেশনের টেলিগ্রাফ অপারেটর হিসেবে। এভাবে ধীরে ধীরে টেলি-বিভাগের বড় সাহেবের পদটিও অর্জন করেন কার্নেগি।
আর এভাবেই সে আস্তে আস্তে হয়ে ওঠেন বস্তির ছেলে থেকে শীর্ষ ধনী। ২৪ লাখ ৪১ হাজার ২২০ কোটি টাকার মালিক ছিলেন এন্ড্রু কার্নেগি।