দিল্লির ধাবামালিক আবদুল রহমান থেকে বলিউডের বাদশা তিনি!
কলকাতা টাইমস :
বলিউডের তারকাদের ঝাঁ-চকচকে জীবনের পিছনে লুকিয়ে এক অন্য জীবনের কাহিনি। এই নায়কের গল্পটাও সেরকম। আজ এই নায়ক বলিউডের কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছেন।
নবজাতক শিশুটি বাড়িতে আসতেই তার নাম আবদুল রহমান রেখেছিলেন দাদু। কিন্তু, নামটা পছন্দ হয়নি শিশুটির বাবার। কয়েক দিন কাটতে না কাটতেই নাম বদলে দিয়েছিলেন তিনি। শ্বশুরমশায়ের দেওয়া নাম বদলে নিজেই শিশুপুত্রের নাম দিয়েছিলেন শাহরুখ। এখন যাঁকে গোটা ভারত চেনে শাহরুখ খান নামে। বলিউডের বেতাজ বাদশা খন তিনি। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
এহেন শাহরুখকে নিয়ে রয়েছে নানা গল্প। যা শুনলে অবাক হতে হয়।। যেমন দিল্লির ছেলে শাহরুখ তখনই বলিউডে পা বাড়াননি। কলেজে পড়েন। সঙ্গে গ্রুপ থিয়েটার আর অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। কিন্তু, বাবা মারা যাওয়ায় শাহরুখের কাঁধেই ছিল সংসারের ভার। তাই পড়াশোনার ফাঁকে দিল্লির দরিয়াগঞ্জে একটি ধাবাও খুলেছিলেন তিনি।
শাহরুখ তখন কলেজে পড়েন। ৮০ দশকে দিল্লিতে কনসার্ট করতে এসেছিলেন গজল গায়ক পঙ্কজ উদাস। সেখানে অফিস বয় হিসাবে কাজ করে শাহরুখ ৫০ টাকা আয় করেছিলেন। আর সেই টাকায় তিনি আগ্রাতে তাজমহল দেখতে গিয়েছিলেন। শাহরুখ পরবর্তীকালে জানিয়েছিলেন, ওটাই ছিল জীবনের প্রথম উপার্জন।
এখন বলিউডে ছবি করার জন্য শাহরুখ খান কয়েক কোটি টাকার নিচে কথা বলেন না। অথচ, ‘কভি হ্যাঁ কভি না’ ছবিটিতে মাত্র ২৫ হাজার টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন শাহরুখ। ছবির পরিচালক কুন্দন শাহও নিজে পরবর্তীকালে শাহরুখের ফিল্মি কেরিয়ারের লড়াইয়ের কথা বলতে গিয়ে এই খবরের সত্যতা শুধু স্বীকারই করেননি, সেইসঙ্গে জানিয়েছিলেন ছবিটি করার জন্য তাঁরা ৫ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন শাহরুখকে।
কুন্দন শাহ আরও জানিয়েছেন যে, ‘কভি হ্যাঁ কভি না’ ছবিটি ১৯৯২ সালেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, ডিস্ট্রিবিউটার না পাওয়া যাওয়ায় ছবিটি রিলিজ করানো যাচ্ছিলেন না। শাহরুখ নিজেই এক ডিস্ট্রিবিউটারকে ধরে এনেছিলেন। এমনকী, ছবিটি মুক্তির দিনে সিনেমা হলের কাউন্টারে বসে টিকিটও বিক্রি করেছিলেন শাহরুখ।
‘সার্কাস’ সিরিয়াল করে শাহরুখ খান তখন বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। চেষ্টা করছেন বলিউডে সিনেমা করার। আচমকাই তিনি বেশ কয়েকটি অল্প বাজেটের ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। দেরি করেননি শাহরুখ, একদিনে ৫টি ছবিতে সই করে দিয়েছিলেন। এরমধ্যে ছিল ‘রাজু বন গয়া জেন্টলম্যান’, ‘দিল আসয়ানা হ্যায়’, ‘কভি হাঁ কভি না’, ‘করন অর্জুন’ ‘ডর’ এবং ‘বাজিগর’।
রোজ রাতে শুতে যাওয়ার সময় ইস্ত্রি করা পাজামা পরেন শাহরুখ। তাঁর দাবি, স্বপ্নে যদি কারোর সঙ্গে দেখা হয় তার জন্য তিনি এমন করেন। ছোটবেলায় শাহরুখ বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। কারণ, তাঁর দাদু সেখানে একটি সংস্থায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। পরে দিল্লি এলেও শাহরুখের হিন্দি তেমন সুবিধের ছিল না। তাই তাঁর মা একবার শর্ত দেন শাহরুখ হিন্দিতে ক্লাসে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেলে তিনি তাঁকে হিন্দি সিনেমা দেখাবেন। শাহরুখ তাই মায়ের কথা রেখেছিলেন এবং ছেলেকে সঙ্গে করে হিন্দি সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন শাহরুখের মা।