ইডলি দিয়ে ব্রেকফাস্টে সারেন, কি হবে জানেন ?
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
দক্ষিণের সঙ্গে উত্তরের যোগ যত নিবিড় হয়েছে, তত ইডলি-ধোসার চাহিদা বেড়েছে দিল্লি থেকে কলকাতা সর্বত্র। তবে সেই সঙ্গে কিছু প্রশ্ন উঠতেও শুরু করেছে। যেমন সকাল সকাল খালি পেটে ইডলির মতো খাবার খাওয়া কি আদৌ উচিত? চলুন জানার চেষ্টা করা যাক এ বিষয়ে চিকিৎসকেদের মতামত কী। একটি সর্ভে রিপোর্ট অনুসারে গত কয়েক দশকে কলকাতার পাশাপাশি সারা রাজ্যেই ব্রেকফাস্টে সাউথ ইন্ডিয়ান কোন পদ, বিশেষত ইডলি খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে চোখে পরার মতো।
কারণ অনেকেরই এই ধরণা রয়েছে কম তেল দিয়ে বানানো এই পাখোয়ানটি নাকি শরীরের পক্ষে বেশ উপকারি। কিন্তু এই ধারণা কি ঠিক? সত্যিই কি ইডলি খেলে শরীরের উপকার হয়? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একদল চিকিৎসক ইডলির বিষয়ে খোঁজ খবর করা শুরু করেন। আর তা করতে গিয়ে যা তথ্য উঠে আসে, তা বাস্তবিকই চমকপ্রদ।
চিকিৎসকেদের মতে ব্রেকফাস্ট যেহেতু দিনের প্রথম খাবার। তাই এই সময় এমন কিছু খাওয়া উচিত, যা সহজে হজম হয়ে যেতে পারে এবং শরীরের উপকারে লাগতে পারে। তাই তো ব্রেকফাস্টে কম তেল-মশলা দেওয়া খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি এই সময় অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় খেতেও মানা করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে তো তাই ইডলির চাহিদা বাড়াটা কোনও আশ্চর্য ঘটনা নয়। কারণ এই পদটি বানাতে তেলের প্রয়োজন পরে না। উপরন্তু ভাপে বানানো হয়ে থা বলে ব্রেকফাস্টে ইডলি খেলে শরীরের কোনও অপকার তো হয়ই না, উল্টে অনেক উপকার পাওয়া যায়। যেমন…
১. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে ব্রেকফাস্টে এমন খাবার খাওয়া উচিত, যা সহজে হজম হয়ে যেতে পারে। আর এক্ষেত্রে ইডলির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ যে যে উপাদান ব্যবহার করে ইডলি বানানো হয়ে থাকে, তা হজম হতে সময় লাগে না। ফলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বল হওয়ার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে শরীরও একেবারে চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
২. প্রোটিনের ঘাটতি দূর হয়: খেয়াল করে দেখবেন সব জায়গাতেই ইডলির সঙ্গে সাম্বার পরিবেশন করা হয়ে থাকে। আর সাম্বার বানানো হয় ডাল দিয়ে। আর একথা কারও নিশ্চয় অজানা নেই যে প্রায় সব ডালেই প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। ফলে ইডলি খেলে যে শুধু হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, তা নয়। সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরে প্রোটিনের চাহিদা মেটার কারণে সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
৩. পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়: ইডলি বানাতে গেলে যে মিশ্রনটির প্রয়োজন পরে, সেটি বিশেষ এক ধরনের ইডলি রাইস এবং উর্দা ডালের মিশ্রনে বানানো হয়ে থাকে। এই চাল এবং ডালটিতে প্রোটিনের পাশাপাশি শরীরের প্রয়োজনীয় একাধিক ভিটামিন এবং খনিজ মজুত থাকে। তাই তো ব্রেকফাস্টে ইডলি খাওয়ার অভ্যাস করলে দিনের শুরুতেই দেহের অন্দরে পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি দূর হয়। ফলে একদিকে যেমন দেহের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৪. অ্যামাইনো অ্যাসিডের ঘাটতি দূর করে: শরীরকে রোগ মুক্ত এবং সচল রাখতে এই উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, ক্লান্তি দূর করতে এবং পেশির গঠনেও অ্যামাইনো অ্যাসিডের ভূমিকাকে অস্বীকার করা সম্ভব নয়। সেই কারণেই তো শরীরে যাতে এই উপাদানটির ঘাটতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, ইডলির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। সেই কারণেই তো এই ধরনের খাবার খেলে শরীরের কোনও খারাপ তো হয়ই না, বরং নানা উপকার পাওয়া যায়।
৫. ওজম কমাতে সাহায্য করে: চাল দিয়ে বানানো হয় বলে একটা বা দুটো ইডলি খাওয়ার পর পেটটা এতটাই ভরে যায় যে অনেকক্ষণ পর্যন্ত ক্ষিদে পাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া পরিমাণ কমতে থাকে। আর খাবার কম খেলে যে ওজন বাড়ার আশঙ্কাও কমে, তা কি আর আলাদা করে বলে দিতে হবে! প্রসঙ্গত, ইডলিতে ক্যালরির পরিমাণও খুব কম থাকে। তাই তো এই খাবারটি খেলে ওজন বাড়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।
৬. কনস্টিপেশনের মতো সমস্যা কমায়: ইডলিতে উপস্থিত ফাইবার শরীরের অন্দরে প্রবেশ করার পর হজম ক্ষমতার যেমন উন্নতি ঘটায়, তেমনি ঠিক মতো যাতে শরীর থেকে বর্জ পদার্থ বেরিয়ে যেতে পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোষ্টকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমতেও সময় লাগে না।
৭. ভিটামিন বি-এর ঘাটতি দূর হয়: ব্রেন পাওয়ার বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরে ব্লাড সেলের উৎপাদন ঠিক রাখতে এই বিশেষ ধরনের ভিটামিনটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। সেই কারণেই তো সপ্তাহে ২-৩ দিন ইডলি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কারণ ইডলি বানাতে যে উপাদানগুলি ব্যবহার করা হয়, তাতে ভিটামিন বি প্রচুর পরিমাণে থাকে। ফলে এই খাবারটি খেলে শরীরের অন্দরে কখনও এই ভিটামিনটির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।